দুর্গাপূজা ঘিরে উৎকণ্ঠা এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন

বিডি নিউজ ২৪ চিররঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৫২

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা সমাগত। কিন্তু এই উৎসবকে ঘিরে তেমন কোনো উৎসাহ নেই। বরং পূজা নিয়ে শঙ্কা ও ভয় বাড়ছে। দেশে এখন উগ্রবাদীদের জয়জয়কার। তারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ নিয়ে মাঠে নেমেছে। কখনো চাঁদা দাবি করছে। কখনো নতুন নতুন ফতোয়া জারি করছে। মাত্র কয়েকদিন আগে একটি ধর্মীয় সংগঠন প্রতিমার পূজা করা যাবে না এবং বিসর্জন দেওয়া যাবে না বলে ফতোয়া দিয়েছে। সেই সঙ্গে দুর্গাপূজার সময় কোনও ছুটি দেওয়া যাবে না বলেও দাবি তুলেছে। ভারত যেহেতু বাংলাদেশের ‘জাতীয় শত্রু’ তাই এদেশের হিন্দু নাগরিকদেরও ভারতবিরোধী হতে হবে বলেও দাবি করেছে তারা। এই কারণে, ভারত-বিরোধী ব্যানার এবং স্লোগান মন্দিরে রাখা উচিত বলেও দাবি তাদের।


যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শান্তিতে পূজা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে করার যায় সেই জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও জানানো হয়েছে। তারপরও ভয় কাটছে না।


আমাদের দেশের রাজনীতিতে সংখ্যালঘু নির্যাতন একটা স্থায়ী ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অথচ জুলাই অভ্যুত্থান আশা দেখাচ্ছিল, অন্তত অভ্যুত্থানের সময় এবং অব্যবহিত পরে দেশজুড়ে ভাসানীর ধর্ম আর দেশ না মেলাবার বাণী আঁকার মতো বৈষম্যবিরোধী অজস্র গ্রাফিতি করা হয়েছিল। যারা এই আশার বাণী উৎকীর্ণ করছিল দেয়ালজুড়ে তারা এখন আর নীতিনির্ধারণের কোথাও নেই। অন্য সব রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মতোই পরিস্থিতি হয়েছে আবার।


যখনই দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়, তখনই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। এদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও নির্বাচনের সঙ্গে এই সংখ্যালঘু ইস্যুটির একটি সংযোগ তৈরি হয়েছে। গত চার দশকের রাজনীতিতে দেখা গেছে, প্রতিটি নির্বাচনের আগে-পরে কিংবা কোনো দল ক্ষমতাচ্যুত হবার পরে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ সামনে এসেছে। গত চার দশক ধরে এই ধারা চলছে।



এর মধ্যে একটি ঘটনা ছিল প্রতিবেশী দেশে সংঘটিত ঘটনার প্রতিক্রিয়া। মুক্তিযুদ্ধোত্তরকালে হিন্দুদের ওপর প্রথম বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯২ সালে, ভারতে বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেবার সময়। তখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় ছিল। এরপর হিন্দুদের ওপর বড় আকারে হামলার ঘটনা ঘটে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হবার পরে। নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করার পরপরই দেশের বেশ কিছু জেলায় হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়। যদিও তখন ক্ষমতায় ছিল বিচারপতি লতিফুর রহমানে নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশের দিন থেকে শুরু করে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণের মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণ করার পরেও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছিল। এসবের পেছনে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল।


এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ আসে গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর।


হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য মতে, ৪ অগাস্ট থেকে ২০ অগাস্ট পর্যন্ত ২ হাজার ১০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৯ জনকে হত্যা, ৪ জনকে ধর্ষণ/গণধর্ষণ, ৬৯টি উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ; ৯১৫টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ; ৯৫৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ; বসতবাড়ি দখল একটি; ৩৮টি শারীরিক নির্যাতন এবং ২১টি জমি/ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের ঘটনা ঘটেছে।


যদিও এসব হামলা-নির্যাতনের ঘটনাকে দেশের ক্ষমতাসীন মহল স্বীকার করেনি। অনেকে এগুলোকে, গুজব, অপপ্রচার নাটক বলেও উড়িয়ে দেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও