ভ্যাট বৃদ্ধি জনদুর্ভোগ বাড়াবে

জাগো নিউজ ২৪ ইয়াহিয়া নয়ন প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১৯

গত তিন বছর ধরেই মানুষ তার আয় দিয়ে ব্যয় সামলাতে পারছে না। এর মধ্যে সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে নিত্যপণ্যের দাম আরেক দফা বেড়ে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বছরের পর বছর ধরে প্রগ্রেসিভ করের কথা বলা হলেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তানুযায়ী ১২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে গিয়েই কি তবে রিগ্রেসিভ করের পথেই হাঁটলো সরকার?


জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরে ৪ দশমিক ৮০ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৩ শতাংশই আদায় হবে পরোক্ষ কর যেমন ভ্যাট ও বিভিন্ন ধরনের আমদানি শুল্ক থেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাওয়া অনুযায়ী বাড়তি ১২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা আদায়ের পুরো চাপটাই দেওয়া হয়েছে পরোক্ষ করের ওপর, যা প্রগ্রেসিভ করব্যবস্থার মূলনীতির পরিপন্থি। কারণ, পরোক্ষ করের মাধ্যমে এই বাড়তি টাকা আদায়ের ফলে পরোক্ষ করের অংশ আরও বাড়বে। অন্যদিকে, আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে প্রগ্রেসিভ করব্যবস্থা। সবধরনের নিত্যপণ্য এবং সেবাখাতের খরচ বাড়বে। জনজীবনে নেমে আসবে দুর্ভোগ।


আমাদের দেশে দাম বাড়ার আওয়াজ পেলেই সেই পণ্যের মজুদ শুরু হয়ে যায়। গত দুই তিন দিনে যারা বাজারে গেছেন তাদের নিশ্চয়ই অভিজ্ঞতা হয়েছে। চালের সাথে বেড়েছে তেলের দাম। সিগারেটের স্টলে সিগারেট মিলছেনা। ওষুধের ফার্মেসিতে ওষুধ মিলছে না। বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ নেই। সব মিলিয়ে সেই পুরাতন নাটক চলছে। আর ক্রেতার নাভিশ্বাস-দুর্ভোগ বাড়ছে।



মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে কি আদৌও উন্নয়ন সম্ভব। দেশের উন্নয়ন মানে দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন। সরকারের সকল কাজের লক্ষ্য হওয়া উচিত কীভাবে দেশের উন্নতি হবে, মানুষের জীবনমানের উন্নতি হবে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রায়শই এর ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলারের দাম বাড়া, ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় করের বোঝা বাড়ানো শুধু সাধারণ জনগণের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে, তা নয়, এটি ব্যবসা-বাণিজ্য এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগেও বাধা সৃষ্টি করবে। গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের অর্থনীতি প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনগণের জন্য জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। সেই দুর্ভোগ আরো বাড়বে।


সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, গত তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে কর বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দেবে। চাপ কতটা বেড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একসময় আমদানিতে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ৮৬ টাকা। এর ওপর ছিল ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট। আর এখন ডলারের মূল্য ১২০ টাকা। এর ওপর দিতে হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। তাহলে বুঝুন চাপ কেমন বেড়েছে, কতটা বেড়েছে। তার মতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে থাকা মানুষের ওপর এই সময়ে নতুন করে কর বাড়ানো ঠিক হয়নি। স্বল্প-আয়ের মানুষের খরচ আরও বাড়বে। পাশাপাশি ছোট পুঁজির ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ আরও বাড়াবে।


আমরা সাধারণ মানুষ এটাই বুঝছি যে, এই চাপের বড় অংশই যাবে নিম্ন-আয় ও সাধারণ ভোক্তাদের ঘাড়ে। অর্থবছরের মাঝে এসে এভাবে ঢালাওভাবে কর বাড়ানো মোটেই উচিত হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর কারণে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। এখন দেখার বিষয়, আসলেই তেমনটি হয় কিনা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও