সরকারি-এমপিও বৈষম্য কেন
সম্প্রতি মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে টানা ২৩ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করেন মাধ্যমিকের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। এরই মধ্যে সরকারের আশ্বাসে তারা শিক্ষার্থীদের পড়ানোয় মনোনিবেশ করেছেন। তাদের মনে বিশ্বাস জন্মেছে, সরকার হয়তো নির্বাচনের আগে এই দাবির প্রতি নজর দেবে।
আমরা যে আন্দোলন দেখেছি, তা শুধু মাধ্যমিকের নয়। সামগ্রিকভাবে এ আন্দোলন হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে বৈঠকে জাতীয়করণের আশ্বাসে অনশন স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা। তারা চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিটের সাক্ষাৎ, যা হয়নি। আন্দোলন বা আলোচনা সফল কি ব্যর্থ, তা সময়ই বলে দেবে। কোনো দাবিই কিন্তু এক দিনে আদায় সম্ভব হয়নি।
এবারের আন্দোলনের সময় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের যেভাবে সমালোচনা করা হয়েছে, সেটা ঠিক নয়। বিশেষ করে এনটিআরসিএ কর্তৃক পরীক্ষা নেওয়ার পর থেকে শিক্ষক নিয়োগে মানের পরিবর্তন হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে, ভালোভাবে শুধু নিয়োগ পরীক্ষা নিলেই হবে না; ভালো শিক্ষার্থীরা যেন এ নিয়োগ পরীক্ষায় আগ্রহ দেখায়– সে ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রথম পছন্দ থাকে শহর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে। কারণ, শহরের প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা গ্রামের চেয়ে বেশি। তাই প্রতিনিয়ত শহর ও গ্রামীণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে তৈরি হচ্ছে ব্যাপক ফারাক।