২১ আগস্ট যখন রাজনৈতিক বিভক্তির উৎস
অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত—আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি। তবে বর্তমানে এই দুই দলই বিপরীত অবস্থান করছে। বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। তারা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে অনড়। আর আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী তাদের সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনড়।
সমঝোতার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে দুই পক্ষই। রাজনীতিকে এমন পয়েন্ট অব নো রিটার্নে নিয়ে যাওয়ার উৎস ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা হত্যা চেষ্টার পর থেকেই আসলে সমঝোতার সম্ভাবনা হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
বলছিলাম বাংলাদেশের রাজনীতির দ্বি-দলীয় ধারার কথা। আসলে এই দুই ধারা আওয়ামী লীগ-বিএনপি নয়, মূলত আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ বিরোধী শিবিরে বিভক্ত। স্বাধীনতার আগে আওয়ামী বিরোধী ধারার নেতৃত্বে ছিল মুসলিম লীগ। স্বাধীনতার পর এই ধারার নেতৃত্ব দেয় জাসদ। ১৯৭৫ সালের পর থেকে আওয়ামী বিরোধী ধারার নেতৃত্ব চলে আসে ব্যক্তি জিয়াউর রহমানের হাতে।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশে আওয়ামী বিরোধী ধারার মূল নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। এই ধারাটি এখন অনেকটাই কোণঠাসা, ক্ষীণ। রাজনীতির অপর বড় দুই দলের মধ্যে জামায়াত মিশে আছে বিএনপির সাথে, আর জাতীয় পার্টি মিশে গেছে আওয়ামী লীগের সাথে। মোটা দাগে, আওয়ামী লীগ উদার, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ, কিছুটা ভারতপন্থী। আর বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, সাম্প্রদায়িক শক্তির প্ল্যাটফর্ম এবং প্রবলভাবে পাকিস্তানপন্থী।