অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেড় মাস: ভবিষ্যৎ কোন পথে?

বাংলা ট্রিবিউন ড. শ্যামল দাস প্রকাশিত: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:২৪

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আমার জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি হলো এর রাজনৈতিক দর্শন। একটু পেছন থেকে শুরু করা যাক। আগস্টের ৫ তারিখ শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পরপর বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যগুলো ভাঙা হলো। বঙ্গবন্ধু জাদুঘর অর্থাৎ ৩২ নম্বরের শেখ মুজিবের বাসভবন লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হলো। খুব সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম নেতার ভাস্কর্য অসম্মানের এমন নজির আর কোথাও পাওয়া যাবে না।


কেন, শেখ মুজিব কেন? শেখ মুজিব তো এই পৃথিবীতে নেই গত প্রায় পঞ্চাশ বছর। মৃত মুজিব এই গোষ্ঠীর কাছে জীবিত মুজিবের চেয়ে শক্তিশালী বেশি তাহলে। শুধু শেখ মুজিব তো নন, দেখা গেলো আমাদের স্বাধীনতার ভাস্কর্যগুলোও ভাঙ্গা হলো বিভিন্ন জায়গায়, এমনকি মুজিবনগরে। কিন্তু এসব কাজের সরাসরি সমালোচনা না করে বরং নিরব থাকা হলো। অনেকে বললেন, এর জন্য তার কন্যাই দায়ী। এটিকে যেন বৈধতা দেওয়া হলো।


উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্যও এর বিরুদ্ধে কথা বললেন না। একটি পুলিশি মামলা বা লোক দেখানো তদন্ত করারও প্রয়োজন মনে করলেন না। বলা হলো, কন্যা শেখ হাসিনার কাজের ফলাফল বঙ্গবন্ধুকে বহন করতে হচ্ছে। তাহলে স্বাধীনতার ভাস্কর্যগুলো কী দোষ করলো? এই জাতীয় মনোভাব বঙ্গবন্ধুর অসম্মান এবং স্বাধীনতার ভাস্কর্য ভাঙ্গাকে কি বরং উৎসাহিত করলো না?


এরপরই এই সরকারের জন্য এসিড টেস্টের দিন ১৫ আগস্ট এলো। সরকার অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শোক দিবসের ছুটি বাতিল করলো। এরপর যারা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে শোক প্রকাশ করতে গেলেন তাদের ওপর হলো নিপীড়ন। এছাড়া ১৫ আগস্ট রাতে এই ভয়াবহ দিনটিকে উদযাপন করা হলো লুঙ্গি ডান্স দিয়ে। একজন সমন্বয়ক বললেন, এই কাজটি “বিপ্লবের” স্পিরিটের সাথে যায় না। এ পর্যন্তই।



প্রধান উপদেষ্টা কিছুই বললেন না; এই মানুষটির কাছে প্রত্যাশা অনেক ছিল, কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেওয়া স্বাধীনতার ফসল এই বাংলাদেশের একজন নোবেল লরিয়েট; আমার প্রত্যাশা পূর্ণ হলো না।


সম্প্রতি ড. ইউনূস ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার ভাস্কর্যগুলোর অবমাননা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, ‘আপনি পুরনো দিনের কথাবার্তা বলছেন। এরমধ্যে একটা গণ-অভ্যুত্থান হয়ে গেছে আপনার মনে হয় স্বরণে নেই। আপনি এমনভাবে কথা বলছেন, যেন এসব ঘটনা ঘটেই নাই। কাজেই নতুন ভঙ্গিতে যা হচ্ছে, এটা দেখতে হবে তো। কত ছেলে প্রাণ দিল সেটা নিয়ে আপনার কোনও প্রশ্ন নেই। কেন প্রাণ দিল। কাজেই ওগুলো আসুক। তারপরে… প্রথম স্বীকার করতে হবে যে তারা বলেছে, ছাত্ররা বলেছে যে আমরা রিসেট বাটন পুশ করেছি। এভরিথিং ইজ গন।’


যাইহোক, আমি অবাক হয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এমন আক্রমণগুলোর কী কারণ। প্রধান উপদেষ্টা বা অন্য উপদেষ্টারা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ভাস্কর্য ধ্বংসকারীদের একটি ন্যূনতম আইনি প্রক্রিয়ায় বিচারের প্রয়োজন মনে করলেন না। আমার কাছে এই সরকারের রাজনৈতিক দর্শনটি অনেকটাই অস্পষ্ট মনে হচ্ছে। তাদের নির্লিপ্ততা এই অস্পষ্টতা তৈরি করেছে।


মনে রাখা দরকার, শেখ মুজিব এখনও সাংবিধানিকভাবে এদেশের জাতির পিতা এবং দেশটির স্বাধীনতার ঘোষণা এই সংবিধানের অংশ। এই সরকার কিন্তু শপথ নিয়েছে সংবিধান রক্ষার; কাজেই যখনই বঙ্গবন্ধু ও আমাদের স্বাধীনতাকে অপমান করা হয় সেটি কিন্তু এক ধরনের অপরাধ অবশ্যই। এটির ব্যাপারে চুপ থাকাটা অনেকটাই এসব কাজে শাসকদের সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও