আশাহীন ও ভবিষ্যৎহীন হতে চাই না

সমকাল সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:১০

গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিমতে নতুন বছর শুরু হলো। নানা প্রত্যাশা আর স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষা প্রতি নতুন বছরের আগমনে আমরা করে থাকি। এবারের নতুন বছরেও আমরা তেমন প্রত্যাশা করছি বৈকি। তবে দেশের সার্বিক অবস্থা আমাদের শঙ্কিত করে তুলেছে। বিদায়ী বছরের প্রায় পুরোটা কেটেছে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান পদ্ধতি নিয়ে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৃষ্ট মতবিরোধে। শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এই সপ্তাহের শেষে। প্রধান বিরোধী দল ও তাদের জোটসঙ্গীরা নির্বাচনটি বর্জন করে নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। নির্বাচনের পরও রাজনৈতিক অস্থিরতা কেটে যাবে– এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। 


আসন্ন সাধারণ নির্বাচন কোন উপায়ে সম্পন্ন হবে, তার পূর্বাভাস স্পষ্ট। সরকার যাদেরকে চাইবে তারাই নির্বাচিত হতে পারবে। ভোটযুদ্ধ পাতানো যুদ্ধে পরিণত যে হচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। প্রকৃত রাজনীতিকদের বিপরীতে সাবেক আমলা, ব্যবসায়ী, ক্রিকেট খেলোয়াড়, অভিনেতা, অভিনেত্রী, গায়িকাদের মনোনয়নের হিড়িক প্রমাণ করছে– এই নির্বাচন কতটা অন্তঃসারশূন্য। এমনকি বিরোধী দল হিসেবে কোন দল সংসদে বিরোধী আসনে বসবে, সেটাও সরকার নির্ধারিত করে দিচ্ছে। সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি একই দলের স্বতন্ত্র এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের উৎসাহিত করে নির্বাচনী মাঠে নামানো হয়েছে, নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রমাণে। ফলে যে-ই জয়ী হোক, সরকারি দলের প্রার্থীই জিতবে। 


প্রশ্নটা কেবল নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও নয়। আমরা দেখি, প্রতি পাঁচ বছরান্তে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পর্যায়ক্রমে একবার এই দল, আরেকবার ওই দল ক্ষমতায় বসছে। কিন্তু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। দুই প্রধান দল যে একে অপরের বিকল্প নয়– এই সত্যটি বারবার প্রমাণিত। প্রকৃত বিকল্পের অভাবে জনগণ এই দুই দলের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। বাংলাদেশে এ যাবৎকালের একটি নির্বাচনও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। বোঝা যাচ্ছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় জনগণের মুক্তি অসম্ভব। এ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ছাড়া জনগণের ভাগ্য বদল হবে না। বিদ্যমান জনবিরোধী রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে প্রধান দুই দলের মধ্যে ন্যূনতম বিরোধ নেই; নেই মতপার্থক্য, বরং উভয়েই ব্যবস্থাটিকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে একমত। এই পুরোনো রাজনৈতিক চিত্র নিয়ে আমরা নতুন বছরে প্রবেশ করতে যাচ্ছি।


যেমনই হোক, রাজনৈতিক অবস্থার প্রভাব আর্থসামাজিক ক্ষেত্রেও পড়তে বাধ্য। আর তাই রাজনীতির মতো অন্যান্য ক্ষেত্রেও, বলতে গেলে সমাজের সর্বত্র চলছে হীন প্রতিযোগিতা। কে কাকে ডিঙিয়ে এগিয়ে যাবে; কাকে ধাক্কা দিলে নিজের অর্জন নিশ্চিত হবে, সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধান ঘটনা। ব্যক্তির উন্নতির এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সমষ্টি ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই সর্বাগ্রে প্রয়োজন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, যা নির্বাচনের মাধ্যমে আসবে না; আসবে সমাজের বৈপ্লবিক রূপান্তরের পথে। আমরা এমন ব্যবস্থা চাই, যা মানুষকে আশাহীন এবং ভবিষ্যৎহীন করবে না; সবার জন্য অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করবে। সে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ছাড়া আমাদের পরিত্রাণ নেই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও