বঙ্গবন্ধুর অনশন ও বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন

www.ajkerpatrika.com ড. এম আবদুল আলীম প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৮

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা আন্দোলনে পরোক্ষ অবদান রাখেন। যদিও বায়ান্নতে তাঁর ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা নিয়ে বদরুদ্দীন উমরসহ অনেকেই ধূম্রজাল সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থ প্রকাশসহ ভাষা আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও দলিলপত্র পর্যালোচনা করলে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়।


বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময়, অর্থাৎ ১৯৫১ সালের ৩০ আগস্ট থেকে ১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, ছাত্রনেতা, চিকিৎসক, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এবং আত্মীয়স্বজন। ১৯৫১ সালের ১৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আনোয়ারা খাতুন এমএনএ, খয়রাত হোসেন এমএনএ, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আহমদ হোসাইনসহ প্রায় ৩০ জন মেডিকেল ছাত্র। ১৯৫১ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খালেক নেওয়াজ খান। তিনি সকাল সোয়া ৯টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত কথা বলেন। ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সহসভাপতি আতাউর রহমান খান, আজিজ আহমদ, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অলি আহাদ, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল হক চৌধুরী, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাজী গোলাম মাহবুব প্রমুখ। এসব তথ্য জানা যায়, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন থেকে।


বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ব্যক্তিগত খোঁজখবর নেওয়া ছাড়াও রাজনৈতিক নির্দেশনা গ্রহণের জন্য রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতারা তাঁর সঙ্গে বারবার কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। এদিকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন তখন চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন পল্টন ময়দানের জনসভায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিবাদে ছাত্ররা রাজপথে নেমে আসেন এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে একত্র হয়ে আন্দোলনের করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় গঠন করা হয় ৪০ সদস্যের ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। এর আহ্বায়ক হন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাজী গোলাম মাহবুব। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন এবং আন্দোলন পরিচালনার জন্য নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রনেতাদের বারবার নির্দেশনা দেন। কারাগারের রোজনামচায় তিনি লিখেছেন: ‘জানুয়ারি মাসে আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।...আমি তখন বন্দি অবস্থায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাত্রের অন্ধকারে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের সহায়তায় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদের দিন স্থির করা হয়। আমি ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করব মুক্তির জন্য। কাজী গোলাম মাহবুব, অলি আহাদ, মোল্লা জালালউদ্দিন, মোহাম্মদ তোয়াহা, নাইমউদ্দিন, খালেক নেওয়াজ, আজিজ আহমদ, আবদুল ওয়াদুদ ও আরও অনেকে গোপনে গভীর রাতে আমার সঙ্গে দেখা করত।’ ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে’র সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী ধর্মঘট পালন ছাড়াও একটি প্রস্তাবে নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবি জানানো হয়। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও