নিষেধাজ্ঞার ফেরে দেশ না সরকার?
দৈনিক ডজনখানেক করে এ বছর ডেঙ্গুতে হাজারের কাছাকাছি মৃত্যুর তেমন নিউজ ভ্যালু নেই। বৃষ্টির জলাবদ্ধতায় আটকে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ৪ জনের মৃত্যুও তেমন সংবাদ নয়। এ জন্য সিটি করপোরেশনও দায়ী নয়, জানিয়েছেন দুই ঢাকার এক মেয়র। যেখানে যে-যারা মরে তারাই দায়ী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হাতে বেদম পিটুনিতে মরণের কাছাকাছি পৌঁছা সাংবাদিকও দায়ী এ মার খাওয়ার জন্য। তিনি যান কেন ছাত্রলীগের সোনার টুকরাদের মারামারির খবর সংগ্রহে? খেয়েদেয়ে আর কাজ নেই তার? নারী মন্ত্রীর নদী খেয়ে ফেলাও নিউজের মধ্যে পড়ে না। জানলে হয় তো এত অবাক-বিস্মিত হতেন না জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ কয়েক ধরিবাজ মিলে পল্টনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া তো খবরের মধ্যেই পড়ে না। আলুর কেজি ৫০ টাকাও খবর নয়। তাহলে খবর বা সংবাদ কোনটি? কোনটি নয়? খাস খবর শুধু মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা। এ খবরের একচেটিয়া রাজত্বে বাংলাদেশের বাদবাকি সব ঘটনা বেখবরের খেরোখাতায়। মূলধারার পত্রপত্রিকায় ব্যাকপেজ বা ইনার পেজে। টেলিভিশনে সেকেন্ড পার্টে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় তো কথাই নেই। ভিসানীতিতে কার কার নাম আছে এসবের স্বরচিত তালিকা ঘুরছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্র কখনোই তালিকা প্রকাশ বা প্রচার করে না। বড় জোর জি টু জি (সরকার থেকে সরকার) সারসংক্ষেপ পাঠায়। সেটাও টপ মোস্টে, শীর্ষ পর্যায়ে। সব মন্ত্রীর পক্ষেও জানা অসম্ভব। কিন্তু, মন্ত্রীরা সমানে যাচ্ছেতাই বলে চলছেন। এসব ভিসা রেস্ট্রিকশন-স্যাংশনে তারা কেয়ার করেন না। এ নিয়ে মনে ভয় নেই, মাথায় ব্যথা নেই। কত যে কথা। আবার ভিসানীতিতে বিরোধী দলই আক্রান্ত হবে বলে সুর আছে। আর বিরোধী দল মানে বিএনপি, জাতীয় পার্টি নয়। বিএনপি যে নির্বাচন বয়কট করেছে, এখন প্রতিহতের কথা বলছে। অতএব তারা নির্বাচনবিরোধী। যুক্তরাষ্ট্র তো নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধেই ভিসানীতি দেবে। কথার কী ফের! যুক্তির কী বাঙালিপনা!