You have reached your daily news limit

Please log in to continue


এই পৃথিবীতে কেন ভালোবাসাই শেষ কথা

আইরিস মার্ডক ছিলেন দার্শনিক ও ঔপন্যাসিক, নৈতিকতার প্রশ্নকে যিনি নতুনভাবে ভেবেছিলেন। তাঁর মতে, নৈতিকতা মানে কেবল কর্তব্যবোধ, নিয়ম মানা বা আইনশৃঙ্খলার প্রতি আনুগত্য নয়। বরং নৈতিকতার আসল কেন্দ্রে রয়েছে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, আমরা অন্য মানুষকে কীভাবে দেখি এবং কতটা মনোযোগ দিয়ে তাঁর প্রতি ভালোবাসা নিয়ে তাকাই।

‘ভালোবাসা’ রোমান্টিক হোক, পারিবারিক কিংবা বন্ধুত্বের হোক—মানুষকে গভীরভাবে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। শেক্‌সপিয়ারের ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ শুধু প্রেমের গল্প নয়, বরং প্রেম কীভাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে পারে, তারই নাটকীয় প্রকাশ। কোনো মা-বাবা যখন প্রথমবার সন্তানের মুখ দেখেন, তখন যে গভীর আবেগে তাঁরা ভেসে যান, সেটিও একধরনের ভালোবাসার শক্তিশালী প্রকাশ।

প্রশ্ন হলো—এই আবেগের সঙ্গে নৈতিকতার সম্পর্ক কী? প্রথাগত দর্শনের কথা যদি বলা হয়, বিশেষ করে ইমানুয়েল কান্টের ভাবনা অনুসারে—নৈতিকতা হলো কর্তব্য, সবার প্রতি সমানভাবে দায়িত্ব। আবেগ সেখানে স্থান পায় না। কারণ তা অপ্রত্যাশিত, অনিশ্চিত এবং ব্যক্তিগত। কেউ দাবি করলেই তাঁকে ভালোবাসা দেওয়া যায় না—কারণ এটি স্বতঃস্ফূর্ত, নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সুতরাং, অনেক দার্শনিকের কাছে নৈতিকতা ও ভালোবাসা একে অপরের থেকে আলাদা।

কিন্তু মার্ডক একেবারেই ভিন্ন পথে হাঁটলেন। তাঁর মতে, নৈতিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দুই হলো ভালোবাসা। ‘দ্য আইডিয়া অব পারফেকশন’ (১৯৬২) প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন—নৈতিকতার মূলে রয়েছে প্রেম ও মনোযোগ। তিনি ‘অন গড অ্যান্ড গুড’ (১৯৬৯) বইয়ে আরও স্পষ্ট করে বলেছেন—‘আমাদের দরকার এমন এক নৈতিক দর্শন, যেখানে ভালোবাসার ধারণা আবার কেন্দ্রে ফিরে আসবে।’

মার্ডক বলেন, ‘আমাদের নৈতিক জীবন নির্ভর করে আমরা পৃথিবীকে কীভাবে দেখি তার ওপর। যদি কাউকে আমি শত্রু হিসেবে দেখি, তবে তাঁর সঙ্গে শত্রুর মতোই আচরণ করব। আবার যদি সম্ভাব্য বন্ধুর মতো দেখি, তবে উষ্ণতা ও যত্ন দিয়ে কাছে যাব। তাই কাজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দৃষ্টি—আমরা কাকে কেমনভাবে দেখছি।’

মার্ডকের মতে, নৈতিকতার মূল চাবিকাঠি হলো ‘মনোযোগ’। এর মানে অন্যকে ন্যায্যভাবে দেখা, তাঁর প্রকৃত রূপ বোঝার চেষ্টা করা। আমাদের কল্পনা ও কুসংস্কার যেন সেই দৃষ্টি বিকৃত না করে।

মার্ডক একটি কল্পিত উদাহরণ দেন। এক মা তাঁর পুত্রবধূকে সহ্য করতে পারেন না। তিনি মনে করেন, তাঁর পুত্রবধূ অপরিশীলিত, সাধারণ, কৃত্রিম আর মর্যাদাবোধহীন। এত কিছু ভাবলেও মা এটি পুত্রবধূকে বুঝতে দেন না, বরং বাইরের আচরণে তিনি অনেক ভদ্র ব্যবহারই করেন। প্রশ্ন হলো—তিনি যখন পুত্রবধূকে ‘মনে মনে’ ছোট করছেন, তখনো কি এটি নৈতিকভাবে ভুল?
মার্ডক বলছেন—হ্যাঁ। কারণ, নৈতিকতা শুধু কাজ নয়, বরং দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেও নিহিত। যদি আমি কাউকে অন্যায়ভাবে নিচু চোখে দেখি, তবে সেটিও একধরনের নৈতিক ব্যর্থতা।

প্রশ্ন হলো—কেন আমরা অন্যকে বিকৃতভাবে দেখি?

মার্ডকের মতে, এর প্রধান কারণ হলো অহং। এটি আমাদের ভেতরে এমন এক শক্তি, যা সর্বদা নিজের স্বার্থে ব্যস্ত, আত্মরক্ষায় নিমগ্ন। এই আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের চোখে একধরনের কুয়াশা তৈরি করে, যার ফলে আমরা অন্যকে সত্যিকারভাবে দেখতে পারি না।

দ্য ‘সোভের্নিটি অব গড’ (১৯৭০) বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা আতঙ্কগ্রস্ত প্রাণী। আমাদের মন অবিরত সক্রিয়, নিজের চারপাশে এমন এক স্বপ্নজাল তৈরি করি, যা আংশিকভাবে বাস্তবকে ঢেকে ফেলে।’
এই স্বপ্নজালই হলো কল্পনা বা ফ্যান্টাসি। আমরা প্রায়ই অন্যকে আমাদের সুবিধামতো কল্পনা করি—কখনো শ্রেণিগত কুসংস্কারে, কখনো ব্যক্তিগত ঈর্ষায়, আবার কখনো সামাজিক রীতিনীতির কারণে। ফলে অন্যকে তাঁর আসল রূপে নয়, বরং বিকৃত রূপে দেখি।

ভালোবাসা কি তবে বিকৃত দৃষ্টি ভাঙার শক্তি? মূলত এমন প্রশ্নেই ভালোবাসা কেন্দ্রে চলে আসে। মার্ডক বলেন, অহংকে ভাঙতে হলে আমাদের দরকার এমন এক শক্তি, যা আমাদের ভেতর থেকে টেনে বের করে আনে বাইরের জগতে, অন্য মানুষের দিকে। আর সেই শক্তি হলো ভালোবাসা!

ভালোবাসা মানে কেবল আবেগ নয়, বরং মনোযোগী ও ন্যায্য দৃষ্টি। যখন আমরা কাউকে ভালোবাসি, তখন তাঁকে কেবল নিজের স্বার্থের চোখে দেখি না, বরং তাঁকে তাঁর নিজের মর্যাদায় দেখতে চেষ্টা করি। এভাবে ভালোবাসা আমাদের ভেতরের কল্পনার কুয়াশা সরিয়ে দেয় এবং অন্যজন যেমন, তাঁকে তেমনভাবেই বুঝতে সাহায্য করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন