‘বৃষ্টি হলেই স্কুল ছুটি’
বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি করা ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতকরণ’ শীর্ষক তালিকা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ৭ই এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নুরুন্নবীর সই করা এক চিঠিতে সারা দেশের সঙ্গে বিয়ানীবাজারেরও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার নেরাউদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খলাগাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঞ্জিপুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিছমত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পল্লীশাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরেঙ্গাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মালিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাতন-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিদ্যালয়ে আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টিটু চন্দ দাস বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এসব ভবনে পাঠদান করানো সম্ভব। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ায় পাঠদান করতে শিক্ষকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় তালিকা চেয়েছে। আমরা পাঠিয়েছি। এখন তালিকা অনুযায়ী তারা সংস্কার বা ভেঙে নতুন ভবন তৈরির উদ্যোগ নিতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন টিনশেডের তৈরি। স্বাভাবিকভাবে এতে পাঠদান চললেও ঝুঁকি রয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এগুলো নিয়ে দুর্ঘটনার শঙ্কা না থাকলেও বিপদ আসতে সময় লাগে না বলে জানান ফারুক আহমদ নামের এক অভিভাবক। নেরাউদি গ্রামের অপর অভিভাবক শাহজাহান আহমদ অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক নেতাদের এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে একাধিক ভবন থাকার পরও নতুন করে ভবন নির্মাণ হয়। অথচ আমাদের মত অবহেলিত গ্রামের বিদ্যালয়গুলো বৃষ্টি হলে ছুটি দিতে হয়। মালিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, মেঘে ডাক দিলে আরনায় তুড়া আসমান কালা অইলে ছার হখলে বেহুঁশ অইয়া ছুটি দিলাইন। বাড়ি থাকি আব্বা-আম্মাও স্কুলো ছাতি লইয়া আইন। বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আরিফুর রহমান জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। আমরাও মাঠ প্রশাসন থেকে সরকারকে সহায়তা করি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বিষয়ে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে।