You have reached your daily news limit

Please log in to continue


‘দ্য ব্যাটেল অব কুষ্টিয়ার’ সামাজিক ইতিহাস

সাতচল্লিশের দেশভাগের সময় নদীয়া পাকিস্তানের ভাগেই ছিল। নদীয়ার সদর কৃষ্ণনগরে ১৫ আগস্টের আগের দিন ১৪ আগস্ট স্বাধীনতার জিলাপি বিতরণ হয়েছিল। উড়েছিল পাকিস্তানের মার্কা সবুজ চাঁদ–তারা পতাকা। দিন চারেক পরে ভ্রম সংশোধন হয়। বলা হয়, বাঁটোয়ারা ভুল হয়েছে। পাকিস্তান খুলনা পেলেও হারাতে হলো মুর্শিদাবাদ আর চিরতরে পদ্মার জান ফারাক্কা। নদীয়ার সবটা ভারতে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও অর্ধেকটা পাকিস্তান পেয়ে যায়। নদীয়ার তিনটি মহকুমা নিয়ে গঠিত হয় নতুন জেলা কুষ্টিয়া।

প্রস্তাব ছিল নাম হবে পূর্ব নদীয়া, যেমন হয়েছিল দিনাজপুরে। ভারতভাগে পাওয়া খণ্ডিত দিনাজপুরকে অনেক দিন পর্যন্ত পশ্চিম দিনাজপুর বলেই ডাকত। যাহোক, কুষ্টিয়া মহকুমার নামেই জেলার নামকরণ হলেও জেলা সদরের কোনো অবকাঠামো সেখানে ছিল না। মহকুমা শহরের সবচেয়ে প্রাচীন আর বড় হাইস্কুলটি সরকার কবজা করে পুলিশ লাইনস বানিয়ে ফেলে। ভারতভাগে চলে যাওয়া অংশ থেকে চলে আসে বাস্তুচ্যুত মানুষেরা। বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহব্যবস্থাহীন এক মহকুমা শহরের জনমিতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। হাটবাজার, রাস্তা, স্টেশন, খেয়াঘাট, মসজিদ ও মহল্লায় চেনার চেয়ে অচেনা মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে।

শহরের নাগরিক নেতৃত্বে নতুন বিভাজকরেখা তৈরি হয়। পৌর ও স্থানীয় নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটতে থাকে। কিন্তু সবার অজান্তে মাত্র ২৪ বছরের মধ্যে সবাই আবার এককাট্টা হয়ে যায়। নানা স্বাদের সবজি দিয়ে যেমন তৈরি হয় একটা সুস্বাদু তরকারি, অনেকটা সে রকম এক সামাজিক মূলধন তৈরি হয়ে যায় জান্তে–অজান্তে। কুষ্টিয়ার যুদ্ধে সেই সামাজিক মূলধন সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। গোলাবারুদ, রসদ, সংগঠিত–প্রশিক্ষিত লোকবল বলতে যা বোঝায়, তার কিছুই ছিল না কুষ্টিয়াবাসীর পুঁজিতে। শুধু ছিল সামাজিক পুঁজি—একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার।

তখনো মুক্তিবাহিনী, মুক্তিযুদ্ধ, সেক্টর, সেক্টর কমান্ডার—কোনো কিছুই গড়ে ওঠেনি। এসব শব্দ তখন শোনেনি কেউ। ঢাকার দিকে তাকিয়ে ছিলেন নেতারা। মানুষ কিন্তু টের পাচ্ছিল, আলোচনার নামে ছলচাতুরী চলছে। বুঝে গিয়েছিল শত্রুদের সঙ্গে হবে না সমঝোতা। দেশটা আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। হাতে সময় নেই।

জনযুদ্ধের প্রথম অগ্নিপরীক্ষার নাম ‘দ্য ব্যাটল অব কুষ্টিয়া’। সেদিন কুষ্টিয়ার মতো একটি ছোট্ট শহর দেখিয়েছিল কীভাবে লড়াই করতে হয়। কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের মাঠে ৩ মার্চ স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে লাল–সবুজের ছয়টি তারাখচিত একটি পতাকা স্বাধীন বাংলার পতাকা হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া হয়। সেদিনই স্বাধীন বাংলার ইশতেহার পাঠ করেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হাদী (পরে রক্ষীবাহিনী তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করে গড়াই নদে তাঁর লাশ ফেলে রাখে)। ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত হয় জয় বাংলা বাহিনী।

সেদিনই কুষ্টিয়ার প্রতিটি গ্রামে জয় বাংলা বাহিনী গড়ে ওঠে, পরে যা মুক্তিবাহিনী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তৎকালীন ইপিআর (পরবর্তীতে বিডিআর, এখন বিজিবি), পুলিশ, আনসার এই যুদ্ধে অংশ নিয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখলেও নেতৃত্ব আর ব্যবস্থাপনা ছিল ছাত্র–জনতার হাতে। ছাত্র–জনতা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয়। একদলের দায়িত্ব ছিল কুষ্টিয়ায় পাকিস্তানি সেনার অবস্থান, সেনাসংখ্যা, অস্ত্রশস্ত্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে সম্ভাব্য আক্রমণের একটি নকশা তৈরি করে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও দৌলতপুর ইপিআরের ক্যাম্পগুলোয় সাধারণ সৈনিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এ কাজের নেতৃত্ব ছিল মূলত ছাত্রদের। তাঁরাই খুঁজে বের করেন ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় আধা সামরিক বাহিনী মুজাহিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে কে কে অস্ত্র (রাইফেল) চালানো শিখেছিল।

ইপিআর নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলা, তাদের রাজি করানো, প্রশিক্ষিত যোদ্ধা সংগ্রহ ইত্যাদির দায়িত্ব নেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

ছাত্র–জনতা আরেকটি বড় দায়িত্ব নেয়—যোদ্ধাদের জন্য খাবার আর পানীয় সংগ্রহ এবং সেগুলো বণ্টন। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রুটি, গুড় ও ডাব সংগ্রহ শুরু হয়ে যায় ২৮ মার্চ থেকে। সংগ্রহকারীরা গ্রামে গিয়ে দেখেছেন মায়েরা রুটি বানাচ্ছেন। কোথায় তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়নি। বলতে হয়নি রুটি ও ডাব দিন। সবকিছু প্রস্তুত ছিল। গাছিরা গাছি সলেমানের নেতৃত্বে তাঁদের মনের নির্দেশে শহরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে গাছ থেকে ডাব নামিয়ে রাখার তাগিদ দেওয়া শুরু করেন ২৩ মার্চ থেকে। অনেকেই বুঝতে পারেননি সেই তাগিদের হেতু।

মেজর আবু ওসমান তাঁর বর্ণনায় বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর মতো খাদ্য সরবরাহের কোনো রকম নিয়মিত পদ্ধতি না থাকায় ভলান্টিয়ার গ্রুপের কিছু লোককে কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাহায্যে আমাদের সব বাহিনীর খাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়। আরও ব্যবস্থা করা হয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে প্রয়োজনমতো যথাস্থানে ব্যবহার করার। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর হাতিয়ার বলতে ছিল বাঁশের লাঠি।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন