গত কয়েক দিনে তিনজন জামায়াত নেতার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এই একটা রাজনৈতিক দল, যাদের নেতাদের মধ্যে পরিমিতিবোধ অসাধারণ। প্রায়ই তাঁরা জানেন, কোথায় থামতে হয়। হাসতে হলে ঠোঁট দুটো কতটুকু প্রসারিত করতে হবে, দাঁত কটা প্রকাশিত হতে পারবে—সে হিসাবও সম্ভবত দল তাদের শিখিয়ে দেয়। মাঝেমধ্যে তাঁদের এমন আচরণ কৃত্রিম মনে হলেও সব মিলিয়ে বিষয়টা আমি পছন্দই করি। দলের বা রাজনীতির কোনো সাফল্যে দারুণ কিছু হইচই বা উচ্ছ্বাস তাঁরা সাধারণত প্রকাশ করেন না। এই যে ডাকসু নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় ঘটল, অন্য কোনো সংগঠন হলে বিজয় মিছিলের তোড়ে হয়তো পুরো ক্যাম্পাস প্রকম্পিত হতো। কিন্তু তারা সেটা করেনি। এত পরিমিতিবোধের পরও সম্প্রতি দেখা হওয়া জামায়াত নেতাদের চেহারায় কেমন একটা সাফল্যের আভা আমি দেখতে পেয়েছি। কথাবার্তায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও অন্তর্গত আনন্দের কিছুটা ছাপ চোখেমুখে প্রকাশ পাবেই। এবার সেটা লুকিয়ে রাখতে পারেননি।
সন্দেহ নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের কারণেই তাঁদের এই মনোভাব। কেবল ওনাদের মধ্যেই নয়, সাধারণ মানুষের মনোজগতেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে বলে আমার মনে হয়। কদিন আগেও যাঁরা জামায়াতে ইসলামীকে জাতীয় নির্বাচনে ৩০টি আসনও দিতে রাজি ছিলেন না, তাঁদের কেউ কেউ এরই মধ্যে সেই সংখ্যা ৬০টিতে উন্নীত করে ফেলেছেন। দিন কয়েক পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন হবে। যত দূর শুনেছি, সেখানেও একই ধরনের ফল হবে। তখন হয়তো এই প্রবল সমালোচকেরা এই সংখ্যা আরও একটু বাড়িয়ে ৮০ অথবা ১০০-তে নিয়ে যাবেন!