এক পা যখন বিদেশে রাখতেই হবে
দেশকে আমরা কতটা ভালোবাসি, তা নিয়ে ২০ বছর বয়সের এক তরুণের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল। তিনি বাংলাদেশকে ভালোবাসেন; কারণ এটা তাঁর জন্মভূমি এবং মা-বাবা এখানেই বসবাস করেন। তবে তিনি এ দেশে ভবিষ্যৎ গড়তে তেমন আগ্রহী নন। কারণ, তাঁর কাছে দেশ একটি ভৌগোলিক সত্তা এবং রাষ্ট্র সেই ভূগোলের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ‘সার্ভিস প্রোভাইডার’ বা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। অনেক রাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের অনেক বেশি দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিচ্ছে, এই তরুণ তেমন দেশে তাঁর ঠিকানা করে নিতে চান।
দেশ নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা শুনেছি-পড়েছি। তবে এই তরুণের কথা অন্য রকম চিন্তার খোরাক জোগায়। কথাটা ফেলে দেওয়ার মতো নয়। শুনে রাগ করার মতোও নয়। তাই তো! এখানে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের কতটা সেবা দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করছে বা করতে পারছে– সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবলে অনেক কথা বলার আছে, যা রাষ্ট্র পরিচালকরা শুনতে না-ও চাইতে পারেন।
এক সময় আমরা ভাবতাম, ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা ছেলেমেয়েরাই বিদেশে আস্তানা গাড়তে চায়। আমরা কি সঠিক ভাবতাম? এ বিষয়ে কি আমাদের কাছে কোনো সমীক্ষা আছে? আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরো অনেক বিষয়ে সমীক্ষা করে। সেদিন দেখলাম ইংরেজি ভাষা নিয়েও করেছে। কত ভাগ মানুষ বিদেশে চলে যেতে চায়, তা নিয়ে সমীক্ষা চালালে বোধহয় ভিন্ন আত্মজ্ঞান তৈরি হতো। কারণগুলো বুঝতে পারলে রাষ্ট্র পরিচালকরা অন্যভাবে পরিকল্পনা সাজাতে পারতেন।
আসলে ঠিক কতজন মানুষ বিদেশে চলে যেতে চায়? আমার ধারণা, জরিপ চালালে সংখ্যাটি বেশ বড় হবে। দেশের নাগরিক সমাজকে বাদ দিয়ে সাধারণ মানুষদের যদি বলা হয়, ‘আমাদের সঙ্গে অনেক দেশের কূটনৈতিক সমঝোতা হয়ে গেছে এবং ওরা আমাদের দেশের কাজ জানা মানুষদের স্থায়ী অভিবাসন দেবে’– তাহলে কী হবে?