ফিলিস্তিন সংঘাতে ন্যারেটিভের ঐতিহ্য

বণিক বার্তা গাজা আহমেদ দীন রুমি প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭

সলোমন নরথাপের কথা জানে না এমন মানুষ বিরল। সংগীতের প্রতি দরদ ছিল প্রথম যৌবনে। চেয়েছিলেন পেশা হিসেবে বেছে নিতে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন ওয়াশিংটন ডিসি পর্যন্ত। কিন্তু ভাগ্য সায় দেয়নি। সেখানে তাকে অপহরণ করা হয়। তারপর বিক্রি করে দেয়া হয় নিউ অরলিন্সে নিয়ে। লুইজিয়ানার রেড রিভার অঞ্চলে টানা ১২ বছর দাসত্ব করে কাটিয়েছেন তিনি। বীভৎস সে দাসজীবনকে পরবর্তী সময়ে তুলে ধরেছেন ‘টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেভ’ স্মৃতিকথায়। ২০১৩ সালে স্মৃতিকথাকে সিনেমায় রূপ দেয়া হয়, যা জিতে নেয় অস্কার। অথচ ইতিহাসে সলোমন একা দাস না। কিংবা কেবল তার ওপরই নির্যাতন হয়েছে, এমনও না। ইউরোপে দাস ব্যবসা ছিল আয়ের অন্যতম উৎস। নির্যাতনও চলেছে অবর্ণনীয়। মৃত্যুবরণ কিংবা অঙ্গহানির ঘটনা ছিল স্বাভাবিক। তার পরও দাসপ্রথা নিয়ে আলোচনায় সলোমন ঠাঁই পান সবার আগে। কারণ সলোমন বলতে পেরেছেন, অন্যরা পারেনি। আর গল্প মানুষকে তাড়িত করে সৃষ্টির আদিকাল থেকেই। 


গল্প বলা ও শোনার সঙ্গে মানবজাতির সম্পর্ক মৌলিক। ঠিক একইভাবে মৌলিক গল্পের ন্যারেটিভ। নির্যাতিতের ন্যারেটিভ আর দাস ব্যবসায়ীদের ন্যারেটিভ এক নয়। হাজার বছর ধরে দাস ব্যবসায়ীদের ন্যারেটিভ আধিপত্য করেছে বলেই দাস ব্যবসা টিকে ছিল। উনিশ শতাব্দীতে সেটাকে ভাঙতেই কাজ করেছেন সলোমনরা। এভাবে প্রতিটি সম্প্রদায়, জাতি, রাষ্ট্র ও আদর্শের একটা নিজস্ব বয়ান থাকে, যা সংগঠিত অবস্থানের পক্ষে যুক্তি ও সম্মতি উৎপাদন করে। ফলে যেকোনো দুটি পক্ষ যখন সংঘাতে লিপ্ত হয়, তখন বাস্তবিকভাবেই তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করে ন্যারেটিভ। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাতে সে সত্য আরো বেশি করে হাজির। ইসরায়েলের জন্মের পর থেকেই দেশটির ঐতিহাসিকরা চলমান টানাপড়েনকে সামনে এনেছেন ডেভিড ও গোলিয়াথের সংঘাত হিসেবে। ডেভিড বাইবেলের নবী, যাকে ইসলামে দাউদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্যদিকে গোলিয়াথ ইসলামে চিহ্নিত জালুত নামে। নবী দাউদ গোলিয়াথকে বীরদর্পে পরাজিত করেন। ইসরায়েলের দাউদীয় অভিযাত্রায় ফিলিস্তিন যেন গোলিয়াথের বাধা হয়েই দাঁড়িয়েছে। অথচ ফিলিস্তিনিরা ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে বসবাস করে আসছে প্রাচীন কানানীয় সভ্যতার আমল থেকে। তাদের চোখে ইসরায়েল রাষ্ট্র কেবলই দখলদার শক্তি। তারা জবরদখলের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করেছে এবং করে যাচ্ছে। 


ন্যারেটিভের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পরিভাষা। ইসরায়েল কি অভিযান চালাচ্ছে নাকি দখলদারত্ব? গাজার মানুষ কি খুন হচ্ছে না মারা যাচ্ছে? এমন অনেক পরিভাষায় নির্ভর করে বয়ান। ফিলিস্তিন ১৯৪৮ সালের ঘটনাকে নাম দিয়েছে নাকবা বা বিপর্যয়। তাদের ঐতিহাসিক ও জাতীয় অস্তিত্বের জন্য বিপর্যয়ই বটে। কারণ তার পর থেকেই বাস্তুহারা হতে বাধ্য হয়েছে বহু ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে ইসরায়েলের সনাতন ঐতিহাসিকরা ১৯৪৮ সালকে স্বাধীনতার বছর বিবেচনা করে। মনে করে, দুই হাজার বছর ধরে বাস্তুহীন থাকার পর ঘরে ফেরার তারিখ। একত্র হওয়ার মৌসুম পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ইহুদিদের। আরবরা সে জন্মকে বাধা দিতে চেয়েছিল, কিন্তু সফল হয়নি। আর আরব শরণার্থীদের কেউ বের করে দিচ্ছে না। তারা নিজেদের ইচ্ছায় ফিলিস্তিন ত্যাগ করছে। এমনকি বার্নার্ড রাইখ তার ‘‌হিস্টোরিক্যাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্য আরব-ইসরায়েলি কনফ্লিক্ট’ বইতেও ১৯৪৮ সালের ঘটনাকে স্বাধীনতা বলেই উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ ফিলিস্তিনি চোখে যেটা বিপর্যয়, ইসরায়েলের চোখে তা প্রতিষ্ঠা। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও