স্বৈরশাসনের পুনরুত্থান : প্রতিরোধে করণীয়
ফ্যাসিস্ট সরকারের উত্থানের পেছনে বেশকিছু উপাদান সহায়ক ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করে থাকে। সেসব উপাদানকে চিহ্নিত করতে হবে। এসব উপাদান যাতে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় প্রভাবশালী ফ্যাক্টর হিসাবে আবির্ভূত হতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
১. রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্ম বিভাজন করে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা যেতে পারে। সংসদ নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতির নির্বাচন একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে পারে। কোনো দলীয় প্রতীকে কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে যে কোনো যোগ্য ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতির হাতে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, ভূমি, নৌ-পরিবহণ, প্রতিরক্ষা, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং আইন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব অর্পণ করা যেতে পারে।
২. রাষ্ট্রের সামগ্রিক প্রশাসনযন্ত্রকে ক্ষমতাসীন দলের দলীয়করণের রাহুগ্রাস থেকে শতভাগ মুক্ত করতে হবে। স্বৈরতন্ত্র উত্থানে সিভিল ও পুলিশ প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা যদি চাই পরবর্তী নির্বাচিত সরকারগুলো হবে স্বৈরাচারমুক্ত, তাহলে এমন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে, যাতে নির্বাচিত দলীয় সরকার কোনোক্রমেই প্রশাসনযন্ত্রের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে। প্রশাসনযন্ত্রকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতনভাতা ক্ষমতাসীন দলের দলীয় তহবিল থেকে বহন করা হয় না। রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে যাদের বেতনভাতা বহন করা হয়ে থাকে তাদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের দলীয় প্রভাব বিস্তার করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। পরবর্তী নির্বাচনে যেসব দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাদের সবার কাছ থেকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে যে, ক্ষমতাসীন হয়ে তারা সরকারি প্রশাসনযন্ত্রের দলীয়করণ করবেন না। জনগণের কাছে সেটা যেন বিশ্বাসযোগ্য হয়, সেরূপ ব্যবস্থা তাদের করতে হবে। তাদের আচরণে সেটার প্রতিফলন থাকতে হবে।