জনগণের ক্ষমতায়নেই দুঃশাসনের নাশ
‘গণতন্ত্রের বিশ্বায়ন’ বিষয়টার আলোচনা ও সমালোচনা, বলতে গেলে এখন প্রতিদিন হয়। এই আলোচনার গভীরে গেলে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, আসলে গণতন্ত্রের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত; প্রকৃতপক্ষে কোথায় কতটা কে বা কারা সত্যিকার অর্থে জনগণকে ক্ষমতায়ন করেছে বা জনগণ হয়েছে! সেটা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণেও দেখা যায় জনগণের ‘ক্ষমতায়ন’ সেই অর্থে হয়নি কোনো যুগে, কালে, দেশে বা সমাজে। এর জন্য চেষ্টা হয়েছে, যুদ্ধ ও সংগ্রাম হয়েছে যা এখনো হয় ও আগামীতেও হবে। কিন্তু দিন শেষে ফলাফল এখন পর্যন্ত যা দেখা যায়, ‘ক্ষমতা’ সমাজের একটা নির্দিষ্ট শ্রেণি-গোষ্ঠীর কাছেই থাকে এবং তাদেরই হাতে। সেই ক্ষমতা তারা জনগণের ওপর ‘অপব্যবহার’ করে, নিজেদের একক শ্রেণিস্বার্থে। তবে এই কথা নিয়ে গঠনমূলক বিতর্ক থাকতে পারে। এমন অসম ব্যবস্থার পরিসমাপ্তি বর্তমান আধুনিক যুগে হয়েছে, বলা কঠিন। ক্ষমতা আছে ক্ষমতাসীনদের কাছে, জনগণের কাছে নয়।
আসলে ক্ষমতাসীন কারা? এরা সমাজের অল্পসংখ্যক শ্রেণি বা গোষ্ঠী, যারা এক কথায় অপরচুনিস্ট ও ভাগ্যবান। ক্ষমতা বলতে যা বোঝায়, দায়িত্ব তা না। ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব এই তিনটি ভিন্ন জিনিস। দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন ছাড়া, যারা সমাজে সুবিধাপ্রাপ্ত হন তারা সমাজের একটি সুবিধাভোগী এলিট অংশ। উৎপাদনের উপকরণে তিনটি প্রধান বিষয় দরকার। জমি, অর্থ, শ্রম এবং উৎপাদনের যান্ত্রিক উপকরণ। এগুলোর মালিক কিন্তু জনগণ নয়। বলা যায়, জনগণের একটা বিশেষ অংশ। একইভাবে ক্ষমতার তিনটি অংশের প্রধান একটা অংশ জনগণ হলেও ক্ষমতার আরেক অংশ অর্থ ও সামাজিক প্রভাব। দুর্ভাগ্যক্রমে এটি জনগণের হাতে নয়। এই প্রভাব থাকে, জনগণের বিশেষ একটা অংশ বা শ্রেণির হাতে। তারাই সুবিধাভোগী ভোক্তা শ্রেণি। অন্য কথায়, এরাই প্রচলিত অর্থে ‘এলিট’।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ক্ষমতাসীন
- ক্ষমতাসীন সরকার