এই নির্বাচন কি মেনে নেওয়া যায়?
কেমন হলো ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন। এ উপনির্বাচনে কয়েকজন প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। তবে এদের মধ্যে দুজন মিডিয়ার আলোচনায় ছিল। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে দেশবাসী চিনত টিভি টকশোতে তার অংশগ্রহণের জন্য। পেশাগতভাবে তিনি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। যতদূর জানি তিনি ব্যবসায় বিষয় পড়ান। তার গুরুত্ব শাসক মহলে বৃদ্ধি পায় সুচিন্তা ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হওয়ার ফলে। সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রচেষ্টায়। মোহাম্মদ এ আরাফাত অনন্য গুণের অধিকারী।
এ অনন্য গুণটি হচ্ছে, যা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য বা যুক্তিসংগত নয়-এমন বিষয়গুলোকেই ভাষার মারপ্যাঁচে এবং গবেষণা পদ্ধতিকে কু-যুক্তিতে পরিণত করে দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান করতে পারা। মোহাম্মদ এ আরাফাত দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। অবশেষে তিনি তার নিষ্ঠার জন্য পুরস্কৃত হলেন ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা অর্জন করে।
অন্যদিকে হিরো আলমের আসল নাম আশরাফুল আলম সাঈদ। একটি সাধারণ ও নিম্নবিত্ত পরিবারে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। হিরো আলম তার নিজের যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় আসেন। তিনি একাধারে চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, গানের জগৎ ও মডেলিংয়ে কাজ করেছেন, বই লিখেছেন, ব্যবসা করেছেন, রাজনীতি ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজেও আত্মনিয়োগ করেছেন। হিরো আলম যতগুণে গুণান্বিত হন না কেন, আমাদের দেশের এলিট সমাজের কাছে তিনি হাস্য কৌতুকের বিষয় ছাড়া অন্য কিছু নয়। বাংলাদেশের সমাজ ততটা গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠেনি যাতে একজন নিম্নবর্গের মানুষ উচ্চবর্গের কাছে হেলাফেলার বিষয় হবে না। উচ্চবর্গের মন মানসিকতা হিরো আলমের পেছনে লেগেছে কায়াহীন মূর্তির মতো। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে বগুড়া ৬ (সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দুটি আসনেরই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। উপনির্বাচনে তিনি উভয় আসনে পরাজিত হলেও বগুড়া-৪ আসনের বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে ভোটের ব্যবধান ছিল ৮৩৪।