কাজী শাহেদ আহমেদ : সাহসী প্রকাশকের প্রস্থান
কাজী শাহেদ আহমেদ, বাংলাদেশের শিল্প, বাণিজ্য এবং গণমাধ্যমের এক সফল পুরুষ, পরিণত বয়সেই তিনি হয়েছেন প্রয়াত। কিছু মানুষের অভাব কখনো পূরণ হয় না, তাদের মৃত্যু এক ধরনের শূন্যতা তৈরি করে, তারা থেকে যান মানুষের অন্তরে, তাদের সৃষ্টিতে। কাজী শাহেদ আহমেদ সেই রকম একজন মানুষ।
আমার তাকে চেনা-জানার সুযোগ হয় ১৯৯১ সালে, ‘আজকের কাগজ’ এবং ‘সাপ্তাহিক খবরের কাগজ’ পত্রিকায় কাজ করার মধ্য দিয়ে। চাকরি দিয়েছিলেন সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান। কাজী শাহেদ সেই দুই পত্রিকার মালিক, সেই সুবাদেই মাঝে মাঝে তাকে অফিসে দেখতাম, সামান্য কথাবার্তা, কুশল বিনিময় এইটুকুই। কিন্তু কাজী শাহেদ আহমেদের ব্যক্তিত্বের মধ্যে এক ধরনের আকর্ষণ ছিল, তার কথা বলার ধরন, হাঁটার স্টাইল, পোশাক পরিচ্ছদ সেই বয়সেই আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় লাগতো।
আমার বয়স তখন নিতান্তই কম, ২১-২২ বছরের তরুণ আমি। মাঝে মধ্যে আমার মতো তরুণ এবং নবীন কর্মীদেরও ডেকে কথা বলতেন, কুশল জানতে চাইতেন, আমি অবাক হতাম। কারণ তিনি এসে সম্পাদক বা সিনিয়র দুই একজনের সাথে কথা বলেই চলে যেতে পারতেন, সেই জায়গায় আমার মতো একজন নবীন, যার কি না গণমাধ্যমে কোনো পায়ের চিহ্নও পড়েনি তখনো, তার সাথে যিনি নিজ থেকে কথা বলেন, তিনি নিশ্চয়ই আর দশ জন সাধারণ মালিকের মতো নন। শাহেদ ভাইয়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তখন থেকেই শুরু।
কাজী শাহেদ আহমেদ প্রকৌশলী এবং সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। আশির দশকে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ব্যবসা শুরু করেন, দশকের শেষ দিকে তিনি যুক্ত হন গণমাধ্যম প্রকাশনার সঙ্গে, প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক খবরের কাগজ, স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে যে দুই তিনটি পত্রিকা এরশাদ বিরোধী জোরালো অবস্থান নিয়েছিল তার মধ্যে খবরের কাগজ অন্যতম।
- ট্যাগ:
- মতামত
- সাংবাদিক
- সাংবাদিকতা