“আওয়ামী লীগ নামে, আওয়ামী লীগ মতাদর্শে কোনো রাজনীতি করার সুযোগ নেই”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পোস্টার বয় নাহিদ ইসলাম। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, দৃঢ়তা হারাননি। আপোষ করেননি। নাহিদ ইসলাম বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন বর্তমান সময়ের আলোচিত প্রসঙ্গগুলো নিয়ে।
দ্য ডেইলি স্টার: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছয় মাস পার হলো। এই সময়কে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
নাহিদ ইসলাম: আমরা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছি। এক ধরণের বৈপ্লবিক পরিস্থিতি পার করছি। এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশে নজিরবিহীন। স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা ছিল, অনিশ্চয়তা ছিল। সেদিক থেকে বলতে গেলে গত ছয় মাসে পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে, তবে গতিটা ধীর হচ্ছে। মানুষের প্রত্যাশা ছিল হয়তো আরও দ্রুত কিছু করতে পারবো। সর্বাত্মক চেষ্টার পরও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সেটা পারিনি।
ডেইলি স্টার: এই সময়ের মূল চ্যালেঞ্জগুলো কী ছিল?
নাহিদ ইসলাম: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া, জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করার চ্যালেঞ্জ তো আছেই। দেখতেই পারছেন, সরকারের কলেবর ছোট হলেও কাজের পরিধি অনেক বেশি। জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে কাজ এগিয়ে নিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে সংস্কার কমিশনগুলো প্রতিবেদন দিচ্ছে। জুলাই গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমি মনে করি, অগ্রগতি হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি আরও বেশি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে আরও বেশি গতিতে কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
ডেইলি স্টার: এই সময়ের মধ্যে যেসব কাজ করতে চেয়েছিলেন, তার মধ্যে কী কী করতে পারেননি?
নাহিদ ইসলাম: কিছু আক্ষেপের জায়গা রয়েছে, এটা ঠিক। গত ছয় মাসে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রত্যাশিত মাত্রায় উন্নতি করতে পারিনি। তবে পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় অর্জন হলো, অনিশ্চয়তা থেকে স্থিতিশীলতার দিকে আসতে পারা।
ডেইলি স্টার: দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিকে কেমন পরিস্থিতি ছিল? অর্থাৎ সরকারের ভেতর থেকে কী দেখেছেন?
নাহিদ ইসলাম: প্রথম দিকে সরকার থাকবে কি থাকবে না, প্রতিবিপ্লব হবে কি না—এই ধরনের আলোচনা ছিল। দেশের ভেতরে ষড়যন্ত্র হচ্ছিল, দেশের বাইরে ভূরাজনৈতিক নানা চাপ ছিল। আমাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচারণা চালানো হয়েছে। দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নিয়ে টেনশন তৈরি করা হয়েছিল। তবে, এখন এসব টেনশন মোটামুটি দূর হয়েছে। আমি মনে করি, এটা বড় ধরনের অগ্রগতি।