You have reached your daily news limit

Please log in to continue


মে দিবস ও আমরা ৯৯ শতাংশ

মজুরি শ্রমিকের জন্ম ও বিকাশের সঙ্গে পুঁজিবাদের জন্ম ও বিকাশের সম্পর্ক প্রত্যক্ষ। মজুরি শ্রমিকের সংখ্যাবৃদ্ধি ছাড়া পুঁজিবাদের অস্তিত্ব ও বিস্তার সম্ভব হয় না। সেজন্য ইউরোপে শিল্পবিপ্লবকালে একদিকে পুঁজিপতি একটি শ্রেণি হিসাবে তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে, অন্যদিকে তৈরি হয়েছে শ্রমিক শ্রেণি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রেও প্রায় অভিন্ন চিত্র ছিল। কাজের সময় কিংবা মজুরির তখন ঠিক ছিল না। ক্রমেই নারী-শিশুসহ শ্রমিকদের অবর্ণনীয় জীবন পরিবর্তনের জন্য অসংখ্য প্রতিবাদ-বিক্ষোভ তৈরি হয়, সংগঠন গড়ে ওঠে। উনিশ শতকের ৬০/৭০/৮০ দশকের এসব আন্দোলনের ধারাবাহিকতাতেই ১৮৮৬ সালের মে মাসের ১ তারিখে তিন লক্ষাধিক শ্রমিকের ধর্মঘট চলাকালে শিকাগো শহরের বড় সমাবেশে হামলা হয়। গুলিতে নিহত হন শ্রমিকরা, পরে আবার প্রহসনমূলক বিচারে শ্রমিক সংগঠকদেরই ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। এ জীবনদান বৃথা যায়নি। একসময় যে দাবিকে বলা হয়েছে উন্নয়নবিরোধী, সন্ত্রাসী-ক্রমে সারা বিশ্ব সেই দাবিই গ্রহণ করেছে, মে দিবস পরিণত হয়েছে আন্তর্জাতিক দিবসে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনো সে ইতিহাস স্মরণ করতে ভয় পায়। তাই সারা বিশ্বে মে দিবস পালিত হলেও যুক্তরাষ্ট্রে সরকারিভাবে এটি পালিত হয় না। তারা শ্রম দিবস পালন করে ৪ সেপ্টেম্বর!

বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে সমাজ ও অর্থনীতির মধ্যে যে পরিবর্তন হয়েছে, তার একটি বড় বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণি গঠনের পরিবর্তন। বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্কারের নামে গত শতকের আশির দশক থেকে অনেক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষিত হয়েছে। ২০০২ সালে বন্ধ হয়েছে আদমজী জুট মিল, গত ক’বছরে বাকি সব জুট মিল, চিনিকলও। আশির দশক পর্যন্ত এ রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের শ্রমিকরাই ছিল দেশের শিল্পশ্রমিকদের প্রধান সংগঠিত অংশ। সরকার নির্বিশেষে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানা বন্ধ করার প্রক্রিয়াটি শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ ব্যক্তি দখলে নেওয়ার প্রক্রিয়াই নয়, এটি একইসঙ্গে শিল্পশ্রমিকদের সংগঠিত শক্তিকে ভেঙে দেওয়ার দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের অংশ। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে শিল্প খাতের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প খাতের অবস্থান খুবই প্রান্তিক। একই কারণে ইউনিয়নভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যাও তুলনায় অনেক কম। রপ্তানিমুখী খাত হিসাবে গার্মেন্টস শিল্প খাতের মধ্যে এখন প্রাধান্যে। শিল্প খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শ্রমিক এ খাতেই নিয়োজিত। এ খাত অনেক বেশি আলোচিত হলেও এখানেও ইউনিয়নের সংখ্যা হাতেগোনা, অন্য সংগঠনের অবস্থাও খুবই দুর্বল। অন্যদিকে গত কয়েক দশকে একই অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উদ্ভূত হয়েছে কয়েক হাজার দখলদার চোরাই কোটিপতি। তাদের রক্ষা করতে দাঁড়িয়েছে মাফিয়া রাষ্ট্র। উৎপাদনশীল প্রক্রিয়া অব্যাহত ও বিকশিত করার চেয়ে অতিশোষণ, দখল, লুণ্ঠন ও পাচারের মধ্য দিয়ে দ্রুত সম্পদ কেন্দ্রীভূত এবং তা নিশ্চিত করতে সর্বজনের গণতান্ত্রিক অধিকার চুরমার করাই তাদের প্রধান কাজ। বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতি প্রধানত তাদের নিয়ন্ত্রণে। সে কারণে জনগণের বৃহত্তম অংশ শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষ তাদের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত-বেশির ভাগ শিল্প-কারখানায় কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম বাঁচার মতো মজুরি, ৮ ঘণ্টা শ্রম দিবস, নিয়োগপত্র, সাপ্তাহিক ছুটি, কাজ ও কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা-এসবের অধিকাংশই অনুপস্থিত। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা এখনো অব্যাহত নিপীড়ন ও প্রতারণার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য ধরপাকড়, হামলা, নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। যতগুলো আছে, তার মধ্যে পোষা ইউনিয়নেরই আধিক্য দেখা যায়।

গত কয়েক দশকে গার্মেন্টশিল্পের বিকাশের মধ্য দিয়ে শ্রমিকশ্রেণির গঠনের লিঙ্গীয় পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হয়েছে। এ খাতে অধিকাংশ শ্রমিকই নারী। এর বাইরেও বিভিন্ন পেশায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। নারী ক্ষমতায়নের বহু গল্প শুনি আমরা, কিন্তু প্রতিদিনের খবরের কাগজে এ শ্রমজীবী নারীর নিরাপত্তাহীনতা, খুন, ধর্ষণ, হয়রানির খবর আসে। অব্যাহত বঞ্চনা ও নিপীড়ন মোকাবিলা করতে গিয়ে নারীশ্রমিক এক নতুন প্রতিবাদী সামাজিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

পুঁজির বর্তমান চাহিদা ও বিন্যাসের কারণে বর্তমানে প্রায় সব খাতেই অস্থায়ী, দিনভিত্তিক, খণ্ডকালীন, চুক্তিভিত্তিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যাই এখন ক্রমবর্ধমান। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিকের সংখ্যা সর্বোচ্চ, একেবারেই অসংগঠিত এবং চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে টিকে থাকার চেষ্টাই তাদের জীবন। অনলাইন শ্রমিকের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে, যাদের অনিশ্চয়তা আরও বেশি। মে দিবসের মূল যে দাবি ৮ ঘণ্টা কাজ করে বাঁচার মতো মজুরি, তা থেকে দেশের সব পর্যায়ের শ্রমিক-মেহনতি মানুষসহ শিক্ষিত মজুরেরাও অনেক দূরে।

সংগঠিত হওয়ার সুযোগ শিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষদের জন্যও খুবই ক্ষীণ। সে কারণে ব্যাংক, বিমা, মিডিয়া, এনজিও, বেসরকারি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লিনিক, অনলাইন খাত কোথাও কাজের ও আয়ের নিরাপত্তা দেখা যায় না। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মানুষদের যে কোনো সময় ছাঁটাই এবং তাদের ওপর অন্যায়-অবিচারের প্রতিকারের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেই। সরকার সর্বত্রই নীরব দর্শক। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের স্বার্থ দেখার প্রশ্নে আইনগত, প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি ব্যবস্থা এদেশের মতো এতটা নিষ্ক্রিয় কমই দেখা যায়।

দারিদ্র্য আর বঞ্চনার মধ্যে আছে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ, তাদের জীবনে কোনো উল্লেযোগ্য উন্নতি ছাড়াই বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) আর গড় মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। পরিসংখ্যানের চাতুর্য আর গড় হিসাবের প্রতারণায় ঢাকা থাকছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনের নির্মমতা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন