ভারত শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত দেবে না

যুগান্তর মোবায়েদুর রহমান প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৬

গত ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আদালত (আইসিটি)। রায়ের পর দেখা গেল, প্রায় সর্বশ্রেণির মানুষ ওইটুকুতে সন্তুষ্ট নন।


বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ তো বলেই ফেললেন, যে রায় হয়েছে তার চেয়েও বড় শাস্তি হওয়া উচিত ছিল শেখ হাসিনার। তবে মৃত্যুদণ্ডের চেয়ে বড় আর কোনো শাস্তি তো নাই। তাই ওইটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। আইসিটির চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদালতে আর্গুমেন্ট করার সময় বলেন, শেখ হাসিনা এত অপরাধ করেছেন যে, তাকে অসংখ্যবার দণ্ড দিতে হবে। তিনি ১৪শ মানুষ খুন করেছেন। এজন্য তাকে ১৪শ বার ফাঁসি দেওয়া দরকার। কিন্তু ফাঁসি তো একবারই হয়।


আমি ১৭ তারিখ সকাল থেকেই টেলিভিশনের সামনে বসে ছিলাম। ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের জাজমেন্ট পুরোটাই মনোযোগ দিয়ে শুনি। আদালত কক্ষে ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। ছিল পিনপতন স্তব্ধতা। মাননীয় বিচারক গোলাম মর্তূজা মজুমদার ঘোষণা করেন, ১ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, এজন্য ট্রাইব্যুনাল তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করল। এ ঘোষণার পর দেখা গেল, জনাকীর্ণ আদালতে সবাই মুখ গোমরাহ করে বসে আছেন। সোজা কথা, আমৃত্যু কারাদণ্ড কাউকেও খুশি করতে পারেনি। কিন্তু যখন তিনি ঘোষণা করেন যে, ২ এবং ৩ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।


এজন্য ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করছে, মাননীয় বিচারকের এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আদালতে উপস্থিত বিপুলসংখ্যক আইনজীবী, সাংবাদিক ও অন্যদের বিপুল করতালিতে মুখরিত হলো আদালত কক্ষ। তখন বিচারক গোলাম মর্তূজা এমন একটি নির্দেশ দেন, যা বিচার বিভাগের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, আপনারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে চাইলে আদালতের বাইরে গিয়ে করুন। প্লিজ, আদালতের মধ্যে নয়। দয়া করে আদালতে আদালতের পরিবেশ রক্ষা করুন। কী আশ্চর্য, আদালতে উপস্থিত সব মানুষ সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ নীরবতা পালন করে বিচারকের নির্দেশকে মান্য করেন।


মানুষ যে অতটুকু, অর্থাৎ শুধু মৃত্যুদণ্ড ঘোষণায় সন্তুষ্ট নন, তারা যে আরও বেশি কিছু চান, সেটি বোঝা গেল আদালতের বাইরে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকরা বাইরে অপেক্ষমান বিরাট জনতার প্রতিক্রিয়া ধারণের জন্য তাদের সামনে মাইক্রোফোন নিয়ে যান। বলতে গেলে প্রায় সবাই একবাক্যে বলেন, মৃত্যুদণ্ডের রায়ে আমরা খুশি। কিন্তু আমরা সেদিনই সম্পূর্ণ খুশি হব, যেদিন শেখ হাসিনাকে ইন্ডিয়া থেকে এনে রায় কার্যকর করা হবে। ওই যে আদালতের বাইরে এ আওয়াজ উঠল, অতঃপর সন্ধ্যার মধ্যেই সেই আওয়াজ ছড়িয়ে গেল সারা বাংলাদেশে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা, বরিশাল ইত্যাদি স্থান থেকে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের প্রতিনিধিরা খবর পাঠাতে লাগলেন, জনগণ চায় অতি দ্রুত রায়টি কার্যকর করা হোক।


ওইদিকে পান্থপথ ছাড়িয়ে ৩২ নম্বরের মুখে, মুখে নয়, বরং বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারের কাছে নির্মিত ফুটওভারব্রিজ পর্যন্ত জনতা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ইট-পাটকেল ছুঁড়ছেন। নিরাপত্তা বাহিনীও কখনো টিয়ার গ্যাস, আবার কখনো সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করছেন। এখানে কীসের গোলমাল? গোলমালটি হলো, জনতা ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের ভাঙা বাড়িতে হামলা করতে চান। এর আগে ওই বাড়িটি ক্রুদ্ধ জনতা ভেঙেছেন। তারপরও কিছু ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।


মানুষ ওইগুলোও ভাঙতে চান। তারা ৩২ নম্বরের বাড়িটিকে ধুলায় মিশিয়ে দিতে চান। শেখ মুজিব এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার কোনো চিহ্ন বাংলাদেশে তারা রাখতে চান না। রায়ের দিন বোঝা গেল, নির্বাচন বা সংস্কার নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতদ্বৈধতা থাকলেও শেখ মুজিব এবং শেখ হাসিনার ব্যাপারে সবাই এক পয়েন্টে। অর্থাৎ এ দুই ব্যক্তি সম্পর্কে বাংলাদেশের কোনো আপস নাই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও