ইসলামে স্বাস্থ্যসচেতনতার গুরুত্ব

প্রথম আলো শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:১৩

মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা—এসব পূরণে ইসলামের ভূমিকা অত্যন্ত সুস্পষ্ট। শরীর ও মন সুস্থ থাকার নামই স্বাস্থ্য। পবিত্র কোরআনে সৃষ্টিতত্ত্ব ও চিকিৎসাবিদ্যা–সম্পর্কিত আয়াত আছে প্রায় ৩৬০টি এবং শুধু চিকিৎসাবিষয়ক আয়াতের সংখ্যাই প্রায় ২৪১।


মানুষ সুস্থ অবস্থায় স্বাস্থ্য সম্পর্কে তেমন সচেতন হয় না। অসুস্থ হলে দিশাহারা হয়ে যায়। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘দুটি নিয়ামতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে, তা হলো সুস্থতা ও অবসর।’ (বুখারি, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মিশকাত); তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্তুকে গনিমত মনে করবে। বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে, পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে, দারিদ্র্যের পূর্বে সচ্ছলতাকে, ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে ও মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে।’ (বুখারি: ১০৭৭)


পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অসুস্থ হলে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া ও যথাযথভাবে ওষুধ সেবন করা নবীজি (সা.)–এর সুন্নত আমল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় ভোর করল যে সে শরীর সুস্থ ও নিরাপদ এবং তার নিকট সারা দিনের খাবার সঞ্চিত রয়েছে, তাহলে তার জন্য গোটা দুনিয়া জোগাড় করে দেওয়া হয়েছে।’ (তিরমিজি: ২৩৪৬, ইবনে মাজাহ: ৪১৪১, মিশকাত: ৫১৯১, সহিহ আলবানি: ২৩১৮)


স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ।’ (মুসলিম : ২২৩); অপরিচ্ছন্নতা ও নোংরা পরিবেশ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এর কারণে শরীরে নানা রোগজীবাণুর অনুপ্রবেশ ঘটে। তাই অজু ও গোসলের পবিত্রতা অর্জনের পাশাপাশি শরীরের অবাঞ্ছিত কয়েকটি বিষয়ের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে। (বুখারি: ৫৮৮৯)


সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য কামনা করা আমাদের কর্তব্য। ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘রোগাক্রান্ত হলে আল্লাহ আমাকে রোগমুক্ত করেন।’ (সুরা-২৬ শুআরা, আয়াত: ৮০); আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, জান ও মালের ক্ষতি এবং ফল-ফসলাদির বিনষ্টের মাধ্যমে। আর সুসংবাদ ধৈর্যশীলদের জন্য।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫৬); রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাও ও সুস্বাস্থ্য প্রার্থনা করো। কেননা ইমানি দৌলতের পর কাউকে স্বাস্থ্যের চেয়ে উত্তম আর কোনো দৌলত দেওয়া হয়নি।’ (তিরমিজি: ৩৫৫৮; মিশকাত: ২৪৮৯)


সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরচর্চা হাঁটাহাঁটিও ইবাদত। নবীজি (সা.) সাহাবিদের সঙ্গে কুস্তি লড়েছেন। মাঝেমধ্যে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছেন। তিনি সব সময় স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে দ্রুত লয়ে হাঁটতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেছেন, ‘আমি নবীজি (সা.)–এর চেয়ে দ্রুতগতিতে কাউকে হাঁটতে দেখিনি।’ (তিরমিজি: ৩৬৪৮)


সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের বিকল্প নেই। নবীজি (সা.) পরিমিত খাবারে অভ্যস্ত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পেটের তিন
ভাগের এক ভাগ খাবারের জন্য। এক ভাগ পানির জন্য। এক ভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখো।’ (তিরমিজি: ২৩৮০)


অসুস্থ হলে যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা সুন্নত। নবী করিম (সা.) সাহাবিদের দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছেন এবং তিনি নিজে অসুস্থতার সময় চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার নিরাময়ের উপকরণ তিনি সৃষ্টি করেননি।’ (বুখারি: ৫৬৭৮)

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও