তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন: কৃষক ও ভূমিহীনের কথা শুনবে কে

প্রথম আলো জহির রায়হান প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:২০

উত্তরের জীবনরেখা তিস্তা নদী রক্ষায় পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি হয়ে গেল। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়েছে বিএনপি। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আসাদুল হাবিব (দুলু) ছিলেন এই কর্মসূচির প্রধান সমন্বয়কারী। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’—স্লোগানে এ কর্মসূচি সাড়া ফেলেছে দেশ-বিদেশে। একটি ‘হারিয়ে যাওয়া’ বিষয় থেকে তিস্তা ইস্যু আবার সামনে এসেছে।


৪৮ ঘণ্টার এ অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দিয়েছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতা ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলের নেতারা এসেছেন। কর্মসূচি থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবি উঠেছে। কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিবেশী দেশ ভারতের পানি আগ্রাসন নীতির।


জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোয় তিস্তার পানির ন্যায্য অধিকারের বিষয়টি তুলে ধরতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতা। প্রয়োজনে সম্ভাব্য সব বিকল্প ভেবে দেখার কথা উঠেছে। কিন্তু তিস্তার প্লাবনভূমি ও চরের হাজার হাজার একর জমি যে ভূমিদস্যু কোম্পানিগুলো দখল করে নিচ্ছে, তাদের উচ্ছেদের দাবিটি ওঠেনি।


অথচ এটিও গুরুত্বপূর্ণ দাবি হওয়ার কথা ছিল। কারণ, তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে জমি হারিয়ে চরের খাসজমিতে চাষাবাদ করা কৃষকেরা জমি হারাচ্ছেন। ভূমিহীন কৃষকেরা ভূমিদস্যু কর্তৃক উচ্ছেদ হচ্ছেন।



অবশ্য তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যাঁরা এসব চরে সৌরবিদ্যুৎসহ বিভিন্ন প্রকল্প করেছেন, তাঁরা স্বৈরশাসকের দোসর ছিলেন। জনগণের কাছে তাঁদের কোনো জবাবদিহি ছিল না। তাঁরা এই আন্দোলন করছেন, কৃষক ও তিস্তাপারের মানুষকে বাঁচানোর জন্য।


২.
বড় কোম্পানিগুলো কীভাবে তিস্তাপারের জীবন-জীবিকাকে হুমকিতে ফেলেছে, তার একটি উদাহরণ তিস্তা সোলার লিমিটেড। গত বছরের ২ আগস্ট গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে দুই শ মেগাওয়াটের তিস্তা সোলার লিমিটেডের উদ্বোধন করেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা ও চর খোর্দা মৌজার তিস্তার প্লাবনভূমির প্রায় এক হাজার একর জমিতে দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বেক্সিমকোর গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড।


জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রকল্পটির আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, তিস্তা সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি নদীর তীরে বালুর বাঁধ নির্মাণ করে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে প্রকল্প স্থাপন করছে, যা পানি আইন ২০১৩–এর ২০ (১) ধারামতে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন; তিস্তা একটি আন্তসীমান্ত নদী। এই নদীর প্লাবনভূমি রক্ষা করা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এ নদীর তীরভূমি ও প্লাবনভূমি ব্যবহার করে এ প্রকল্প এবং অন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অবিবেচনাপ্রসূত।


জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এই প্রকল্প এলাকার অবৈধভাবে নির্মিত বালুর বাঁধ (টিএসএল) ভেঙে দিতে ও উচ্ছেদ কাজের তদারকি করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলেছিল।


অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের বিপক্ষে উল্টো মতামত দেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে। পাউবোর প্রতিবেদনে বলা হয়, মাননীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীসহ (তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী) বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ও প্রতিষ্ঠানের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা এই প্রকল্প অনুমোদন লাভ করেছে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক ওই প্রকল্পকে অবৈধ বলার আগে বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নেওয়া উচিত ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও