৩৬ জুলাইয়ের আলোয় রাষ্ট্রের নতুন ভোর

যুগান্তর প্রকাশিত: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৩

আজ ৩৬ জুলাই—বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় মাইলফলক। এই দিনে জনগণের অন্তরে জমে থাকা দীর্ঘকালীন নীরব প্রতিবাদ রূপ নেয় এক সুসংগঠিত গণজাগরণে, যা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রশক্তির নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বকে ভেঙে দেয়। সেই গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন, এবং এর সঙ্গে অবসান ঘটে দীর্ঘ ১৬ বছরের দুর্বৃত্তায়িত শাসনের। এক বছর পর, এই দিনে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে—৩৬ জুলাই কেবল একটি সরকারের পতনের দিন নয়, বরং এটি নাগরিক চেতনার নবজন্ম এবং রাষ্ট্রচিন্তার এক নতুন যাত্রাপথের সূচনাবিন্দু।


ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন কখনো আকস্মিক নয়—তার আগে সমাজের গভীরে গড়ে ওঠে এক দীর্ঘস্থায়ী নীরব প্রতিরোধ, যা ধীরে ধীরে রূপ নেয় এক সচেতন নৈতিক প্রস্তুতিতে। বিশ্ব ইতিহাসে আমরা এই ঘটনাপঞ্জি বারবার দেখেছি: জার্মানিতে নাৎসি পতনের আগে, ইতালিতে মুসোলিনির উচ্ছেদের প্রাক্কালে, কিংবা লাতিন আমেরিকার সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে—সর্বত্র মানুষের হৃদয়ে সঞ্চিত নীরব প্রতিবাদ ধীরে ধীরে রূপ নিয়েছে গণজাগরণে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ছিল একই চিত্র। রাষ্ট্রীয় দমন, গুম, বাকস্বাধীনতার হরণ, প্রশাসনিক দলীয়করণ এবং সামাজিক শাসনের নানা কৌশলের মধ্যেও নাগরিকদের চেতনায় এক ধরণের অপ্রকাশিত প্রতিরোধ জন্ম নিচ্ছিল। এ দেশের মানুষ ভয়কে স্বাভাবিক জীবনের অংশ মনে করে নিতে নিতে যখন আর নিতে পারছিল না, তখনই জন্ম নেয় নতুন প্রশ্ন—কেন রাষ্ট্র এমন হবে? কেন নাগরিক কণ্ঠ রুদ্ধ থাকবে? সেই প্রশ্নগুলোই পরিণত হয় নতুন রাষ্ট্রচিন্তার বীজে, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে ৩৬ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে।


এই বিস্ফোরণ ছিল কোনো আকস্মিক রাগ বা আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়—বরং দীর্ঘ সময় ধরে চলা দলীয় অনুগত্যে পরিচালিত প্রশাসন, নিয়ন্ত্রিত বিচারব্যবস্থা, সেন্সরড সংবাদমাধ্যম, পাঠ্যবইয়ের একমুখীকরণ এবং নাগরিক অধিকারের চরম সংকোচনের বিরুদ্ধে এক চিন্তাশীল, ধৈর্যশীল প্রতিরোধ। এই অভ্যুত্থান তাই কেবল একটি সরকারের পতন নয়—এটি একটি যুগপৎ সামাজিক ও রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের নাম, যা মানুষকে রাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়।


এই গণপ্রতিরোধ কেবল রাজনৈতিক দলীয় কাঠামোর মধ্যেই আবদ্ধ ছিল না, বরং নাগরিক সমাজের প্রত্যন্ত কোণ থেকে উঠে আসা ব্যক্তিগত ও সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের সম্মিলনেই এটি পূর্ণতা পায়। যারা সরাসরি রাজপথে ছিল না, তারাও নিজস্ব পদ্ধতিতে রাষ্ট্রের দমননীতির বিরোধিতা করেছে। কেউ তাঁদের সৃষ্টিশীল চর্চায় তুলে ধরেছেন শোষণের বয়ান, কেউ ফেসবুক পোস্টে উচ্চারণ করেছেন প্রতিবাদী বাক্য, আবার কেউ চুপচাপ থেকে প্রতিদিনের জীবনে গড়ে তুলেছেন নৈতিক প্রতিরোধের ব্যারিকেড।


এই সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের বহুমাত্রিকতা—সংগীত, কবিতা, চিত্রকলা কিংবা নাটিকা—রাষ্ট্রশক্তির একমুখী ভাষাকে চ্যালেঞ্জ করে তুলে ধরে একটি বিকল্প বয়ান। ফলে রাষ্ট্রশক্তির একতরফা কর্তৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং গঠিত হয় একটি অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্রের সম্ভাব্য ধারণা। এখানেই প্রতিরোধের প্রকৃত তাৎপর্য নিহিত—এটি ছিল ব্যক্তি ও সমষ্টিক প্রতিবাদের এক যুগপৎ বহিঃপ্রকাশ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও