সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষার সম্ভাবনা কতটুকু

যুগান্তর প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৮

গত ১৭ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ভোটের মধ্য দিয়েই সরকার গঠন হবে। অস্ত্র হাতে না, রাতের অন্ধকারে না।’ তিনি আরও বলেছেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্যই এ নির্বাচন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে এ ধরনের প্রতিশ্রুতির কথা তিনি আগেও একাধিকবার বলেছেন। সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর এমন প্রতিশ্রুতির ওপর আস্থা রেখে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আশ্বস্তবোধ করছি। সরকারের পক্ষ থেকে ইদানীং বারবার বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু করতে চায়। এ প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছে। এর আগে কিন্তু সরকার কখনো এ প্রতিশ্রুতি দেয়নি। প্রথমবারের মতো সরকার এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আইনমন্ত্রী, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী-তারাও সরকার শব্দটা ব্যবহার করেছে। প্রধানমন্ত্রীও স্পষ্টভাবে কয়েকবার বলেছেন, সরকার আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। আমি বলব, আস্থা রাখতে চাই।’


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর ধরে একটানা দেশ শাসন করছে। এ সময়কালে অনুষ্ঠিত হয়েছে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এখন দেখা যাক এ দুটি সংসদ নির্বাচনে কী ঘটেছিল। সেনাসমর্থিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে আবার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্য দুর্বার আন্দোলন করেছিল, সেই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে ১৯৯৬ সালের মার্চে বিএনপি সরকার প্রবর্তিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে। জাতীয় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং সমমনা আটটি দল ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। এতে ওই নির্বাচন অনেকটা একদলীয় রূপ নেয়। এ নির্বাচনে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের ১৫৪টিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের গুটিকয়েক সহযোগী দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার ফলে দেশের মোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান মাত্র ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জন। অন্যরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। দেশে গণতন্ত্র পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে।


দশম সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় এবং এতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিফলন না ঘটায় দেশে-বিদেশে সমালোচিত হয়। গণতন্ত্রকামী বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এমনকি একতরফা দশম সংসদ নির্বাচনে একমাত্র সমর্থনকারী ভারতও দেশে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আরেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দ্রুত প্রস্তুতি নিতে শেখ হাসিনার সরকারকে পরামর্শ দেয়। প্রধানমন্ত্রী বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করে নির্বাচন-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও অন্যসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি তার সে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসেন। আওয়ামী লীগের অনাগ্রহের কারণে একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা ধূলিসাৎ হয়ে যায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও