এখনই উদ্যোগ না নিলে এবারও ডেঙ্গু থাবা বসাবে

প্রথম আলো ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৫২

বাংলাদেশে ডেঙ্গু এখন আর কেবল মৌসুমি বা শহুরে রোগ নয়, এর বিস্তার ঘটেছে সারা দেশে এবং প্রায় সব মৌসুমেই। বাংলাদেশের ডেঙ্গু ডাইনামিক ড্যাশবোর্ডের (২০২৫) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৮২ জন। তবে প্রকৃত ভর্তি রোগীর সংখ্যা এর চেয়ে আরও বেশি হতে পারে। কারণ, দেশের সব হাসপাতালকে এখনো ডেটা রিপোর্টিং সিস্টেমের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।


ওই ড্যাশবোর্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরও ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি—১৪ হাজার ৩৬৪ জন, যা মোট আক্রান্ত রোগীর ৩৯ শতাংশ। তবে জনসংখ্যার অনুপাতে বিবেচনা করলে বরিশাল বিভাগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই সংখ্যা ১১ হাজার ১৬০ ও সংখ্যাটি মোট আক্রান্ত রোগীর ৩০ শতাংশেরও বেশি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৬০২ জন, রাজশাহীতে ২ হাজার ৬১৯, খুলনায় ১ হাজার ৮৯০, ময়মনসিংহে ৬৯৮, রংপুরে ২৪৫ ও সিলেটে ১০৪ জন।


মৃত্যুর পরিসংখ্যানে মাসভিত্তিক বিশ্লেষণ দেখায়, বছরের প্রথম পাঁচ মাসে মোট ২৩ জন মারা গেছেন। জুনে ১৯ জন, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরের প্রথম ১১ দিনে ২৩ জন মারা গেছেন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৪৫ জন। এর মধ্যে ৬৯ জন, অর্থাৎ প্রায় অর্ধেকই শিশু, কিশোর ও তরুণ। ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা মাত্র ১৪ জন, যা মোট মৃত্যুর মাত্র ১০ শতাংশেরও কম।


অর্থাৎ ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে শিশু, তরুণ, কর্মক্ষম ও উৎপাদনশীল মানুষের। ডেঙ্গুর কারণে এই বয়সী মানুষের মৃত্যু শুধু পারিবারিক শোক নয়, এটি অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতার ওপর সরাসরি আঘাত।


একজন কর্মক্ষম তরুণের মৃত্যু মানে তাঁর পরিবারের উপার্জনক্ষম হাতটি চিরতরে থেমে যাওয়া। একই সঙ্গে রাষ্ট্র হারাচ্ছে একজন সম্ভাবনাময় নাগরিককে, যিনি আয়, সঞ্চয়, ভোগ ও কর প্রদানের মাধ্যমে অর্থনীতিতে অবদান রাখতেন।


এভাবে ডেঙ্গুর অর্থনৈতিক বোঝা অন্যান্য অনেক রোগের তুলনায় বহুগুণ বেশি। গবেষণা বলছে, শুধু চিকিৎসা খরচ নয়, অকালমৃত্যুজনিত ক্ষতিও দেশের জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।


তাহলে প্রশ্ন আসে, এত মৃত্যুর পরও কেন রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানগুলো নড়েচড়ে বসছে না? স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত মানুষের পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে, কিন্তু এর বাইরে কার্যকর কোনো নীতি-উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝেমধ্যে ফগার মেশিনে কীটনাশক ছিটিয়ে দায় সারছে। অথচ গবেষণা বলছে, এ ধরনের ফগিংয়ে আসলে ডেঙ্গুর মূল বাহক এডিস মশা দমন হয় না।


হাসপাতালগুলোয় শয্যাসংকট, ডাক্তার-নার্সের ওপর অতিরিক্ত চাপ ও পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের অভাব ডেঙ্গুর চিকিৎসাব্যবস্থাকে আরও দুর্বল করে তুলছে। প্রশাসনিকভাবে দায়সারা কাজ হচ্ছে, কিন্তু সুসংগঠিত ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা অনুপস্থিত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও