বিশ্ব ইজতেমার ভবিষ্যৎ কী?

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. ফখরুল ইসলাম প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৫৩

তুরাগ নদীর তীরে গত ১৭ ডিসেম্বর ভোরবেলা তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে গেল। দীর্ঘদিন যাবত তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিভেদ ও দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। একপক্ষ আরেক পক্ষকে বাতিল ও নিজেরা হক হিসেবে মনে করা থেকে নানা বক্তব্যের জেরে এই দ্বন্দ্ব চরমে রূপ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত নতুন কিছু অনুষঙ্গ। দেশের বর্তমান পরিবর্তিত আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক অনেকটা শিথিল থাকা অবস্থায় এবং সেই দেশের ধর্মীয় নেতার সমর্থনকারী হওয়ার অজুহাতে এই ঘটনাটি একটি ব্যাপক জল্পনা কল্পনার অবকাশ তৈরি করেছে।


গেল ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত রাত ৩টার দিকে ভারতীয় মাওলানা সাদপন্থিরা টঙ্গির তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা ধরে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকে। তখন ময়দানে বহু মুসুল্লি চটের সামিয়ানার নিচে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোর চারটার দিকে এ সময় ময়দানের ভেতর থেকে বাংলাদেশি মাওলানা যোবায়েরপন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবে মাওলানা সাদপন্থিরাও পাল্টা হামলা চালায়। একপর্যায়ে মাওলানা সাদপন্থিরা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। দুই গ্রুপের এই সংঘর্ষে চারজন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।


অন্তর্বর্তী সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবি বিশ্ব ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর মাওলানা সাদ ও মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং জোড় ইজতেমা বন্ধ করে সবাইকে মাঠ ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। টঙ্গি ও আশেপাশের এলাকায় সভা, মিছিল, জমায়েত করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। তুরাগ তীরে গভীর রাতে রক্তের খেলা নিয়ে কেন এমন নির্মমতা শুরু হলো তা বাংলাদেশসহ বিশ্বের আপামর মুসলমান ও শান্তিকামী সবাইকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।



তাবলীগ জামাতকে বলা হয় সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক একটি ধর্মীয় সংগঠন। সেখানে প্রতিবছর ইজতেমার সময় সব রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী মুসলিমগণ যোগ দিয়ে থাকেন। পবিত্র হজের পর তুরাগের তাবলিগ সম্মেলন মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বাইরে তাবলিগের শিক্ষা ও আদর্শ প্রচারিত হওয়ায় এর একটি বৈশ্বিক পরিচিতি রয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের প্রতিটি কর্নার থেকে ৭০-৮০টি দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান টঙ্গির তীরে আসেন ইসলামের শান্তির বাণী শুনে নিজেকে সুশীতল করে সেই বাণী পুনরায় সারা বিশ্বের মানুষের মাঝে দ্বিনি দাওয়াত হিসেবে প্রচারের জন্য। বিগত কয়েক দশকে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যমে তাবলিগের অনুসারীর সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেছে আরো অনেক বেশি।


তাবলিগ পরিচালিত হয় মুরুব্বিভিত্তিক একটি ধর্মীয় অনুশাসনের মাধ্যমে। যেখানে মুরুব্বির আদেশ, ইসলামের বয়ানকে বেশ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে গ্রহণ করে কঠোর ধর্মীয় নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি চালিয়ে মুসল্লিরা নিজেকে সংশোধন করে নেন। ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামের গভীর চর্চার সাথে পরিবার ও সমাজ জীবনে এর ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটতে দেখা যায়। এর আন্তর্জাতিক চরিত্রও এখন প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে। সাথে এত বড় মুসলিম জমায়েতকে পরিচালনা করার সক্ষমতা ও সামর্থ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদাও বেড়ে গেছে।


তবে দিন বদলেছে। ইসলামের নামে অসংখ্য দল, উপদল সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় কিছু উগ্রপন্থি লোকেরা ইসলামের নামে নানা সংগঠন খুলে বসেছেন। এতে এর সমালোচনা করতে দেখা যায় বিভিন্ন ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে। এত কিছুর পরেও তাবলিগকে বিতর্কিত হতে দেখা যায়নি। কারণ, কেউ তাবলিগের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করে কথা বললেও সেখানে পাল্টা বা প্রতিবাদ না জানিয়ে বরং মুরুব্বিদের সাথে পরামর্শ করে অত্যন্ত আদবের সাথে বিষয়টির সমাধান করার ব্যাপারে জোর দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এর উপর প্রকাশনাও খুব হাতেগোনা। তাই তাবলিগি বিষয় নিয়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-কলহ হওয়ার নজির খুব কম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও