বিআরটির মতো প্রকল্প দেশকে পিছিয়ে দেয়
আমি তাঁর এ মতের সঙ্গে সহমত জানিয়ে বলতে চাই, চলমান বিআরটি (বাস র্যাপিড ট্রানজিট) প্রকল্পটি আগামী ৫০ বছর ধরে গাজীপুরের জনগণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে।
আসলেই বিআরটি প্রকল্প ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত সম্ভাব্য একটি আট লেনের মহাসড়ককে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে, জাতি যার কুফল ভোগ করবে যুগের পর যুগ ধরে।
ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিমানবন্দর পর্যন্ত এয়ারপোর্ট রোডটি আট লেনের মহাসড়ক, কিন্তু এরপর বিআরটি প্রকল্পের জন্য এ সড়কের তিন থেকে চারটি লেনকে মহাসড়ক থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আবার মাঝেমধ্যে অনেকগুলো ফ্লাইওভারও নির্মাণ করা হয়েছে প্রকল্পের অধীন।
২০১২ সালে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হলেও চীনের কোম্পানিটি অর্থায়ন সংগ্রহ করে কাজ শুরু করতে পাঁচ বছর বিলম্ব করে ফেলায় প্রকৃতপক্ষে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে।
চার বছরে প্রকল্পটির নির্মাণ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও সাত বছরেও প্রকল্প শেষ করা যায়নি, ২০২৪ সালের শেষে কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে এখন।
ইতিমধ্যে প্রকল্পের ব্যয় কয়েক দফায় বাড়িয়ে চার গুণ করে ফেলা হয়েছে। এই সাত বছর ধরে বিমানবন্দর, উত্তরা, টঙ্গী ও গাজীপুরে যাতায়াতকারী জনগণকে কী পরিমাণ ভোগান্তি সইতে হয়েছে, তা অবর্ণনীয়।
এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের মাঝখানের সবচেয়ে বেশি ব্যবহারোপযোগী তিন–চারটি লেনকে বিআরটি প্রকল্পে ‘বিশেষ বাস’ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের জন্য নিষিদ্ধ এলাকায় পরিণত করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব বিশেষ বাসে কতজন মানুষ চলাচল করবে আর প্রকল্পের কারণে বাদ হয়ে যাওয়া তিন–চার লেনে এর কত গুণ মানুষ চলাচল করতে পারত! কার উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বিআরটি প্রকল্পটির ধারণা বেরিয়ে এসেছিল, জানি না; কিন্তু সরকারের খামখেয়ালিপনা যে কত ক্ষতিকর প্রকল্পে দেশের বিপুল সম্পদ অপচয়ের নজির সৃষ্টি করতে পারে, তার একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে প্রকল্পটি।