বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতি: বৃহত্তর পরিকল্পনার কোনো অংশ কি
খবরে দেখলাম যে, বান্দরবানের দুটো উপজেলা রুমা ও থানচিতে ১৭ ঘণ্টার মধ্যে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা করেছে অস্ত্রধারীরা। সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় হামলা করে তারা সাড়ে ১৭ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। ব্যাংকের একজন শাখা ব্যবস্থাপককে জিম্মি করে নেওয়া হয়েছে এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫টি গুলি লুট করা হয়েছে।
এ মতামতটি লেখা পর্যন্ত যদিও পূর্ণ সংবাদ পাওয়া যায়নি, তবু আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যে, এগুলো পূর্বপরিকল্পিত সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী আক্রমণ। এর মধ্যেই প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে যে, নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা এই আক্রমণের সঙ্গে জড়িত।
কেএনএফ পাহাড়ি অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত নতুন সশস্ত্র সংগঠন। তারা ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে তৎপরতা শুরু করে। পাহাড়ে তাদের আস্তানায় সমতলের নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতিপূর্বে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।
এ ঘটনা থেকে কতগুলো বিষয় উঠে আসে, যেগুলো সম্পর্কে শুধু সতর্ক হওয়া নয়, সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনারও প্রয়োজন আছে। প্রথমত, এ ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, পাহাড়ি এলাকায় আবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং সেখানকার সশস্ত্র সংগঠনগুলো আবার নিজেদের সংগঠিত করছে। জানা প্রয়োজন, কেএনএফ আসলে কারা, কী তাদের লক্ষ্য, কী তারা হাসিল করতে চায়।
দ্বিতীয়ত, এটাও মনে রাখা দরকার যে, সেই এলাকায় সমতলের একটি নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়াও তৎপর। এদের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য এবং তৎপরতা সম্পর্কেও আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
তৃতীয়ত, ঘটনাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে কেএনএফ ও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার মধ্যে একটি সম্পর্ক আছে। সেই সম্পর্কটা কী? এমনও হতে পারে যে, তাদের মধ্যে একটি আঁতাত আছে এবং এ জাতীয় একটি আঁতাতের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির ক্ষতি করা এবং সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কোনো তৎপরতা চালানো।
- ট্যাগ:
- মতামত
- হামলা
- ব্যাংক ডাকাতি
- সশস্ত্র সংগঠন