আছে ডিগ্রি নেই চাকরি

জাগো নিউজ ২৪ অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ০৪ মে ২০২৫, ১৬:৪৮

‘বর্তমান শিক্ষাপ্রণালীটাই যে আমাদের ব্যর্থতার কারণ, অভ্যাসগত অন্ধ মমতার মোহে সেটা আমরা কিছুতেই মনে ভাবিতে পারি না । ঘুরিয়া ফিরিয়া নূতন বিশ্ববিদ্যালয় গড়িবার বেলাতেও প্রণালী বদল করিবার কথা মনেই আসে না; তাই, নূতনের ঢালাই করিতেছি সেই পুরাতনের ছাঁচে। নূতনের জন্য ইচ্ছা খুবই হইতেছে অথচ ভরসা কিছুই হইতেছে না ...’ – ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , “শিক্ষা”।


সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত সাতটি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের এক বিশাল বিক্ষোভে নীতিনির্ধারকদের ঘুম হারাম হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চটজলদি পদক্ষেপ আপাতত আগুনের লেলিহান বিস্তার দমন করেছে; তবে ছাইচাপা আগুন হিসেবে থাকছেই। বলে রাখা দরকার যে, এই সাতটি কলেজ এক সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল, তারপর ক্ষমতার লড়াইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে যায়। যাকে বলে পাটাপুতার ঘষাঘষি মরিচের মরণ এবং এই টানাপড়েনে ছেলেমেয়েদের শিক্ষাজীবন জেরবার! আমরা মনে করি ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগগুলো যথাযথ তদন্তের দাবি রাখে। অবশ্য পরবর্তী দাবি দাঁড়ায় কারও অধিভুক্ত হওয়া নয় বরং সাতটি কলেজসমেত একটা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। এরই মধ্যে তিতুমির কলেজের ছাত্রছাত্রীরা কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার ঘোষণায় অবিচল।


অবশেষে সুসংবাদ এই যে, এই কলেজগুলো নিয়ে একটা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এবং আমরা অবশ্যই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির কল্যাণ কামনা করি। আমার নিবন্ধের মূল বক্তব্য হলো আসলে এসব কলেজের– হোক ঢাকা, স্বতন্ত্র কিংবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে – ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কী। এবং নিবন্ধটির স্বার্থে আমি বিআইডিএস এর গবেষক বদ্রুনেসা আহমেদ, জুলফিকার আলি এবং রিজয়ানুল ইসলামের এক গবেষণার সাহায্য নেব।



দুই.
বলা বাহুল্য যে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সঠিকভাবে কাজে লাগানো আমাদের এই মুহূর্তের আশু করণীয়। কারণ আমরা জানি যে আমরা আমাদের জনমিতিক সুফল (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) সঠিকভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ হোঁচট খাবে। তবে দেশের শ্রমশক্তির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা দেয় দুঃখজনক দৃশ্য- আমাদের দেশের উৎপাদনশীল শ্রমশক্তির মধ্যে ‘নিট’ তরুণদের (শিক্ষা, কাজ বা প্রশিক্ষণে যুক্ত নেই এমন) সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।


এক হিসাব বলছে, দেশের ১৫-২৪ বছরের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশই নিট জনগোষ্ঠী, যা বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ এবং এর বড় অংশই নারী (৬২ শতাংশ)। এ পরিসংখ্যান আমাদের একটি রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি করিয়ে দেয় আর সেটা হলো এই যে, আমরা তরুণদের জন্য যথেষ্ট কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছি না। অথচ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হলেও কর্মসংস্থান তেমন সৃষ্টি হয়নি। সুতরাং হতাশ তরুণ সমাজ জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থান ঘটালো যদিও অনেক কারণেই সেটা মুখ দেখেছিল।


তিন.
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অনার্স ও মাস্টার্স কলেজ অসংখ্য অথচ এসব কলেজে অধিক বিষয়ে (অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে) পর্যাপ্ত যোগ্য শিক্ষক আছেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান সবাই। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহর পর্যবেক্ষণ অনেকটা এরকম- ‘কখনো কখনো দেখা যায়, একজন শিক্ষককে উচ্চ মাধ্যমিক পাস ও অনার্স কোর্সে পাঠদান করতে হয়। তাকে দিনে কমপক্ষে তিন-পাঁচটি পর্যন্ত ক্লাস নিতে হয়। এই শিক্ষক নিবেদিতপ্রাণ হলেও ছাত্রদের কতটুকু দিতে পারবেন, তা বলাই বাহুল্য। কলেজগুলোতে ভালো লাইব্রেরি নেই, নেই ল্যাবরেটরি। লাইব্রেরি ও ল্যাবরেটরি ছাড়া উচ্চশিক্ষা কী করে সম্ভব বুঝে ওঠা মুশকিল।’


চার.
বদ্রুন্নেসা আহমেদ ও অন্যান্য গবেষকদের মতে বর্তমান বাংলাদেশে শিক্ষিত বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের উঁচু শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি এবং তা ঊর্ধ্বমুখী– ২০১৬/১৭ সালের ১১ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১২ শতাংশ। জাতীয় গড় বেকার থেকে শিক্ষিত বেকার দ্বিগুণেরও বেশি। অবস্থা অনেকটা ‘হীরক রাজার দেশে’- ‘লেখাপড়া করে যে, অনাহারে মরে সে !’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও