নতুন সরকারের অগ্রাধিকার হোক দুর্নীতি দমন

ঢাকা পোষ্ট নীলাঞ্জন কুমার সাহা প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৩

সাধারণ অর্থনৈতিক তত্ত্ব বলছে—দুর্নীতি বিনিয়োগের গতি কমিয়ে দিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস করে ও পণ্য মূল্যকে প্রভাবিত করে। ফলে, অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় এবং সর্বোপরি দুর্নীতি সুশাসনকেও বাধাগ্রস্ত করে। আর, সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর একটি দেশের সুশাসন নির্ভর করে। তবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন, মূল্যস্ফীতি কমানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব। কিন্তু, আমাদের অর্থনীতিতে তা কখনোই দৃশ্যমান হয়নি।


অর্থনীতিতে উপরোক্ত ইতিবাচক সূচকগুলো দৃশ্যমান না হওয়ার অর্থই হচ্ছে আমরা সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুশাসনের অভাবে দেশ অর্থনীতির বিদ্যমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। কেননা, আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উভয় ক্ষেত্রেই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরে রাখতে পারিনি।


যার ফলে, আমরা কোভিড-১৯ পরবর্তী কয়েকটা বছর যাবৎ অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। যেমন মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রা পাচার, বৈদেশিক মুদ্রা মজুত পতন, রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস, আন্তর্জাতিক লেনদেনে অস্থিতিশীলতা, ক্রেডিট রেটিং-এ অবনমন, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, দেশি-বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ ইত্যাদি।



একটি উদীয়মান অর্থনীতিতে বিভিন্ন কারণে এ ধরনের নেতিবাচক সূচকের উপস্থিতি স্বল্পমেয়াদে থাকতেই পারে। তবে সরকারের দূরদৃষ্টি, সঠিক কর্মপন্থা, পরিচালন দক্ষতা, সম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জনগণের সম্পৃক্ততায় তা দূর করাও সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এগুলোর অবস্থান একটি সবল অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।


বর্তমান পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, এটা স্বীকার করতে বাধা নেই যে, পূর্বের সরকারের সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির পরেও আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল বেশ ঈর্ষান্বিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, দেশের প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ২০২১ সালে ৬.৯৪ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৭.১০ শতাংশ। কিন্তু এরপর থেকেই প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি চলে আসে যা ২০২৩ সালে দাঁড়ায় ৫.৭৮ শতাংশ।


বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমত কোভিড-১৯ মহামারি; দ্বিতীয়ত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও তৎপরবর্তী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান যুদ্ধের ফলে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির পর আমদানিতে ডলারের দাম বাড়ে। এর ফলে আমদানি মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং রপ্তানি মূল্য মন্থর থাকে।


ফলশ্রুতিতে, অর্থপ্রদানের ভারসাম্যের অবনতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রা মজুত ব্যাপক হ্রাস পায় ও টাকার অবমূল্যায়ন ঘটে। দীর্ঘদিন ১১০ টাকায় থাকা ডলারের অফিশিয়াল রেট ২০২৪ সালের মে মাসে একদিনে ১১৭ টাকায় উন্নীত হয় এবং পরবর্তীতে আরও বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে মানি এক্সচেঞ্জররা খোলা বাজারে ১২৫ টাকায় ডলার বিক্রি করছে। এর পেছনে বৈশ্বিক আর্থিক অস্থিরতা প্রধানত দায়ী থাকলেও আমাদের দুর্নীতিও কোনো অংশে কম দায়ী নয়।


আমাদের দেশে দুর্নীতির অর্থ মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী বা ব্যক্তির কাছে পুঞ্জীভূত হচ্ছে। আর, পুঞ্জিভূত অর্থই বৈদেশিক মুদ্রায় অবৈধ উপায়ে পাচার হচ্ছে বিদেশে এবং বিভিন্ন উপায়ে অর্থ পাচার চলছে। ফলশ্রুতিতে, বৈদেশিক মুদ্রা মজুতে টান পড়েছে এবং আমাদের ক্রয় ক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে। ফলে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে হু হু করে দিনের পর দিন। আইএমএফ থেকে শর্তসাপেক্ষে ঋণ নিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা মজুদের হ্রাস ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।


ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের দেশে পণ্য সামগ্রীর দামও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। বছরজুড়েই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে ছুঁইছুঁই করছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৯.৭২ শতাংশে ও খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ১০.৪২ শতাংশে দেখানো হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও