ধর্ম যার যার, ঈদ আনন্দ সবার

ঢাকা পোষ্ট এম এল গনি প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৫, ২১:১১

ঈদুল ফিতর (যার অর্থ, রোজা/উপবাস ভাঙার আনন্দ) মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের একটি। অন্যটি, ঈদুল আযহা। ধর্মীয় পরিভাষায় একে ‍ইয়াওমুল জায়েজ‍ (পুরস্কারের দিবস) হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা এবং ফিতরা ও জাকাত আদায়ের পর এই দিনটি ধর্মীয় আবহে আনন্দঘন পরিবেশে পালন করে থাকে ইসলাম ধর্মের অনুসারীবৃন্দ।


ঈদুল ফিতর উদযাপনের শুরু ইসলামের সূচনালগ্নেই হয়। হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে প্রথমবারের মতো মুসলমানরা এই উৎসব পালন করেন। ঈদুল ফিতর ইসলামিক বর্ষপঞ্জির দশম মাস শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে উদযাপিত হয়। মহানবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছিলেন, 'এই দিনে সবাই একত্রিত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করবে, একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাবে এবং দরিদ্রদের মাঝে সদকা প্রদান করবে।'


প্রায় চার দশক আগে ছোটবেলায় আমি দেখেছি আমার সরকারি চাকরি করা বাবা আমাদের গ্রামের বাড়িতে ঈদের দিনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুবান্ধবদের জন্যও খাবারের আলাদা ব্যবস্থা করতেন। অন্যদের মাঝে হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষক বাবুল স্যারও আমন্ত্রিত থাকতেন। ঈদের দিনের নিত্যচেনা সেমাইয়ের পাশাপাশি খাসির মাংস দিয়ে খিচুড়িও রান্না করা হতো। তারা পেট ভরে খেয়ে দীর্ঘ আড্ডা দিতেন।


সে বয়সে ঈদের দিনে বাবার এমন আলাদা আয়োজনের কারণ খুব একটা বুঝতাম না। বড় হয়ে ঠিক বুঝেছিলাম এটি তার অন্তরে লুকিয়ে থাকা অসাম্প্রদায়িক মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও তার প্রচেষ্টা ছিল পবিত্র ঈদকে কেবল মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সর্বজনীনভাবে উদযাপনের।



বাংলাদেশ একটি বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের দেশ, যেখানে ধর্ম, জাতি ও ভাষার সমন্বয়ে একটি সর্বজনীন সামাজিক বন্ধন গড়ে উঠেছে। ঈদ মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও এটি কেবল একটি ধর্মীয় আচার নয় বরং এটি সর্বজনীন উৎসব যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে আনন্দের বার্তা ছড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশে ঈদ উৎসব একটি মিলনমেলার মতো, যেখানে সমাজের সব শ্রেণির মানুষ একত্রিত হয়; ফলে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের প্রকাশ ঘটে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঈদ উৎসবের সর্বজনীনতা, এর ঐতিহ্য, গুরুত্ব এবং ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে সীমিত পরিসরে আলোকপাত করা হবে এ লেখায়।


ধর্মীয় তাৎপর্য


ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা—এই দুটি প্রধান ঈদ বাংলাদেশের মুসলমানদের জীবনে গভীর তাৎপর্য বহন করে। ঈদুল ফিতর এক মাস রোজার পর আসে, যা আত্মশুদ্ধি ও সংযমের প্রতীক। অন্যদিকে, ঈদুল আজহা কোরবানির মাধ্যমে আত্মত্যাগ ও মানব সেবার গুরুত্ব তুলে ধরে। ঈদুল ফিতর রমজান মাসের শেষের দিনে পালিত হয়, যা এক মাস রোজা রাখার পর আত্মশুদ্ধির প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত। অন্যদিকে, ঈদুল আজহা কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত, যা ত্যাগের মহিমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই দুটি ঈদই মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে ধর্মীয় বিধান পালন করার পাশাপাশি আনন্দ ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি হয়।


ঈদ উৎসবের সর্বজনীনতা


বাংলাদেশে ঈদ উৎসব শুধু মুসলমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি সর্বজনীন উৎসব। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের মানুষ এই উৎসবের আনন্দে অংশগ্রহণ করে। ঈদের দিনে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রিত হয়, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায় এবং মিষ্টি ও খাবার বিনিময় করে। ভিন্ন ধর্মের যারা তারাও ঈদের ছুটি আনন্দময় করতে যার যার পছন্দমতো অবকাশ যাপনের সুযোগ কাজে লাগান।


সামাজিক সম্প্রীতি ও সংহতি


ঈদ উপলক্ষে দেশের বড় বড় শহরগুলো থেকে স্রোতের মতো মানুষ গ্রামেগঞ্জে তাদের শেকড়ের সন্ধানে যায়। এ বিশেষ দিবসে ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাই ঈদের নামাজ পড়তে একত্রিত হয় এবং প্রার্থনা শেষে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করে। ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলি, উপহার বিনিময় এবং একে অপরকে আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে পরস্পরের ভুল বোঝাবুঝি নিরসন হয়, এবং ফলে সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে ঈদ উৎসব সমাজে সম্প্রীতি ও সংহতির বন্ধন দৃঢ় করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও