নিজের স্বার্থের জন্য দেশের ক্ষতি করো না
রহমতপুর নেমেই যেতে হবে কালিকাপুর গ্রামে। মুঠোফোনে এমনটাই জানিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিমুল ইসলাম। রহমতপুর মোড় থেকেই একটি অটোরিকশায় সে পথেই এগোই। ক্রমেই চারপাশের পরিবেশ বদলে যেতে থাকে। প্রকৃতির আলিঙ্গনে আমরাও এগোতে থাকি।
সকাল তখন ১১টা। ময়মনসিংহ শহরের অদূরে পাখিডাকা এমন নিরিবিলি গ্রাম পাবো চিন্তাতেই আসেনি। অটোরিকশাটি নামিয়ে দেয় কালিকাপুর মদিনাতুল উলুম বেগ মাদ্রাসার সামনে। মাদ্রাসাটি বেশ পুরনো, আলিমুল ইসলামের পূর্বপুরুষদের হাত ধরেই তৈরি হয়েছিল।
মাদ্রাসার সামনের রাস্তায় অপেক্ষায় থাকি। খানিক পরেই ডানপাশের দেয়াল ঘেষা পথে এগিয়ে আসে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিমুল ইসলাম। বয়স আশির মতো। কিন্তু এখনো বেশ সুঠামদেহী। পায়ে কোনো স্যান্ডেল নেই। গ্রামের ঘাসবিছানো মেঠো পথে হয়তো সেটার প্রয়োজনও পড়েনি। তার সঙ্গেই এগোই।
গ্রামটির ভেতর ছোট ছোট বাড়ির পাশে পুকুর। পুকুর পাড়ের চারপাশে নাম না জানা বড় বড় গাছ। মাঝেমধ্যেই উড়ে এসে পুকুরের জলে ডুব দিচ্ছে দু-একটা পানকৌড়ি। উড়ে যাওয়ার সময় তাদের ঠোঁটে ছটফট করছে ছোট্ট কয়েকটা মাছ। এসব দৃশ্যেই বিমোহিত হই।
গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই গরু আর ছাগল রয়েছে। আলিমুলের বাড়িতে রয়েছে ভেড়াও। বড় বড় গাছে ঘেরা তার বাড়িটি। উঠানে খেলা করছে শিশুরা। এমনই এক চমৎকার গ্রামে বসবাস করছেন বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক আলিমুল ইসলাম। তার মুখে যুদ্ধদিনের নানা ঘটনার কথা জানব বলেই ছুটে গিয়েছিলাম কয়েকদিন আগে।
ইস্কান্দার আলী মাস্টার ও নজিরননেছার চতুর্থ সন্তান আলিমুল। বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে। লেখাপড়ায় হাতেখড়ি কালিকাপুর প্রাইমারি স্কুলে। পঞ্চম শ্রেণি পাসের পর ভর্তি হন খাঘডহর হাই স্কুলে।
আলিমুল তখন ক্লাস এইটে পড়েন। একদিন লোকমুখে জানতে পারেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে লোক নেওয়ার খবরটি। রিক্রুটিং চলছিল ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বীর মুক্তিযোদ্ধা
- খেতাবপ্রাপ্ত