You have reached your daily news limit

Please log in to continue


তিস্তা প্রকল্প ও আমাদের জাতীয় ঐকমত্য

বহুমুখী তিস্তা সমস্যা সমাধানে সাবেক আওয়ামী লীগ এবং প্রতিবেশী ভারত সরকারের দীর্ঘসূত্রতা ও বিভিন্ন টানাপড়েনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে এই বিস্ফোরণোন্মুখ ইস্যুটি। এই বিষয়টি নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও কোনো ত্বরিত সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। এ ব্যাপারে দেশের নদী বিশেষজ্ঞ কিংবা গবেষকরাও সরকার কী চায় সে সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার সিদ্ধান্ত বা দিকনির্দেশ পাচ্ছেন না। ফলে দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত অভিন্ন নদী তিস্তার পানিবণ্টন এবং উত্তরবঙ্গের পরিবেশ রক্ষার জরুরি বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি এ অঞ্চলের ভুক্তভোগী পাঁচটি জেলার মানুষ তিস্তাকেন্দ্রিক এক গণ-আন্দোলন শুরু করেছে।

সোচ্চার হয়ে উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বিএনপি। তিস্তায় ভারতের আচরণ অন্যায্য বলে উল্লেখ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি তাঁর বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো এই সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতে জাতিসংঘে যেতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেছেন। তা ছাড়া একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের অসম, অন্যায্য ও একতরফা সব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন বা পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছেন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিস্তাপারের পাঁচটি জেলার উপদ্রুত মানুষ এ অঞ্চলের ১১টি পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছিল। আন্দোলনকারীরা বলেছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বৃহত্তর রংপুর এলাকার পাঁচটি জেলায় বিএনপির নেতৃত্বে গৃহীত কর্মসূচি পালন উপলক্ষে দলনেতা তারেক রহমান বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যে অভিন্ন ৫৪টি নদী, তার ন্যায্য হিস্যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্য। অথচ তিস্তার পানির জন্য বাংলাদেশের মানুষকে আন্দোলন করতে হচ্ছে।

সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে প্রতিবেশী দেশটি উজানে গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে আর সময়ক্ষেপণ না করে ১৯৯২ সালের ওয়াটার কনভেনশন এবং ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা আমাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলকে মেরুকরণের হাত থেকে বাঁচাতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কিংবা এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার ব্যাপারে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কতটুকু এগিয়েছে, সে সম্পর্কে দেশের নদী বিশেষজ্ঞরা ওয়াকিফহাল নন।

মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্য, কর্মসূচি কিংবা একটি কৌশলপত্র তৈরির ব্যাপারে এখনো কেউ কোনো সম্যক ধারণা পেতে সক্ষম হননি। এ ক্ষেত্রে চীন দুই বছর আগে যে কাজ করেছে, তার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চূড়ান্তভাবে প্রণীত তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীন প্রস্তুত। তবে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশকে। দ্রুত ব্যবস্থা নিলে বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে রাষ্ট্রদূত ওয়েন উল্লেখ করেছেন। তা ছাড়া আগামী অক্টোবর-ডিসেম্বরের মধ্যে ‘পাওয়ার চায়না’ একটি প্রতিবেদন জমা দেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে। বাংলাদেশকে তার নিজের দায়িত্বে একটি স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাষ্ট্রদূত ওয়েন বলেছেন, ‘তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তুত চীন।’ তাঁরা এ ব্যাপারে দুই বছর অপেক্ষা করেছেন বলেও জানান তিনি। তিস্তাপারের জন্য যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে, তাতে তিস্তার তীর রক্ষা বাঁধ, নদীর প্রয়োজনীয় খননকাজ, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বন্দর ও নগর গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। তিস্তায় একটি পরিকল্পিত নৌপথ চালু করতে হলে পরিকল্পিতভাবে খনন করে এর নাব্যতা বা গভীরতা বৃদ্ধি করতে হবে। সে কাজগুলো করার জন্য এখন থেকেই সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ প্রয়োজন। এই মহাপরিকল্পনাটি উত্তরাঞ্চলের সার্বিক পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এবং এর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রণীত হতে হবে। এতে বাংলাদেশের বাইরে থেকে কে কী ভাববে, সেটি আমাদের বিবেচনার বিষয় নয়।

বাংলাদেশ তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে বিগত ৫০ বছর অপেক্ষা করেছে, যা কোনো সুফল বয়ে আনেনি। সে উল্লেখযোগ্য সময়টিতেও প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের দিক থেকে দেখা গেছে বিভিন্ন স্বার্থপরতা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে বিভিন্ন অজুহাত ও গড়িমসি। গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলন-পরবর্তী অবস্থায় বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণ সেসব ব্যাপারে আর অহেতুক সময়ক্ষেপণ করতে রাজি নয়। এ ক্ষেত্রে কারো আর কোনো অজুহাত কিংবা স্বার্থপরতা বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের বর্ষায় প্রবল বন্যা, তিস্তাপারের মানুষের সহায়-সম্বল সব কিছু নিয়ে ভেসে যাওয়া এবং নদীভাঙনের ফলে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া আর কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। চলতে দেওয়া যায় না শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি বা পানি সেচের অভাবে এক সর্বনাশা মরুকরণ, যাতে কোনো ফসল বা রবিশস্য ফলানো সম্ভব হয় না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন