পরিস্থিতি বুঝে বাজেট দেওয়াই ভালো

সমকাল হাসান মামুন প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৪, ১২:২৮

ছোট আকারের বাজেট এবার দেওয়া হবে– এটা আগে থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল। প্রতিশ্রুত ঋণের কিস্তি ছাড়বিষয়ক কার্যক্রমে আইএমএফ প্রতিনিধি দল ঢাকায় এলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। আর্থিক খাতের বড় কয়েকটি সিদ্ধান্ত দ্রুত নিয়েছে সরকার, তাদের পরামর্শে। এসব সিদ্ধান্তের প্রভাবে এরই মধ্যে ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ও ঋণের সুদের হার বেড়ে গেছে। অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগছে না। সামনের দিনগুলোয় তা আরও স্পষ্ট হবে। এরই মধ্যে বাজেট গ্রহণের ঘটনাও ঘটে যাবে। তাতে শেষতক পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, আগে থেকে বলা সহজ নয়। এ অবস্থায় অনুমাননির্ভর আলোচনা চলবে।


আমরা অনেক দিন ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে আছি। চলতি অর্থবছরে মাঝে এর লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছিল। শেষতক এটা আরও অনেক ওপরে থেকে যাবে। এ অবস্থায় আসছে বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা যে সাড়ে ৬ শতাংশে রাখার কথা শোনা যাচ্ছে, সেটাও মনে হয় শুষ্ক আশাবাদ। আইএমএফসহ উন্নয়ন সহযোগী প্রায় সবাই বলছে, মূল্যস্ফীতি দ্রুত কমানো যাবে না। এক অর্থবছরে খুব সচেষ্ট হলেও এর সামান্যই হয়তো অর্জন করা যাবে। সুদের হার ও ডলারের দাম বাড়তে থাকার সময় ব্যবসার ব্যয় বাড়লে এর প্রভাব মূল্যস্ফীতির ওপর পড়বেই। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করা গেলেও তাতে কেবল মূল্যস্ফীতি কমবে না। অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনায় যেসব সংকট রয়ে গেছে, সেগুলোও দ্রুত দূর করার সুযোগ নেই। তারপরও আসছে বাজেটে জনস্বার্থে কিছু ইতিবাচক কর প্রস্তাব গ্রহণের খবর রয়েছে। এর সীমিত সুফল পাওয়ার ব্যাপারে আমরা হয়তো আশাবাদী হতে পারি।


এ নিবন্ধ লেখার দিনই ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তার পানির দাম ১০ শতাংশ বাড়াচ্ছে বলে খবর রয়েছে। এটা কার্যকর হবে নতুন অর্থবছর থেকেই। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা আছে অবশ্য। তবে এটা আচমকা কিছু নয়। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সব ধরনের সেবার দামই সরকার বাড়াচ্ছে, ভর্তুকি কমিয়ে আনার প্রক্রিয়ায়। ডিজেলসহ জ্বালানির দামও মাসে মাসে সমন্বয় করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধির প্রবণতাই লক্ষণীয়। বাজেটে এমন কিছু করা তো সম্ভব নয়, যাতে এ প্রক্রিয়ার প্রভাব খুব সীমিত হয়ে আসে। সাধারণ মানুষ অবশ্য চেষ্টা করবে বিদ্যুৎসহ কম সরকারি সেবা ব্যবহার করে জীবন পরিচালনা করতে। এর প্রভাব শিল্প-বাণিজ্যেও পড়বে। এরই মধ্যে শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হওয়ার খবর মিলেছে আমদানি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ায়। এতে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে ডলার সংকট। এটা কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে, সেটা এখন আর কারও অজানা নয়। এর মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম আর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে না পারাও বড় সমস্যা সৃষ্টি করেছে। তাতে বিনিয়োগ আর কর্মসংস্থান গেছে কমে। বিলাসী পণ্যের আমদানি বন্ধ হলেও তাতে কর্মসংস্থান কমে। এ অবস্থায় বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর কী দিকনির্দেশনা থাকবে, কে জানে!


চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি বিনিয়োগ তথা এডিপি বাস্তবায়নের যে খবর মিলছে, তাতে দেখা গেল এর অর্ধেকের বেশি অর্থই অব্যবহৃত। গত ক’বছর ধরেই এডিপি বাস্তবায়নের এ অবস্থা কেন, তার কোনো সদুত্তর নেই। এখন শেষ দুই মাসে তড়িঘড়ি ব্যয়ের নামে কষ্টার্জিত টাকা-পয়সা অপচয়ের কোনো মানে নেই। এ অবস্থায় নতুন অর্থবছরে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ রেখে যে এডিপি গ্রহণের খবর রয়েছে, সেটা সুখবর বটে। বাজেট আসলে ছোট হচ্ছে এ জায়গাটায়। রাজস্ব বাজেট কিন্তু ঠিকই বাড়ছে। বাজেট প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকা হতে যাচ্ছে তো এমনি এমনি নয়। এতে জড়িত রয়েছে প্রশাসন তথা সরকার পরিচালনার ব্যয়। এটা কোনোমতেই কমছে না; বরং অব্যাহতভাবে বাড়ছে। সরকারের ঘোষিত নীতির বাইরে গিয়েও যে এ খাতে ব্যয় হয়ে থাকে, তার অতি সাম্প্রতিক প্রমাণ হলো ডিসি ও ইউএনওদের জন্য ২৬১টি এসইউভি জিপ কেনার প্রক্রিয়া। ক্রমে জটিল হতে থাকা রিজার্ভ সংকটের মধ্যেও এসব গাড়ি বা যন্ত্রাংশ আমদানির চিন্তা যারা করতে পারে, তাদের অগ্রাধিকার বিবেচনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এরই মধ্যে আবার মিলল বাংলাদেশ বিমানের জন্য নতুন এয়ারক্রাফট কেনার সম্ভাবনার খবর। অথচ আমরা ক্যাপাসিটি অনেক বাড়িয়েও যথেষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি না। গ্যাস জোগাতে পারছি না সার কারখানায়। এপিআই শিল্প পার্ক চালু করতে পারছি না গ্যাসের অভাবে। অন্যান্য শিল্পের ক্যাপাসিটিও অব্যবহৃত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও