বাংলাদেশি ছাত্ররাও কি ডিপোর্টেশনের শিকার হবেন?

যুগান্তর আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৫, ১০:০৯

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর পড়াশোনা করতে আসা বাংলাদেশি ছাত্রদের ক্ষুদ্র একটি অংশ বিপদে পড়েছে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিপোর্টেশন বা বহিষ্কার করার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে। ট্রাম্পের এ প্রতিশ্রুতি যে কেবল রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর ছিল না, তা গত চার মাস ধরে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করে যার যার দেশে ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ও বসবাসকারী বিদেশিরাই যে শুধু বহিষ্কার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তা নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বক্তব্য অনুযায়ী, বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেও যারা ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছেন, এমনকি সাধারণ ট্রাফিক বিধি লঙ্ঘন করেছেন, যা কোনোভাবেই ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য নয়, এমন তুচ্ছ কারণেও বৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের ডিপোর্টেশনের আওতায় আনা হবে। কেবল অবৈধ অভিবাসী নয়, গ্রিনকার্ডধারী বা স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমোদনপ্রাপ্ত বিদেশি এবং ন্যাচারালাইজ্ড আমেরিকান সিটিজেনদের নাগরিকত্ব বাতিল করে তাদের বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ৬৫ জন ন্যাচারাইলজ্ড সিটিজেনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অবৈধ অভিবাসী প্রশ্নে এবার ট্রাম্প যেহেতু আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর, সেজন্য ন্যাচারালাইজ্ড সিটিজেন হওয়া সত্ত্বেও অনেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত হতে পারেন।


বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে আসা ছাত্রসংখ্যা যদিও বেড়েই চলেছে, পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছাত্রের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে চারজন বাংলাদেশি ছাত্রকে তাদের ভিসার শর্ত লঙ্ঘনের জন্য আটক করার খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ব্যুরো অব এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স এবং ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ১৭ হাজার ৯৯ জন বাংলাদেশি ছাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এর আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৫৬৩। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে আগত বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশওয়ারি হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩ থেকে ৮-এ দাঁড়িয়েছে। এটি একটি শুভ লক্ষণ হলেও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ, বিশেষ করে যারা আন্ডারগ্র্যাড পর্যায়ে পড়াশোনা করতে আসেন, তারা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সপ্তাহে মাত্র বিশ ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ ছাড়া আর কোনো আর্থিক সুযোগ পান না; তাদের পক্ষে কিছুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুইশন ফি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। ফলে কোনোমতে তারা দু-এক সেমিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়ে বড় কোনো সিটিতে চলে আসেন কাজের সন্ধানে। একবার স্টুডেন্ট ভিসার শর্ত ভঙ্গ করলে তারা পুনরায় আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান না। এ ধরনের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অভিবাসীদের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্টদের হাতে ধরা পড়ার ও বহিষ্কৃত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।


বিদেশি ছাত্রদের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের চলতি মেয়াদে যুক্ত হয়েছে আরেকটি দিক, তা হলো, গাজায় ইসরাইলি হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসরাইল ও ইহুদিবিরোধী বিক্ষোভে ছাত্রদের অংশগ্রহণ। ইমিগ্রেশন বিভাগ ইতোমধ্যে বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত তিন শতাধিক বিদেশি ছাত্রের ভিসা বাতিল করেছে এবং তাদের অধিকাংশকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ১ মে পর্যন্ত ২৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ হাজারেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের ভিসা বাতিল করার জন্য। যাদের ভিসা ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে, তারা তাদের ভিসা রক্ষার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দিয়েও সুবিধা করতে পারছেন না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষার্থীদের করা মামলার সংখ্যা ইতোমধ্যে শতাধিক। একাধিক অভিবাসন অধিকার প্রবক্তা ভুক্তভোগী ছাত্রদের আইনি সহযোগিতা দানে এগিয়ে এসেছে। নিউইয়র্কের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসন আইনজীবীরাও যেসব বাংলাদেশি ছাত্র ভিসা বাতিলের শিকার হয়েছেন, তাদের বিনা ব্যয়ে আইনি সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। অন্যান্য কমিউনিটিতেও অভিন্ন চিত্র বিরাজ করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস বিদেশি ছাত্রদের ভিসা বাতিলের নীতির কার্যকারিতা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও