রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় যা প্রয়োজন

যুগান্তর এবিএম রেজাউল করিম ফকির প্রকাশিত: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৪৪

রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বিষয় আপাতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, দেশে সরকারব্যবস্থা ও নির্বাচন পদ্ধতি সঠিক আছে; তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সঠিক নয় এবং এ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করতে প্রয়োজন নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনের মুখে সামরিক সরকার পদত্যাগ করলে নির্বাচন পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার বাতিল করে দেয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকারব্যবস্থা এখনো চালু রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকারব্যবস্থা চালু করার উদ্দেশ্য ছিল সংসদীয় সরকারব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকারব্যবস্থায় প্রকৃত সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ঘটেনি। অন্যদিকে, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রচলনের উদ্দেশ্য ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা। কিন্তু ১৯৯০ সাল থেকে অনুষ্ঠিত সব জাতীয় নির্বাচন সমাপনের পর পরাজিত রাজনৈতিক দলগুলো সর্বদা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তা সত্ত্বেও বিরোধী দলগুলো নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন পুনঃপ্রবর্তনের রাজনৈতিক প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে হয়তো আপাতভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সচল হবে, কিন্তু টেকসই রাজনৈতিক সমাধান ঘটবে না। কারণ, এ ব্যবস্থাটির মাধ্যমে মূলত ‘সব অথবা কিছুই নয়’ ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব। এর প্রধান কারণ হলো, নির্বাচনকালীন সরকারের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ ও প্রতিষ্ঠান সচল থাকে। তাছাড়া সাধারণ ভোটারদের নির্বাচনি আচরণকে অর্থ, অস্ত্র ও ক্ষমতা দ্বারা বিভ্রান্ত করার মতো ব্যবস্থাগুলো সচল থাকে। অধিকন্তু নির্বাচন প্রকৌশলের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা সচল থাকে। এভাবে নির্বাচনি আচরণ ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার মতো যে ব্যবস্থাগুলো বিদ্যমান রয়েছে, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত স্তরে বিন্যস্ত অনেকগুলো স্বার্থান্বেষী মহল। নির্বাচনকালীন এসব স্বার্থান্বেষী মহলকে যারা কাজে লাগাতে পারে, তাদেরকেই মূলত রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়ে থাকে। উল্লেখ্য, এসব স্বার্থান্বেষী মহলকে নির্বাচনে কাজে লাগাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু এত টাকা ব্যয় করার মতো অর্থবিত্ত সাধারণ রাজনৈতিক নেতাদের থাকে না, যে কারণে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে সফলতা নিশ্চিত করতে বিত্তশালী প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে।


উপরোল্লেখিত কারণে বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোতে আদর্শশূন্য বিত্তশালীদের প্রাধান্য বিস্তৃত হয়েছে। রাজনীতি থেকে ক্রমেই রাজনৈতিক আদর্শের বিদায় হয়েছে। ফলে সমাজতন্ত্র, ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি আদর্শের অনুসারী রাজনৈতিক নেতারাও বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ইত্যাদি বড় দলে যোগ দিয়েছেন। এ প্রক্রিয়া কয়েক দশক ধরে চলতে থাকায় দেশে বিত্তশালীদের প্রাধান্যে দ্বি-দলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শ, পেশা ও আঞ্চলিকতাবোধ সম্পন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনীতিতে তথা আইনসভায় বা সরকারে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ নিঃশেষ হয়ে গেছে। অথচ সরকারব্যবস্থায় মতাদর্শ, ধর্ম, বিত্ত, শ্রেণি ইত্যাদি নির্বিশেষে দেশের সব মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না হলে সমাজে তাদের প্রান্তিকীকরণ ঘটে। রাজনীতি বিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী, সমাজে শক্তিশালী কোনো গোষ্ঠীর রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিকীকরণ ঘটতে থাকলে তা পরিণামে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশ পায় অথবা রাজনীতিতে বিদেশি বা দেশি অপশক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বস্তুত দেশের রাজনীতিতে অতীতে একাধিকবার এরূপ গণঅভ্যুত্থান বা ষড়যন্ত্র সংঘটনের নজির রয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের রাজনৈতিক সংকটকে এড়াতে হলে সরকারব্যবস্থা ও নির্বাচন পদ্ধতি উভয়েরই সংস্কার করা প্রয়োজন। নিচে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ প্রতিনিধি নির্বাচনের পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।


১. রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি : বর্তমানে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু থাকলেও এদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রীর পদটি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারপ্রধানের মতো কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। সেজন্য প্রত্যক্ষ গণভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান চালু করা প্রয়োজন। তবে এ নির্বাচনব্যবস্থাও গতানুগতিক পদ্ধতির বদলে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আদলে দুই ধাপবিশিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যেখানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থিতার কিছু শর্ত থাকবে। এ শর্ত হলো-যেসব রাজনৈতিক দলের এককভাবে বা একাধিক দলের সম্মিলিতভাবে জাতীয় নির্বাচনে ২০ শতাংশ ভোটপ্রাপ্তির পূর্ব ইতিহাস রয়েছে, কেবল সেসব রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। তবে কোনো প্রার্থী এককভাবে যদি ৩০ শতাংশ ভোট না পান, তাহলে এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোটপ্রাপ্ত প্রথম দু’জন প্রার্থীর প্রার্থিতায় দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ থাকবে। এ দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে যে প্রার্থী সর্বাধিক ভোট পাবেন, তিনি রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত হবেন।


২. সংসদীয় প্রতিনিধি নির্বাচন পদ্ধতি : বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিত্তশালী নিয়ন্ত্রিত দ্বি-দলীয় সংসদীয় ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এক নির্বাচনি অঞ্চল, এক প্রতিনিধি নির্বাচন পদ্ধতি (প্রথম পদ্ধতি) এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন পদ্ধতি (দ্বিতীয় পদ্ধতি)-এই দ্বিবিধ নির্বাচন পদ্ধতির সমন্বয়ে মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতির প্রচলন করা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে জাপানে এ মিশ্র পদ্ধতির সংসদ নির্বাচন চালুর ফলে সব মতাদর্শের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। প্রস্তাবিত এ মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতির প্রথম ও দ্বিতীয় পদ্ধতিতে যথাক্রমে ৩০০ জন করে মোট ৬০০ জন সংসদ প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ থাকবে। প্রথম ধরনের নির্বাচন পদ্ধতিতে মূলত একটি নির্বাচনি অঞ্চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা দলনিরপেক্ষ প্রার্থীদের মধ্যে প্রত্যক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ থাকবে, যেখানে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী নির্দিষ্ট নির্বাচনি অঞ্চল থেকে সংসদের প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হবেন। প্রথম ধরনের নির্বাচন পদ্ধতি মূলত বিদ্যমান নির্বাচন পদ্ধতিরই অনুকরণবিশেষ, তবে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন প্রবর্তন করা হলে তা গতানুগতিক নির্বাচন পদ্ধতিকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ধরনের নির্বাচন পদ্ধতিতে প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগেই প্রার্থীদের অনুক্রমিক তালিকা প্রকাশ করবে এবং নির্বাচন শেষে ৩০০টি নির্বাচনি অঞ্চলে মোট প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুসারে অনুক্রমিক তালিকা থেকে সংসদে প্রতিনিধি প্রেরণের সুযোগ পাবে। এ মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতিতে বড় ও প্রান্তিক উভয় ধরনের রাজনৈতিক দলেরই সংসদে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা অনুসারে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।


প্রথমত, মিশ্র পদ্ধতিতে বিগত কয়েকটি (২০০১ ও ২০০৮) নির্বাচনে ভোটের হিস্যা অনুসারে বড় রাজনৈতিক দলের আসন প্রাপ্যতার হিসাব দেওয়া হলো। আমরা লক্ষ করেছি, ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (৪০.১৩ শতাংশ ভোট, ৬২টি আসন) ও বিএনপি (৪০.৯৭ শতাংশ ভোট, ১৯৩টি আসন) প্রায় সমান হারে ভোট পেলেও বিদ্যমান পদ্ধতির কারণে প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুযায়ী দল দুটির আনুপাতিক হারে আসনপ্রাপ্তি ঘটেনি। কিন্তু মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জাতীয় সংসদে আসনসংখ্যা দাঁড়াত যথাক্রমে সর্বমোট ১৮২ ও ২১৬। অন্যদিকে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের (৪৮.৪০ শতাংশ ভোট, ২৩০ আসন) তুলনায় বিএনপি (৩২.৫০ শতাংশ ভোট, ৩০ আসন) উল্লেখযোগ্য হারে ভোট লাভ করেও খুব অল্পসংখ্যক আসন (৩০) লাভ করেছিল। কিন্তু মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আসনসংখ্যা দাঁড়াত যথাক্রমে সর্বমোট ২৩০+১৪৫=৩৭৫ এবং ৩০+৯৭=১২৭। কাজেই দেখা যাচ্ছে, প্রস্তাবিত মিশ্র পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর যৌক্তিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, মিশ্র পদ্ধতিতে বিগত কয়েকটি (১৯৭৩ ও ১৯৯১) নির্বাচনে ভোটের হিস্যা অনুসারে কয়েকটি প্রান্তিক রাজনৈতিক দলের আসন প্রাপ্যতার হিসাব দেওয়া হলো। আমরা লক্ষ করেছি, ১৯৭৩ সালে প্রচলিত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন উল্লেখযোগ্য দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-মোজাফফর (৮.৩২ শতাংশ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (৬.৫২ শতাংশ), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ভাসানী (৫.৩২ শতাংশ) দেশব্যাপী যথেষ্টসংখ্যক ভোট লাভ করে। কিন্তু একমাত্র জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল একটি আসন ছাড়া আর কোনো দল কোনো আসন লাভ করেনি। অথচ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন পদ্ধতি (দ্বিতীয় পদ্ধতি) চালু থাকলে প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে আসনপ্রাপ্য ছিল যথাক্রমে ২৫টি, ২০টি ও ১৬টি। অনুরূপভাবে, ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জাকের পার্টি (১.২২ শতাংশ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-রব (০.৭৯ শতাংশ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-ইনু (০.৫০ শতাংশ), বাংলাদেশ জনতা দল (০.৩৫ শতাংশ) ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ অব বাংলাদেশ (০.৩২ শতাংশ) উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভোট পেয়েও সংসদ নির্বাচনে একটি আসনও লাভ করেনি। অথচ প্রস্তাবিত আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে হিস্যা অনুসারে এ দলগুলো সংসদে যথাক্রমে ৭টি, ৩টি, ১টি, ১টি ও ১টি আসন লাভ করত। এ পরিসংখ্যান থেকে লক্ষণীয়, কোনো রাজনৈতিক দল প্রথম পদ্ধতিতে দেশের কোনো একটি সংসদীয় আসনে জয়লাভ না করেও মিশ্র পদ্ধতিতে সংসদে প্রতিনিধি প্রেরণের সুযোগ পাবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও