You have reached your daily news limit

Please log in to continue


সামগ্রিক উন্নয়নে এগিয়ে যাক নারী, এটাই প্রত্যাশা

‘বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’- কবির এই পঙক্তির মর্মকথা মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে নারী-পুরুষের সমান ও অবিচ্ছেদ্য ভূমিকার কথাই মূলত বলা হয়েছে। বাস্তবেও বাংলাদেশের অগ্রগতি বলি বা অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলি, এসবের পেছনে বড় শক্তিগুলোর একটি হলো নারীসমাজ এবং তাদের শ্রম। একসময় ঘরের চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ থাকা নারীরা সময়ের হাত ধরে আজ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। গার্মেন্টস শিল্প থেকে শুরু করে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংক-বীমা, তথ্যপ্রযুক্তি- সব ক্ষেত্রেই নারীদের অংশগ্রহণ সমভাবে দৃশ্যমান। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, আমাদের জাতীয় আয়ে নারীর শ্রমের অবদান যথাযথভাবে আজও মূল্যায়িত হয় না। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র- তিন স্তরেই নারী শ্রম এখনও বৈষম্যের শিকার। বলা যায়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্রে নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও- সেটি অনেক সময় স্বীকৃত নয় এবং প্রাপ্য মর্যাদা থেকেও বঞ্চিত।

শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অবদান সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান। নারী শিক্ষার হার বেড়ে যাওয়ায় শুধু ব্যক্তিগত উন্নয়নই নয়, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম শিক্ষিত হচ্ছে। একজন শিক্ষিত মা পরিবারকে সচেতন করে, সন্তানদের আলোকিত করে, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছেন। ফলে নারীশিক্ষা আজ মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে নারীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। কৃষি, পশুপালন, মৎস্যচাষ, কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রমেও নারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে নারীর অংশগ্রহণ দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এতে আর্থিক স্বাধীনতা যেমন বেড়েছে, একই সঙ্গে পরিবার ও সমাজে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক উন্নয়নেও নারীর ভূমিকা অনন্য। স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা, শিশু লালন-পালনে নারীর সচেতনতা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করছে। রাজনীতি ও নেতৃত্বে নারী শক্তি বাংলাদেশকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় নারী নেতৃত্ব দেশের রাজনীতিকে নতুনমাত্রা দিয়েছে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ফলে তৃণমূল পর্যায়ে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারী উদ্যোক্তারা ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং এবং ডিজিটাল ব্যবসায় কর্মসংস্থান তৈরি করছে।

সাফল্যের ঝুঁড়িতে এত অবদানের পরও সবচেয়ে বড় অবহেলার জায়গা হলো ঘরে নারীদের শ্রমের অবদানগুলো। রান্না, সন্তান লালনপালন, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সেবা, গৃহস্থালির নানা কাজ- এসবই দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অপরিহার্য অংশ। যদি এ কাজগুলো বাজারমূল্যে হিসাব করা হতো, তাহলে জাতীয় আয়ের পরিসংখ্যানে নারীর অবদান আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেত। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-র হিসাব অনুযায়ী, গৃহস্থালির কাজকে অর্থনৈতিক অবদান হিসেবে গণনা করলে অনেক দেশের জিডিপি কয়েক শতাংশ বেড়ে যায়। অথচ বাংলাদেশে এখনও এসব শ্রমকে অদৃশ্য বলা হয়, কারণ এর বিনিময়ে নারীরা কোনো অর্থ পান না। বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হলো তৈরি পোশাক শিল্প, যেখানে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করে, এর মধ্যে ৬০-৬৫ শতাংশই নারী। এ খাত থেকে বছরে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে, তার বড় অংশই নারী শ্রমের অবদান। কিন্তু একইসাথে প্রশ্ন ওঠে- এই শ্রমিকরা কি ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সামাজিক সুরক্ষা পাচ্ছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, অধিকাংশ নারী শ্রমিক এখনও বেতন বৈষম্য, হয়রানি ও স্বাস্থ্যঝুঁকির শিকার। কৃষি খাতেও নারীর অবদান অনস্বীকার্য। বীজ বপন, চারা রোপণ, শস্য কাটাসহ নানা কাজে নারীরা পরিশ্রম করে, অথচ কৃষি শ্রমিক হিসেবে তাদের নাম সরকারি পরিসংখ্যানে উঠে আসে না। গ্রামের নারী কৃষকরা পরিবার ও সমাজের কাছে ‘সহযোগী’ হিসেবে পরিচিত থাকেন, প্রকৃত কৃষক হিসেবে নয়। ফলে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাদের দাবি-দাওয়া গুরুত্ব পায় না।

এত বঞ্চনা আর অপ্রাপ্তির পরও দেশের অর্থনীতিতে নারী উদ্যোক্তাদের অবদান স্বীকৃত বিষয়। শুধু পরিবারের আয় বাড়াচ্ছেন না বরং সামষ্টিক অর্থনীতির এক অপরিহার্য চালিকাশক্তি হয়ে উঠছেন। বিশ্বব্যাপী নারী উদ্যোক্তার আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে এখন জাতীয় প্রবৃদ্ধির কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে এই অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে এই উদ্যোক্তারা। তথ্য বলছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের ব্যাংকিংয়ে অংশগ্রহণ অভাবনীয়ভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ডিপোজিটে নারীদের অবদান প্রায় অর্ধেকের ঘরে পৌঁছেছে। এ ছাড়া নারীদের ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট ও ঋণ অ্যাকাউন্ট উভয়ই বছরে ১৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু একই সময়ে ব্যাংকিং খাতের মোট কর্মীসংখ্যার মধ্যে নারীর উপস্থিতি মাত্র ১৬-১৭ শতাংশ। অর্থাৎ নারীরা গ্রাহক হিসেবে সামনে এলেও ব্যাংকের ভেতরে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ভূমিকায় তাদের উপস্থিতি এখনও সীমিত। এটা হতাশার চিত্র। এ কারণে নারী উদ্যোক্তাদের চাহিদাভিত্তিক আর্থিক সেবা ডিজাইন করতে অনেক ব্যাংকই পিছিয়ে আছে। বহু নারী উদ্যোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলেও নিয়মিত লেনদেন হয় না। অনেক সময় তারা ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে জামানতের শর্তে আটকে যান। ডিজিটাল ব্যাংকিং ও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার নিয়ে ভীতি কাজ করে, প্রশিক্ষণের অভাবে। আবার অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা নারী উদ্যোক্তার ব্যবসার সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দিতে চান না। সামাজিক মানসিকতার প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। অনেক পরিবার এখনও মনে করে, ব্যবসা বা আর্থিক বিষয়ে নারীর সংশ্লিষ্টতা দরকার নেই। ফলে ব্যাংকের দরজা খোলা থাকলেও বাস্তবে নারীরা ভেতরে ঢুকতে দ্বিধাগ্রস্ত হন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন