ইচ্ছাকৃত খেলাপি আইনের দ্বিধা
‘আমার যেমন বেণী তেমনি রবে
চুল ভিজাব না।
জলে নামবো জল ছড়াব
জল তো ছোঁব না।’
বহু গড়িমসির পর ২০২৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইনের যে সংশোধনী আনা হয়েছে, সেখানে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিষয়ে অনিচ্ছুকভাবে যে অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছে, সেটি পড়লে ওপরে উদ্ধৃত প্রচলিত একটা বাংলা লোকগীতির কথা মনে পড়ে যায়। বহু কাঙ্ক্ষিত এ আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে, চার বছরের দীর্ঘসূত্রতার পর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিষয়টি আইনে পরিণত করা হয়। আইনের সংশোধনী আনার জন্য চার বছর সময় লেগে যাওয়ার মূল কারণ ছিল বিশেষ মহলের অনিচ্ছার প্রতি সরকারি সমর্থন। এ বিশেষ মহল বলতে আমরা বুঝব অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নেতারা, যারা মূলত সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর হস্তক্ষেপ করে নিজেদের স্বার্থবিরোধী যেকোনো সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারতেন। আমরা দেখেছি, বিগত সরকারের আইনপ্রণেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের অধিকাংশই ছিলেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। সুতরাং তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, এমন আইন প্রণয়নে তাদের ছিল প্রবল অনীহা। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি আইন তৈরি করার পেছনেও কাজ করেছে এমন মনোভাব।