রোহিঙ্গা ইস্যু ও সহানুভূতিশীল নেতৃত্ব
মানবাধিকারের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়সংকল্প, মিয়ানমারে নির্মম নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে ২০১৭ সালে। রোহিঙ্গা সংকটকে সমসাময়িক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুতর মানবিক বিপর্যয়গুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যার শুরু ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে। সেই সময় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংস দমনপীড়ন শুরু করে। নির্বিচারে হত্যা, যৌন সহিংসতা এবং ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির স্বীকার হয়ে প্রায় ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
সেই সময় বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য, দেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সাহসী এবং সহানুভূতিশীল সিদ্ধান্তটি নিছক একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না বরং তা ছিল ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং মানবিক নীতির প্রতি গভীর অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে তার সরকার শরণার্থীদের আশ্রয়, খাদ্য এবং চিকিৎসা সহায়তাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে আসছে গত ৬ বছর ধরে। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য একটি অস্থায়ী আবাসে পরিণত হয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এবং এর জনগণের সংহতি ও সহানুভূতির বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সিদ্ধান্তটি নেওয়া খুব সহজ ছিল না। তিনি জানতেন, বিপুল সংখ্যার উদ্বাস্তুর আগমন অভ্যন্তরীণ সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে এবং দেখা দিতে পারে, স্থানীয় অর্থনীতি এবং সামাজিক অবকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ। কিন্তু শেখ হাসিনা সব ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার মানসিকতা নিয়েই সেদিন এই নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যা আগামী দিনের ইতিহাসে তাকে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসাবে। তার প্রশাসন সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সক্রিয়ভাবে সহায়তা নিয়ে দুর্বল এই জনগোষ্ঠীকে রক্ষা ও সমর্থন করার জন্য কাজ করে চলেছে।