রংপুরের ক্যানসার রোগীরা রেডিওথেরাপি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত থাকবেন কেন

প্রথম আলো রতীন্দ্র নাথ মণ্ডল প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:২৩

যেন বঞ্চনার আরেক নাম রংপুর বিভাগ। দরিদ্র অঞ্চল বলে খ্যাত রংপুরের জন্য প্রতিবছর বাজেটে অন্যান্য খাতের সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানানো হলেও বাস্তবে ঘটে ভিন্নতা। গত অর্থবছরের বাজেটে রংপুর বিভাগের অর্থনৈতিক অঞ্চলে কোনো বরাদ্দ রাখা তো হয়ইনি, উল্টো সিটি করপোরেশনের বাজেট ছিল শূন্য।


স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে এ অঞ্চল বারবার পিছিয়ে থাকছে। বৃহত্তর রংপুর বিভাগের আট জেলার ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য একমাত্র ভরসাস্থল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের রেডিওথেরাপি মেশিন ১০ বছর ধরে নষ্ট থাকায় রোগীরা রেডিওথেরাপি চিকিৎসা না পেয়ে অকালে মারা যাচ্ছেন।


রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক গবেষণায় দেখা যায়, রংপুরে বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা থেকে ক্যানসারের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের রোগী ১৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ওভারি বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের রোগী ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ, গ্রুপ হিসেবে সবচেয়ে বেশি খাদ্যনালির ক্যানসারের রোগী ৩১ দশমিক ৯৪ শতাংশ ও শ্বাসতন্ত্রের ক্যানসারের রোগী ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ।


২০১৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। গত ১০ বছরে মেশিনটি চালু করার কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এ কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা রেডিওথেরাপি চিকিৎসা পাচ্ছেন না।



রেডিওথেরাপি মেশিন নষ্ট থাকায় কীভাবে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছেন, এর বাস্তব প্রমাণ রোকেয়া বেগম। গত বছর ৬০ বছর বয়সী রোকেয়া বেগম নীলফামারী থেকে জরায়ুমুখ ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগে আসেন। সেখানকার ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে ও যাবতীয় রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানান, তাঁর জরায়ুমুখের ক্যানসার তৃতীয় পর্যায়ে চলে গেছে।


এ অবস্থায় তাঁকে দ্রুত রেডিওথেরাপি দিতে হবে। রোকেয়া বেগমের স্বামী দ্রুত রেডিওথেরাপি শুরু করার অনুরোধ জানান। কিন্তু রেডিওথেরাপি মেশিন নষ্ট থাকায় রংপুরে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। রেডিওথেরাপি নেওয়ার জন্য রোকেয়া বেগমকে ঢাকার জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রেফার করা হয়।


এরপর রোকেয়া বেগমের স্বামী এলাকার লোকজনের কাছে টাকা ধার করে ঢাকায় যান। সেখানে ভিড় বেশি থাকায় রেডিওথেরাপি দেওয়ার জন্য চার মাস পর সিরিয়াল দেওয়া হয়। রোকেয়া বেগমের স্বামী চিকিৎসকের কাছে জানতে চান, অন্য কোনো চিকিৎসা বা অন্য কোনো জায়গায় রেডিওথেরাপি দেওয়া যায় কি না। চিকিৎসক জানান, বেসরকারি পর্যায়ে দ্রুত রেডিওথেরাপি দেওয়া যায়, কিন্তু সেখানে একবার রেডিওথেরাপি দিতে লাগে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। রোকেয়া বেগমের স্বামীর পক্ষে এত টাকার ব্যয়ভার বহন করা অসম্ভব। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি নীলফামারীতে ফিরে যান, অপেক্ষায় থাকেন সিরিয়ালের। এর মধ্যে রোকেয়া বেগম আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।


চার মাস অপেক্ষার পর সিরিয়াল আসে রেডিওথেরাপির। রেডিওথেরাপির জন্য রোকেয়া বেগম তখন উপযুক্ত কি না এবং ক্যানসারের পর্যায় নির্ণয় করার জন্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসকেরা। পরীক্ষায় দেখা যায়, এই চার মাসে রোকেয়া বেগমের ক্যানসার তৃতীয় থেকে চতুর্থ পর্যায়ে চলে গেছে এবং এ পর্যায়ে রেডিওথেরাপি দেওয়া যায় না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও