You have reached your daily news limit

Please log in to continue


নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের লাশ মিলল মুন্সীগঞ্জের মেঘনায়

আমি বিভুরঞ্জন সরকার, ‘আজকের পত্রিকা’র সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করি। সাংবাদিকতার সঙ্গে আমার সম্পর্ক পাঁচ দশকের বেশি সময়ের। দেশের নানা পরিবর্তন, আন্দোলন, গণআন্দোলন এবং রাজনৈতিক উত্থান-পতন প্রত্যক্ষ করেছি। এই দীর্ঘ সময় আমি লিখেছি সত্যের পক্ষে, মানুষের পক্ষে, দেশের পক্ষে। কিন্তু আজ, যখন নিজের জীবনকে দেখি, অনুভব করি—সত্য লিখে বাঁচা সহজ নয়।

আমার পেশা আমাকে শিখিয়েছে—সত্য প্রকাশ করা মানে সাহসের সঙ্গে ঝুঁকি নেবার নাম। ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে করতে শিখেছি, কখনো কখনো নাম গোপন রাখতেই হয়। সত্য প্রকাশ করতে গেলে জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলা প্রয়োজন হয়। এরশাদের আমল, নানা রাজনৈতিক আন্দোলন—সবক্ষেত্রে সাহস ছাড়া লেখা সম্ভব ছিল না। আমরা, আমার মতো সাংবাদিকরা, গোপন নাম ব্যবহার করেছি, তাতে স্বার্থের কিছু নেই, বরং নিরাপত্তার জন্য।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার অবস্থান স্পষ্ট ছিল—স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানো মানে দেশের প্রতি দায়বদ্ধ থাকা। আমার এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে কোনো অবদান না রেখেও মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট বাগিয়ে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, নিচ্ছেন। আমি ও পথে হাঁটিনি।

স্কুল ছাত্র থাকতেই সাংবাদিকতার পেশায় জড়িয়েছি। দৈনিক আজাদের মফস্বল সাংবাদিক। স্কুলে পড়ার সময় আমাদের নামে আজাদে বড় বড় লেখা ছাপা হয়েছে। আবার বাম রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়াও সেই স্কুল থেকেই। রাজনৈতিক আদর্শবোধ ও সাংবাদিকতার নৈতিক সততা আমাকে ব্যক্তিগত সুখভোগের জন্য তাড়িত করেনি। একটাই তাড়না–দায়িত্ববোধ। আমি জ্ঞানত কখনো দায়িত্ব পালনে অবহেলা করিনি। নিজের কাজে ফাঁকি দেইনি। খুব সাহসী মানুষ হয়তো আমি নই, কিন্তু চোখ রাঙিয়ে কেউ আমাকে দিয়ে কিছু লেখাতে পারিনি। অবশ্য বছর কয়েক আগে কথায় পটিয়ে আমাকে দিয়ে নাঈমুল ইসলাম খান তার স্ত্রী মন্টি আপার সুখ্যাতি লিখিয়ে নিয়েছিলেন!

আজকের সময়ে সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ অন্যরূপ। অনেকেই সুবিধা, স্বার্থ, সামাজিক মর্যাদা বা আর্থিক স্বার্থের জন্য সত্যকে আড়াল করে লেখেন। আমি নাম আড়াল করলেও সত্য গোপন করিনি। তাই হয়তো দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় এই পেশায় কাটিয়ে সম্মানজনক বেতন-ভাতা পাই না। এখন আমার যা বেতন তা বলে কাউকে বিব্রত করতে চাই না। তবে শুনেছি, আমার বিভাগীয় প্রধানের বেতন আমার প্রায় দ্বিগুণ। আহা, যদি ওই বেতনের একটি চাকরি পেতাম তাহলেও হয়তো সংসার চালানোর জন্য নিয়মিত ধার-দেনা করার পেশাটি আমাকে বেছে নিতে হতো না! অন্যসব খরচের হিসাব বাদ দিয়ে মাসে আমার একার ওষুধের ব্যয় ২০–২২ হাজার টাকা। বাড়িয়ে নয়, একটুবকমিয়েই হয়তো বললাম! আমার আর্থরাইটিস, লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ কত যে রোগ! আর্থরাইটিস ও লিভারের চিকিৎসার জন্য কত যে ধারদেনা করতে হয়েছে। আমার ছেলেও অসুস্থ, ওরও নিয়মিত চিকিৎসাব্যয় আছে। তাই ধার-দেনা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

শেখ হাসিনার শাসনামলে নানা পরিচয়ে অনেকে অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। একপর্যায়ে লাজলজ্জা ভুলে আমিও শেখ হাসিনার দরবারে সাহায্যের আবেদন করে কোনো ফল পাইনি। অনেক সাংবাদিক প্লট পেয়েছেন। আমি দুইবার আবেদন করেও সফল হইনি। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে বই লিখেও নাকি কতজন ভাগ্য বদলেছেন। অথচ আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত দুটি বইয়ের জন্য আমি দুই টাকাও রয়্যালিটি পাইনি। একেই বলে কপাল! তবে হ্যাঁ, একবার শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়ে সিঙ্গাপুর যাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছিল। ওই সফরের জন্য কিছু হাত খরচের টাকা আমি পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা তো ওই কোটপ্যান্টজুতো কিনতেই শুধু শেষ হয়, আরও দেনা হয়েছে। ওই সুবাদে আমার কোট-টাই জুতা কেনা! সারাজীবন তো স্যান্ডেল পরেই কাটল।

শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে অবিচল অবস্থানের কারণে আমাকে আজও ‘আওয়ামী ট্যাগ’ দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী আমলেও কোনো বাস্তব পুরস্কার পাইনি। আমি পেলাম না একটি প্লট, না একটি ভালো চাকরি। বরং দীর্ঘ সময় চাকরিহীন থেকে ঋণের বোঝা বেড়েছে। স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে পরিবারের দায়বদ্ধতা আমাকে প্রতিনিয়ত চাপের মধ্যে রাখে।

‘আজকের পত্রিকা’য় কাজ করছি ৪ বছর হলো। এই সময়ে না হলো পদোন্নতি, না বাড়ল বেতন। অথচ জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে প্রতিদিন। সংবাদপত্র আর কীভাবে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবে, ঘরের মধ্যেই যেখানে অনিয়ম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন