ঢাকা-ইসলামাবাদে হাস-ব্লু দিল্লিতে বেখবর এরিক
নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় পিটার ডি হাসের মতো না হলেও ইসলামাবাদে ক’দিন ধরে কর্মব্যস্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড ব্লুম। পাকিস্তানে ব্লু নামে বেশ পরিচিত তিনি। তবে, গণমাধ্যমে সংক্ষেপে ব্লুম। তার দেখাদেখি পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের মধ্যেও পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে ব্যতিব্যস্ততায় বাড়বাড়ন্ত। বৈঠকসহ আতিথেয়তা নিচ্ছেন নেতাদের। দিচ্ছেনও। পাকিস্তানের পিএমএল-এনের শীর্ষ নেতা নওয়াজ শরীফের সঙ্গে লাহোরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড ব্লুর সাম্প্রতিক বৈঠক দেশটিতে বেশ আলোচিত। গণমাধ্যমের খবর হচ্ছে, আসন্ন নির্বাচনে নওয়াজের দলের প্রস্তুতি এবং দেশটির রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-পিএমএল-এন এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের আলোচনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের গুরুত্ব বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। নমুনা বা সিলসিলা বাংলাদেশের মতোই। যা হয়েছে ঢাকায় হাস ও বিভিন্ন দলের মধ্যে।
বাংলাদেশে হাস-পর্বে এখন একটি কমা বা সেমিকোলন চলছে। ফুলস্টপ নয়। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের ‘দিল্লি আছে আমরা আছি; আমেরিকার ভারতকে দরকার; তলে তলে পিটার হাসের মুরব্বিদের সঙ্গে আপস হয়ে গেছে’ এ বার্তার পর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা হয়েছে। আলোচনাটি দৃশ্যত এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অনুকূলে। নয়াদিল্লিতে দুদেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী টু প্লাস টু ডায়ালগের পর আলাদা ব্রিফিং করেন ভারতের বিদেশ সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ বিষয় অনুপস্থিত থাকলেও পরে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে নয়াদিল্লির বক্তব্যের জবাবে ওয়াশিংটন কী বলেছিল তার কিছুটা আভাস মিলছে যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্কট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের রিপোর্টে। ১৭ নভেম্বর প্রকাশিত ওই রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়। জানা যাচ্ছে, ডায়ালগে বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়। বৈঠকে আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা হয়। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ভারতও জানিয়েছে, তারা প্রগতির বাংলাদেশ চায়।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে রাজনৈতিক দলের বাইরেও সোচ্চার আছে বিশ্বের অনেক প্রভাশালী দেশ ও সংগঠন। বিশেষ করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কড়া নজরদারিতে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক তফসিল ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিকে এশিয়া সাব-কন্টিনেন্টে প্রভাবশালী ডোনাল্ড লু’র চিঠিও আরেক কূটনীতি। যার সঙ্গে পাকিস্তানের ইমরান খানের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিকে মেলানোর একটি চর্চা চলছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনে কলকাঠি নাড়ার ম্যাকানিজমে তিনি বেশ আলোচিত। সেখানে উদাহরণ হিসেবে আনা হয় ইমরান খানের পতনকে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ বা খানের সঙ্গে শেখকে মেলানোর বাস্তবতা নেই। এরপরও ইমরান খান নিজেই ডোনাল্ড লুর কারণেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে মন্তব্য করায় একটি তুলনা টানার চেষ্টা রয়েছে। কিছু জিজ্ঞাসাও ঘুরছে। একেবারেই শেষ পর্যায়ে কেন চিঠিটি দিলেন ডোনাল্ড লু? এ প্রশ্ন অগ্রাহ্য করা যায় না। চাইলে চিঠিটি কি মাসখানেক বা অন্তত ১৫ দিন আগেও দিতে পারতেন না? তা না করে কি সরকারকে বিকল্প চিন্তার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হলো না? নমুনাগতভাবে এতে পাকিস্তানের ছাপ।