শুধু শিল্পপতিদের নয়, মধ্যবিত্তেরও আয়ের উৎস হতে পারে শেয়ারবাজার

জাগো নিউজ ২৪ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫

শেয়ারবাজারে দু-একটা  ধসের কারণে প্রায় লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা যায়। অথচ অন্যান্য দেশে শেয়ারবাজার শিল্পায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে। কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনে ক্রেতা এর মালিকের মর্যাদা লাভ করে। অথচ বাংলাদেশে শেয়ারবাজার গত ৫৪ বছরে দাঁড়াতেই পারছে না একটা বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির জন্য। এসব দেখে পাবলিক ক্ষোভে-দুঃখে নীতিনির্ধারকদের কুশপুতুল দাহ করেছে। ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে, এমনকি দু-একজন ক্ষতির ভার সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।


শেয়ারেবাজারে লগ্নিকারী সব খুইয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারতসহ অন্যান্য দেশেও। এসবই সত্যি এবং দুঃখজনক ঘটনা। তবে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে কিছু রূঢ় বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সম্বিত ফিরে না পেলে ভবিষ্যতে যে আরও বড় মাপের বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে, সে কথাটি সর্বদা মাথায় থাকতে হবে। ভালো করে মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এ যাবৎকালে যা ঘটেছে তা হলো প্রধানত- ক. ক্ষতির সম্ভাবনা আড়ালে রেখে শুধু মুনাফামুখী মনোবৃত্তি বিনিয়োগকারীকে প্রলুদ্ধ করেছে; খ. অনেক বিনিয়োগকারী কোম্পানির সম্পদ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা দেননি ; গ. নিজের চিন্তায় নয়, অন্যদের অনুসরণ করে বাজারে শেয়ার প্রবেশ করা হয়েছে ; ঘ. একটা বিশেষ গোষ্ঠী কর্তৃক বাজার ও শেয়ার কারসাজি করার ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তা রোধকল্পে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা; ঙ. বাণিজ্যিক ব্যাংকের মুনাফামুখী মনোবৃত্তি ও শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ; চ. প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারের অভাব ও ছ. নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যর্থতা। বস্তুত, বাজার উঠিয়ে আনতে হলে (ক) -(ছ) পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে নবধারামূলক উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিতে হবে।


সবশেষে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের  উদ্দেশ্যে বিখ্যাত কয়েকজন ব্যক্তির দুটি উক্তি দীক্ষা হিসেবে উপহার দেওয়া যায় ।


বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ধনিক ওয়ারেন বাফেট ১১ বছর বয়স থেকে শেয়ারবাজারের সাথে যুক্ত হন এবং কেনা শুরু করেন। বর্তমানে তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) অর্ধেকের কাছাকাছি। তার মতে বাজার বিধাতার মতোই তাদের সাহায্য করে, যারা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করে। কিন্তু যারা নিজেরা জানে না তারা কী করছে, বাজার তাদের ক্ষমা করে না (যদিও বিধাতা ক্ষমা করে থাকেন )। তিনি আরও বলেন, যে ব্যবসা বোঝা যায় না সেখানে বিনিয়োগ না করাই ভালো। যদি শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ পড়ে যাওয়ার পরও আতঙ্কমুক্ত থাকা না যায় তা হলে শেয়ারবাজারে আসা উচিত নয়।



মহান স্যার আইজ্যাক নিউটন সাউথসি কোম্পানির শেয়ার কিনে একবার শেয়ারবাজারে বেশ কিছু অর্থ হারানোর পর (২০ হাজার পাউন্ড বা বর্তমান মূল্যে প্রায় তিন মিলিয়ন ডলার বা ২৪ কোটি টাকা) আক্ষেপের সুরে বলেন, আমি আকাশের তারার নড়াচড়া হিসাব করতে পারি কিন্তু মানুষের পাগলামি হিসাব করতে পারি না।


দুবার নোবেল বিজয়ী ষ্টিগলিটজ বলেন, শেয়ারবাজারে তথ্যপ্রবাহ অসম্পূর্ণ ও বৈষম্যমূলক থাকে বিধায় একপক্ষ জয়ী ও অন্যপক্ষ ধরাশায়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমার দেশ আমেরিকায় অনেকে আমাকে পছন্দ করে না এজন্য যে আমি ওয়াল স্ট্রিটের ‘বড়দের’ কারসাজির বিপক্ষে এবং সাধারণ ‘ছোট’ মানুষের পক্ষে কথা বলি।


জনাথন সুইফট (যিনি গালিভার্স ট্রেভেলস লিখেছেন) শেয়ারবাজারে সব খুইয়ে বলেছেন, পৃথিবীতে অসংলগ্নতা ছাড়া অন্য কিছুই স্থির নয়।


যদি ১০ বছর কোন শেয়ার ধরে রাখার ইচ্ছে না জাগে তা হলে এমনকি দশ মিনিট ধরে রাখার চিন্তা করা ঠিক নয়।
ফিরিয়ে দাও সেই অর্থ।


অর্থনীতির একজন শিক্ষক হিসেবে অনেকের কাছ থেকে অনুরোধ আসে শেয়ারবাজারে করণীয় সম্পর্কে উপদেশ দেওয়ার জন্য। ভাবটা এমন যে অর্থশাস্ত্রে যারা পড়েছেন তারা শেয়ারবাজার সম্পর্কে খুব ভাল ধারণা রাখেন এবং অনেক সময় ধরে নেওয়া হয় যে, তারা শেয়ারবাজারে অর্থ লগ্নি করে মোটা অঙ্কের মুনাফা ঘরে তুলেছেন। আমার অতি আদরের ছোট কন্যা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী থাকাকালীন অন্যদের অনুকরণ করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে। শেয়ারবাজার সম্পর্কে সে কিছুই জানতো না; শুধু জানতো যে তার কিছু সহপাঠী শেয়ার বেচাকেনা করে অপেক্ষাকৃত ‘ভালো’ আছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও