পোশাকশ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে মালিক ও শ্রমিক—কোনো পক্ষ থেকেই বিচক্ষণ উদ্যোগ দেখতে না পাওয়াটা রীতিমতো হতাশাজনক। বরং দুই পক্ষ চরম অবস্থান নেওয়ায় একদিকে যেমন সহিংসতা থামছে না, অন্যদিকে একের পর এক কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সহিংসতায় এ পর্যন্ত দুজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এ ছাড়া যানবাহন, বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ পরিস্থিতি কারও জন্যই কাম্য ছিল না।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে সরকার নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর মজুরি বোর্ডের চতুর্থ বৈঠকে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব দেন। বিপরীতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকা মজুরি প্রস্তাব দেন। এর পরদিন গাজীপুরে প্রথম শ্রমিকেরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরে আশুলিয়া, সাভার, ঢাকার মিরপুরসহ কয়েকটি এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
শ্রমিক অসন্তোষ ও সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মালিকেরা চাইলে তাঁদের কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন। শিল্প পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাজীপুর, আশুলিয়া ও ঢাকার মিরপুর মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় শ কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি ও আন্দোলনের বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেন। বৈঠক শেষে তিনি জানান, মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মজুরি বোর্ডের পরবর্তী সভা হবে। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন। এ ছাড়া নিম্নতম মজুরি বোর্ড সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, মজুরির হার চূড়ান্ত হয়নি।