You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ডিসেম্বর আর জুন নিয়ে বচসা

ডিসেম্বর আর জুন নিয়ে যে বচসা (বচসা বলাই শ্রেয়, এটাকে সুস্থ মস্তিষ্কের আলোচনা বলার কোনো সুযোগ নেই) শুরু হয়েছে, তার অন্তর্নিহিত কারণ বোঝা দায়। অনেক ইউটিউবারই এই প্রশ্নটিকে সামনে নিয়ে এসেছেন এবং তাঁদের মতো করে আলোচনা করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি এ রকম কঠোর হচ্ছেন, অধ্যাপক ইউনূসই-বা কেন জুন পর্যন্ত সময় চাইছেন একেবারে একরোখাভাবে, তা নিয়ে গোটা দেশই যে বিরক্ত, সেটা রাজনীতির মাঠের এই দুই পক্ষের মানুষ ছাড়া আর সবাই বোঝে। এরাও যে বোঝে না, তা নয়; কিন্তু এদের কেউই ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’ পণ করেছেন যেন। ‘তালগাছটা আমার’—এই যেন নীতি।

কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন, যদি জুন পর্যন্তই নির্বাচনকে প্রলম্বিত করা হয়, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের কথা বলা হচ্ছে কেন? ডিসেম্বর না বলে সরাসরি জুন বললে সমস্যা কী? ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, যার কারণে নির্বাচনটি সময়মতো করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা, বন্যাসহ নানাবিধ কারণে নির্বাচন যদি পিছিয়ে দিতে হয়, তাহলে কি এই সরকারকে কথা না রাখতে পারার জন্য অভিযুক্ত করা যাবে? নাকি তারা এই অজুহাত দেখিয়েই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারা করবে?

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নিয়োগকর্তা হিসেবে যাদের কথা বলছিলেন, সেই বৃহৎ ছাত্রসমাজ আজ দ্বিধাবিভক্ত। গুটিকয় যে তরুণের দল ক্ষমতায় বা ক্ষমতার আশপাশে রয়েছে, তাদের কর্মকাণ্ড দেশের জনগণকে অনেকটাই হতাশ করেছে। অনভিজ্ঞতা আর অসততার তকমাও লেগেছে কারও কারও অবয়বে। সমন্বয়ক পরিচয়ে চিহ্নিত লুটেরাদের তিনজনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার কারণে একজন এনসিপি নেতার প্রতি দলটি যে কারণ দর্শাও নোটিশ দিয়েছিল, তা-ও উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে নেতাটি ক্ষমা চাওয়ার কারণে। কিন্তু তিনি থানায় গিয়ে এই মব সৃষ্টিকারীদের ছাড়িয়ে আনতে গিয়েছিলেন কোন আক্কেলে, সেটা বুঝলেই এই রাজনীতির মানচিত্র বোঝা যাবে। ক্ষমতায় না গিয়েই ক্ষমতা দেখানোর এই প্রবণতা যে কারও চোখে পড়বে। আওয়ামী লীগ আমলে কিংবা তার আগের বিএনপি আমলে যেসব অনাচার হয়েছে, তা যেন আর না হয়—এমন প্রতিজ্ঞা নিয়েই তো নতুন সরকার এসেছে, শিক্ষার্থীদেরও তো সেই অঙ্গীকারেই যুক্ত থাকার কথা, কিন্তু এই জায়গাটির খুব কি পরিবর্তন হয়েছে? হলে কোন দিকে সে পরিবর্তন, সেটা কি সাধারণ জনতা বুঝতে পারছে? ‘ছাত্র-জনতা’র নাম নিয়ে রাজনীতি করা হলে তা কি সাধারণ ছাত্র বা সাধারণ জনগণ সে রাজনীতির সঙ্গে থাকবে? এনসিপির জনসভায় লোকসমাগম দেখেই তো বোঝা যায়, জনগণ কী চায়।

বিএনপি কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে এ রকম মরিয়া হয়ে উঠল? অনেকেই বলছেন, যেভাবে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের দুষ্ট ছেলেরা দেশজুড়ে চাঁদাবাজি, মাস্তানি শুরু করেছে, তাতে জুনে নির্বাচন হলে নির্বাচনের আগেই তাদের জনপ্রিয়তা ভীষণভাবে কমে যেতে পারে। ফলে, আওয়ামী লীগবিহীন ফাঁকা মাঠেও নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সহজ না-ও হতে পারে। কেউ কেউ মশকরা করে বলছেন, বেআইনিভাবে চাঁদাবাজি, মাস্তানি করার চেয়ে নির্বাচিত হয়ে সেই একই কাজ করা সহজ বলেই বিএনপি ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে। সবকিছু নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা এটি—এমনটাও মনে করছেন কেউ কেউ।
আরও একটি শঙ্কা তাদের মনে কাজ করতে পারে। দেশের আগস্ট-পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে এমন কোনো ইতিবাচক ঘটনা ঘটেনি, যার ওপর বিশ্বাস রেখে সাধারণ মানুষ আশাবাদী হবে। ফলে আওয়ামী লীগের প্রতি যে রোষ আর ঘৃণা জন্মেছিল মনে, তা-ও ধীরে ধীরে ফিকে হতে শুরু করবে। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে এ সময়ের তরুণেরা শুধু আওয়ামী লীগের শাসনই দেখেছে। এখন দেখছে অন্তর্বর্তী সরকারের শাসন। বিএনপিও তার রূপ দেখিয়ে ফেলেছে। জামায়াত ক্ষমতায় না গিয়েও যেভাবে ক্ষমতার সুবিধা পাচ্ছে, সেটাও দেখা হয়ে গেছে। তাতে সাধারণ জনগণ যদি মনে করে, ‘সব শিয়ালের এক রা’—তাহলে কি তাদের খুব একটা দোষ দেওয়া যাবে?

যে তরুণেরা জীবন বাজি রেখে জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে নেমেছিল, তারা কি তখন ভাবতে পেরেছিল, নানা দিক থেকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর আঘাত আসবে? তারা কি ভাবতে পেরেছিল, একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা নানাভাবে এই সরকারের সমর্থন পাবে? বরাবরই আমি বলে এসেছি, তরুণেরাই দেখাতে পারে দিশা। প্রবীণের প্রজ্ঞা আর নবীনের প্রাণোচ্ছল গতিই পাল্টে দিতে পারে দেশের ভবিষ্যৎ। কিন্তু বারবার এই জায়গাতেই আমাদের পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থের কারণে সমষ্টিকে অবহেলা করা হয়েছে। সুশাসনের জায়গায় বারবার দুঃশাসনের কবলে পড়তে হয়েছে। এবার এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সে সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হলো কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

ডিসেম্বর আর জুন নিয়ে চলা এই বচসায় দেশের ছাত্র-জনতার কোন লাভ হবে? ছাত্র-জনতা মানে তো ক্ষমতাসীন বা ক্ষমতার আশপাশে থাকা কতিপয় মানুষ নয়, গোটা দেশের হৃৎস্পন্দন যে ছাত্র-জনতার হৃদয়ে, তার নাগাল পাওয়া কি এত সহজ?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন