গণ-অভ্যুত্থানের ছয় মাস

যুগান্তর সাইফুল হক প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৩

ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস পার হতে চলল। এখনো পরিস্থিতি থিতু হয়েছে জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, বিব্রতকর বহুমুখী তৎপরতা, নানা ধরনের উত্তেজনা। সরকারকে কেন্দ্র করে জনপরিসরে হতাশার সুর, স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা। বাজারে স্বস্তি নেই, জানমালের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়নি। এক ধরনের সামাজিক নৈরাজ্যের বিস্তার ঘটছে। গণ-অভ্যুত্থানের অপার সম্ভাবনা কি এরই মধ্যে ফিকে হতে শুরু করেছে-এ প্রশ্নও ক্রমে বড় হয়ে উঠছে।


অথচ এক অভূতপূর্ব গণপ্রতিরোধ-গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট-২০২৪ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের পতন ঘটেছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-শ্রমিক-সাধারণ মানুষের আত্মদানে শেখ হাসিনা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের পালিয়ে যেতে হয়েছে। এদের পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী দুঃশাসনের পরাজয় ঘটেছে; গণ-অভ্যুত্থান দৃশ্যত বিজয়ী হয়েছে; গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে জনগণের বিপুল প্রত্যাশার চাপ নিয়ে এ অন্তর্বর্তী সরকারও তার ৬ মাস পার করছে।


এ মুহূর্তে বাংলাদেশ ও তার জনগণ এক অসাধারণ অনন্য সময় অতিক্রম করছে। পরিবর্তনের বিপুল কর্মযজ্ঞের নানা আয়োজন চারদিকে। এর অনেকটা স্বতঃস্ফূর্ততা ও এক পবিত্র আবেগে ঠাসা হলেও রূপান্তরের অনেক তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা ও প্রস্তাবনাও উঠে আসছে। চায়ের দোকানের আড্ডা থেকে সুসজ্জিত ড্রয়িংরুম, পত্রিকার পাতা থেকে টেলিভিশনের পর্দায় ফ্যাসিবাদ-উত্তর রাষ্ট্র-রাজনীতির সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে আসছে।



বস্তুত, ফ্যাসিবাদবিরোধী এ লড়াই ছিল ১৬ বছর ও ৩৬ দিনের। এ লড়াইয়ের একেবারে শেষ দিকের পুরোধা সৈনিক ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ বৈষম্যের ইস্যুকে বড় আকারে সামনে নিয়ে এসেছে। কিন্তু গত ১৮০ দিনে অনেক বিষয় জাতীয় মনোযোগ পেলেও রাষ্ট্র ও সমাজে বৈষম্য নির্মূলের ইস্যুটি সাইড লাইনেই ঝুলে আছে। জাতীয় পরিসরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। বিদ্যমান প্রকট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য রেখে কী ধরনের সংস্কার করা যাবে বা এ ধরনের উৎকট বৈষম্য রেখে আদৌ টেকসই কোনো সংস্কার করা যাবে কিনা, তা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে।


অর্থনীতির ঘনীভূত প্রকাশ যদি রাজনীতি হয়, তাহলে তো সেই দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতির পরিবর্তন বা সংস্কার ব্যতিরেকে কীভাবে রাষ্ট্র-রাজনীতির সংস্কার করা যাবে, তা বোধগম্য নয়। যে দুর্বৃত্ত অর্থনীতির রাজনীতিকরণ ঘটেছে এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে যার অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে, তার বদল ছাড়া সংস্কারের হাঁকডাক যে অনেকখানি উপরভাসা তা স্পষ্ট। অর্থনীতি আর রাজনীতির এ অশুভ নেক্সাস ভেঙে দিতে না পারলে আখেরে সংস্কারের কোনো তৎপরতা যে টেকসই হবে না, তা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ নেই।


কিন্তু সংস্কারের রাজনৈতিক উত্তেজনা এখনো প্রবল। সবাই সংস্কার নিয়ে কথা বলছেন। কেউই পিছিয়ে থাকছেন না। বিপ্লবী, অবিপ্লবী, প্রতিবিপ্লবী, প্রতিক্রিয়াশীল, কূপমণ্ডূক সবাই সংস্কারের বাজারে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তাদের হাজার হাজার প্রস্তাবনা। মনে করছেন, ভালো একটা সংবিধান লিখলে, রাষ্ট্র প্রশাসন, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক সংস্কার করলে বা নতুন নতুন বিধি ও আইন প্রণয়ন করলেই দেশ ও জনগণের কাঙ্ক্ষিত মুক্তি ঘটবে। কিন্তু এ তো সোনার পাথর বাটির মতো অবস্থা। এসব নিয়ে গভীর কোনো উপলব্ধি দেখা যাচ্ছে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও