সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি নিয়ে কী করব

প্রথম আলো জিয়াউদ্দিন চৌধুরী প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:০৮

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান এবং আরও কিছু জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেছে। কমিশনগুলোর নেতৃত্বে আছেন দেশের অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা। সংবিধান সংস্কার সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হবে এখানে।


বাংলাদেশের সংবিধান, যা ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গৃহীত হয়। তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি এ সংবিধান তৈরি করেন প্রায় নয় মাস কাজের পর। সংবিধানের চারটি মৌলিক নীতি ছিল—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার, এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।


এখানে উল্লেখযোগ্য যে জাতীয়তাবাদ এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার—এ দুটি মূলমন্ত্র বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অনুপ্রাণিত করে এবং ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার এ মৌলিক নীতিগুলোকে সামনে নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার শপথ নেয়। এ কারণে অনেকে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতিগুলোকে আওয়ামী লীগের নীতি বলে প্রচার করে। কেউ কেউ বাংলাদেশের সংবিধানকে ভারতের সংবিধানের অনুকরণ বলেও মিথ্যা আখ্যান দেন।


বস্তুত ভারতের সংবিধানে সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতা গৃহীত হয় ১৯৭৬ সালে সংশোধনীর মাধ্যমে। বাংলাদেশের সংবিধান রচয়িতারা পৃথিবীর বহু উন্নত দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করে এবং সেসব দেশের সংবিধানের বিশেষ বিশেষ ধারা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করেন।


বাংলাদেশ ১৯৭২-এর সংবিধানকে কতটা অনুসরণ করেছে? প্রথমেই আসে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা। গণতন্ত্রের প্রথম তিনটি নীতি হলো ব্যক্তি এবং বাক্‌স্বাধীনতা, সর্বজনীন ভোটাধিকার, এবং নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নিয়োগ। দুঃখের বিষয় এই তিনটিকেই নির্বাসন দিয়ে স্বাধীনতার মাত্র তিন বছর পর সংবিধান পরিবর্তন করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের জায়গায় দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। এর ছয় মাসের মাথায় এক রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে এ ব্যবস্থার অবসান হয়। পরের দুই দশক দেশে আর প্রকৃত গণতন্ত্র ফেরত আসেনি।



১৯৯১ সালে গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র ফিরে আসে। কিন্তু তা প্রায় হোঁচট খেয়ে চলে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক বৈরিতা আর হিংস্রতার কারণে। নির্বাচনের প্রহসন আর ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যবহারে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের সাংবিধানিক মূলনীতি ভূলুণ্ঠিত হয়, বিশেষ করে গত পনেরো বছর।


জাতীয়তাবাদ এর মধ্যে বেঁচে আছে। তবে এর সংজ্ঞা ছিল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম। দেশের জন্মলগ্নে জাতীয়তাবাদ ছিল বাঙালি চেতনা। পরে এল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। বাঙালি বা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ যে নামেই ডাকা হোক না কেন এ পর্যন্ত জাতীয়তাবাদ কথাটি অক্ষত আছে আমাদের সংবিধানে।


তৃতীয় স্তম্ভ সমাজতন্ত্র নিয়ে আমাদের সংবিধানে বেশি দোলাচল হয়নি কোনো আমলে। এর কারণ, রাজনৈতিক দলগুলো সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি। বোধ করি কোনো দলই এ বিষয়ে বেশি মাথা ঘামায়নি, তাই কোনো উচ্চবাচ্য হয়নি, এবং এখনো হবে বলে মনে হয় না।


এই লেখাটির বিষয় বাংলাদেশের সংবিধানের চার মূলনীতিকে নিয়ে নয়। শুধু ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে। কারণ, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ভাবতে হচ্ছে, আমাদের সংবিধানে সব ধর্মাবলম্বীর সম-অবস্থান ও সম-অধিকার থাকা সত্ত্বেও এ উদ্বেগ কেন হয়?
বঙ্গবন্ধু এক ভাষণে বলেছিলেন, সেক্যুলারিজম হচ্ছে—রাষ্ট্রে সব ধর্মের সম-অবস্থান। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার এক যুগ পরে এক সংশোধনীর মাধ্যমে জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে নিয়ে আসে। তখনো সেক্যুলারিজম বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতির অংশ হিসেবে থাকে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ হাসিনাও ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম রেখে কল্পিত সেক্যুলারিজমের ধোঁয়াশা বজায় রাখেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও