বেহিসাবি মানুষ এবং তার কড়চা

www.ajkerpatrika.com বাসব রায় প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:১৯

বেহিসাবি মানুষের জীবন কখনোই সুখের দেখা পায় না। সুখ সুখ করে আর তার পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে জীবনটাই শেষ; সুখ বেচারার আর দেখা মেলে না। হিসাবের খাতায় গরমিল থাকলে পুরো জীবনটাই দুর্ভোগের শিকার হয়। জীবনের অঙ্ক নির্ভুল না হলে জীবন হয় অভিশপ্ত। হিসাব ছাড়া মানুষেরা সামাজিক বা পারিবারিক—সবভাবেই নিগৃহীত হয়। জেনেবুঝেই হোক আর হালকাভাবে ভাবার কারণেই হোক, হিসাবের কঠিন ধারণাকে ধারণ করতে না পারলে পুরো জীবনটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। লাঞ্ছনা আর গঞ্জনার পথ পাড়ি দিতে দিতে একসময় তার করুণ মৃত্যু হয় এবং সত্যিকার অর্থে সেই মানুষটার জন্য একটু আহা-উঁহু করার লোক পাওয়া যায় না। কেউ তার জন্য এক ফোঁটা চোখের পানি ফেলতেও ইচ্ছা পোষণ করে না। সত্যিই এমন মানুষও আছে আর এমন বাস্তবতা নিয়ে এখনো মানুষ মিথ্যা স্বপ্ন দেখে।


এই মানুষগুলো নিজেকে টিকিয়ে রাখতে চাতুরীর আশ্রয় নেয়, নানাভাবে প্রতারণাকে পুঁজি করে এখানকার দৌড় সেখানে আর সেখানকার দৌড় এখানে করতে করতেই শেষ হয়ে যায়। ভালো কিছু করতে চায়, মানবিক হতে চায়, সামাজিক প্রেক্ষাপটে নিজেকে যথোপযুক্ত করে তুলতে চায় কিন্তু সবশেষে জারিজুরি ফাঁস হয়ে সবার চোখে ধরা পড়ে; এত দিনের গাম্ভীর্য, ভদ্রতা আর মানবিকতা মুহূর্তেই ম্লান হয়ে যায়। এমন মানুষের দ্বারা অজস্র মানুষ উপকৃত হয় বটে, কিন্তু লোকটির দুর্দিনে ওরা আর কেউ এগিয়ে আসে না; বরং দূরে দাঁড়িয়ে বিষয়টিকে উপভোগ করে। সুযোগ পেলে নানাভাবে উপদেশ বা পরামর্শ দিতে থাকে। বিচিত্র প্রকৃতির মানুষ আমাদের চারপাশে আমরা দেখি। বেশির ভাগ মানুষই ভালো প্রকৃতির কিন্তু সময় ও পরিস্থিতি কখনো কখনো মানুষকে বিরূপভাবে তৈরি করে ফেলে, যার ইতিহাস অজানাই থেকে যায়; আমরা শুধু মানুষটাকে সবভাবেই দোষী সাব্যস্ত করে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিই।

লোকটিকে শাস্তির আওতায় এনে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে পারলেই নিজেদের ধন্য মনে হয়! হ্যাঁ, অবশ্যই লোকটির দ্বারা অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, হয়তো ক্ষতিপূরণ আদায় করাটাও কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ সেসব লোকের পক্ষ নিয়ে কিছু মানুষ শক্তভাবে দাঁড়িয়ে যায়, যেখানে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি একটি আপসরফায় আসে। তবে এ পর্যন্ত আসতে নানা রকমের কাঠখড় পোড়াতে হয়; নানা জনের কাছে যেতে হয়, ধরনা দিতে হয়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায় ক্ষতিগ্রস্তের দল আর তখনই খুনখারাবিসহ বিভিন্ন রকমের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে চলে। ফলে ছোট হোক আর মাঝারি হোক, ঘটনা হয়ে যায় বড় এবং সামলানোটাও সহজ পরিস্থিতিতে থাকে না।

প্রয়োজন এবং অভাব নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তের জীবনে বড় রকমের অভিশাপ। অনিচ্ছাকৃত লোভ-লালসা এসে সামনে দাঁড়ায়, অনটনের জোর চাপ মহৎ মানসিকতার অভাব ঘটিয়ে দেয়। বিমূঢ় পরিস্থিতির জোরালো দাবির কাছে একসময় সততার পুরোপুরি মৃত্যু ঘটে; যদিও এমনটি ভাবার অর্থ নিজের অন্যায়কে সমর্থন দিতে এটা একটা বড় রকমের কারসাজি মাত্র। মানুষ হাজার কষ্টেও নিজেকে সৎ রাখতে পারে যদি অসৎ হওয়ার ইচ্ছা তার না হয়। আর অসৎ মানসিকতার উদ্ভব হলে তাকে আর কোনোমতেই সৎ রাখা কঠিন। মনগুলো লোভী এবং দরিদ্র। যাদের টাকাপয়সা অঢেল আছে কিন্তু প্রকৃত কৃপণ এবং লোভী, টাকা এবং প্রভাবের কারণে তারা সব সময় পার পেয়ে যায় আর ধরা পড়ে নেহাতই চুনোপুঁটিরা। এই চুনোপুঁটিরাই বেহিসাবি হয় এবং মহত্ত্ব দেখানোর জন্য নিজেকে ঋণী করে ফেলে। ফলে বাধ্য হয়েই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে হয়।


মানসিকতা অত্যন্ত সৎ এবং উদার অথচ কর্মকাণ্ড পুরোটাই এর বিপরীত; প্রতারণা, ছলচাতুরী, মিথ্যা বলার প্রচণ্ড বাড়াবাড়ি মানসিকতা প্রভৃতি মানুষটিকে আর সজ্জন রাখে না। বিবেক-বুদ্ধি সব লোপ পায়। জীবনের ভাঙাচোরা থলেটি জোড়া লাগাতে গিয়ে একটির পর একটি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এত দিনের ভালো অর্জনগুলোর অপমৃত্যু ঘটে এবং বিশ্বসংসার থেকে তার ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে যায়। ফলে মানুষটি দেউলিয়া ঘোষিত হয়, পলাতক জীবনকে বেছে নিতে হয় নতুবা পরিষ্কারভাবে আত্মাহুতি দেওয়া ছাড়া পথ থাকে না, যা মোটেই কাম্য নয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও