যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে ভূতের আঁচড়

দেশ রূপান্তর নাজমুল আহসান প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:০১

‘মেরেছে কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দিব না’। এই বিখ্যাত বাক্যটির উদ্ধৃত হয়, শ্রীকৃষ্ণ ভক্ত শ্রী নিত্যানন্দ ও হরিদাস ঠাকুর নবদ্বীপের রাস্তায় নগরকীর্তনকালে যারা জগাই-মাধাই নামের দুই ভাইয়ের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। কলসির কানার আঘাতে শ্রী নিত্যানন্দের কপাল কেটে রক্ত ঝরে। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র রাগ না করে উল্টো তিনি মাধাইকে তৎক্ষণাৎ আলিঙ্গন করে বলেছেন, কলসির কানা মেরেছিস, তাই বলে কি তোকে প্রেমভক্তি দেব না? কী তাদের প্রেমভক্তি ও মানবিকতা!


পৃথিবীতের সেই প্রেম ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার দিন আর নেই। অনেক কিছুর মতোই শান্তি এখন কৌশলগত এবং গালভরা শব্দ ভূ-রাজনৈতিক চক্রে আবদ্ধ। দুর্ভাগ্য যে, আমরা এমন এক পৃথিবীতে বসবাস করছি যেখানে শান্তিকেও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে দেখতে হয়। এর উদ্দেশ্য একটাই, শান্তির সঙ্গে আপস করা যাবে, কিন্তু কৌশলগত গুরুত্ব ও প্রভাব বলায় ধরে রাখার সঙ্গে আপস করা যাবে না। শুনতে নির্মম হলেও, তার নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সংঘাতে। ভাবা যায়, বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো যুদ্ধ বিরতি চায় না? তারা চায়, হামাসের ধ্বংস ও ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে! মৃত্যু এখানে একটি সংখ্যা মাত্র। কী হামাস যোদ্ধা, কী বেসামরিক ব্যক্তি, কী নারী, কী শিশু কে রক্ষা পাচ্ছে? জাতিসংঘ মহাসচিব বলছেন ‘গাজা দ্রুত শিশুদের কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে’। সেটাই হয়তো ইসরায়েলের উদ্দেশ্য। কারণ ইসরায়েল জানে, ফিলিস্তিনিদের সবাই হয়তো এই মুহূর্তে সশস্ত্র সংগ্রামে নেই কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও দাসত্ব এদের সবার মধ্যে বিদ্রোহের যে বীজ বপন করে দিয়েছে তার বহির্প্রকাশ হতে কতক্ষণ। তাই হামাস যোদ্ধাদের বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার যুক্তি এখানে কতটুকু খাটে? বেলফোর প্রকল্পের বাস্তবায়নের শুরুর পর থেকেই ফিলিস্তিনিরা যে নরকে আছে তা নিয়ে বিতর্কের কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।


তবে পৃথিবী মধ্যযুগে নেই। একই সঙ্গে ঔপনিবেশিকতা জয়জয়কারও এখন অতীত। আধুনিক ইতিহাসে যুদ্ধের পাশাপাশি যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনও বেশ প্রবল। ছোট হলেও বিশ্বব্যাপী স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তিকামী মানুষের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় আব্রাহাম লিংকনের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন ডেমোক্র্যাট জর্জ বি. ম্যাকালাম। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জীবন ও সম্পদের ধ্বংস রোধে ব্রিটেন ও ইউরোপে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন দানা বাঁধে, যদিও অতটা জোরদার ছিল না। উল্টো ১৯১৭ ও ১৮তে আমেরিকায় দুটি আইন করা হয় যেখানে যুদ্ধবিরোধী অবস্থানের কারণে সংবাদপত্র বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিকে জেল-জরিমানার কথা বলা হয়েছে। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ত্রিশের দশকে ইউরোপে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে এবং যুদ্ধের সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থসংশ্লিষ্টার বিরুদ্ধে সচেতন মহল কথা বলতে শুরু করে। মূলত প্রবীণ অভিজ্ঞদের স্বার্থ সুরক্ষায় তুলনামূলক কম বয়সীদের যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও জীবন বিসর্জনের বিরুদ্ধে জনমত প্রবল হতে থাকে। ভুক্তভোগীদের যুদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার বিষয়টি একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়, কারণ অভিজাতরা যুদ্ধে বাধ্যতামূলক সামরিক অংশগ্রহণকে পাশ কাটাতে পারলে অপেক্ষাকৃত দরিদ্রদের পক্ষে তা সম্ভব ছিল না। এ সময় ইংল্যান্ডে ১৯৩৩ সালে অক্সফোর্ড ইউনিয়নও একটি প্রস্তাবনা পাস করে, যাতে উল্লেখ করা হয়, তারা কোনো অবস্থাতেই রাজা ও দেশের জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও